মা কামাখ্যার দর্শন হয় অসম্পূর্ণ, যদি গুয়াহাটির এই জায়গায় না যান…
TV9 Bangla
Credit - Pinterest
গুয়াহাটির কামাখ্যা মন্দিরের সঙ্গে বহু পৌরাণিক কাহিনি জড়িয়ে। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও এই মন্দিরে আজও বলি দেওয়া হয়। এই মন্দির তন্ত্র সাধনার অত্যন্ত প্রসিদ্ধ। অম্বুবাচীর সময় খুব ভিড় হয় এখানে।
মহাদেবের অপমান সহ্য করতে না পেরে প্রজাপতি দক্ষের যজ্ঞে নিজের প্রাণ আহুতি দিয়েছিলেন দেবী সতী। এরপর ক্রোধে মহাদেব প্রলয় নৃত্য শুরু করেন।
সে সময় ভগবান বিষ্ণু সুদর্শন চক্র দিয়ে দেবী সতীর দেহ ৫১ টুকরো করেছিলেন। যা পৃথিবীর নানা প্রান্তে পড়েছিল। এরপর সতীর শোকে বিহ্বল ছিলেন মহাদেব। এমন অবস্থায় একদিন কামদেব উমানন্দ দ্বীপে হাজির হন।
সেখানে ধ্যানমগ্ন মহাদেবের দিকে কাম-বাণ নিক্ষেপ করেন কামদেব। এরপর মুহূর্তের মধ্যে মহাদেবের দেহ আগুনের লেলিহান শিখার মতে জ্বলে ওঠে। ত্রিনয়ণ খুলে যায়। এবং সেই তেজে ভস্মীভূত হন কামদেব।
কামদেব ভস্মীভূত হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী রতী ও অন্যান্য দেবদেবীরা মহাদেবের কাছে কামদেবের প্রাণভিক্ষা করেন। কামদেবের স্ত্রী আকুতি শুনে মহাদেবের ক্রোধ শান্ত হয়। মহাদেব পুনরায় কামদেবের জীবন ফিরিয়ে দেন।
তবে কামদেবের সৌন্দর্য আগের মতো ছিল না। তখন কামদেব ও তাঁর স্ত্রী রতী মহাদেবের কাছে প্রার্থনা করেন। কামদেবের সৌন্দর্য ফেরানোর জন্য। মহাদেব তাঁদের প্রার্থনায় প্রসন্ন হন। প্রতিষ্ঠিত হয় কামাখ্যা মন্দির।
শক্তিপীঠ কামাখ্যায় দেবী সতীর যোনি পতিত হয়েছিল। মহাদেব কামদেব ও তাঁর স্ত্রীকে আদেশ দেন যে নীলাচল পর্বতের কাছে যেখানে সতীর যোনি পতিত হয়েছিল, সেখানে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
মহাদেব জানান, সেখানে দেবী পূজিত হবেন কামাখ্যা রূপে। এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করলে কামদেব হারিয়ে যাওয়া রূপ ফিরে পাবেন। মহাদেবের কথামতো শুরু হয় মন্দির তৈরির কাজ।
সেই মন্দির তৈরির দায়িত্ব গিয়ে বর্তায় স্বয়ম বিশ্বকর্মার উপর। তিনি এই মন্দিরের মূল কাঠামো গড়ে তোলেন। এভাবে কামদেব পুরনো সৌন্দর্য ফিরে পান। এরপর থেকে ওই জায়গার নাম হয়ে যায় কামরূপ কামাখ্যা।
যে স্থানে মহাদেব ধ্যানমগ্ন ছিলেন, সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয় উমানন্দ ভৈরবের মন্দির। বলা হয় কামাখ্যা মন্দির দর্শন করার পাশাপাশি উমানন্দ ভৈরব মন্দির দর্শন অবশ্যই উচিত।
বিঃ দ্রঃ - এই প্রতিবেদনে যে বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে, তা পৌরাণিক কাহিনি ও হিন্দুশাস্ত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য। এই বিষয়ে কোনও দায় নেই TV9 Bangla-র।