'করবা চৌথ' ব্রত চলছে গোটা ভারত জুড়ে। বলিউডের কল্যাণে এই ব্রতর মাহাত্ম্যখন ঘরে ঘরে প্রচারিত। উত্তর পশ্চিম ভারতের প্রায় সর্বত্র এই ব্রতের পালন করা হয়। আপনি কি জানেন, স্বামীর মঙ্গল কামনায়
একটা সময় মূলত সৈন্যদের স্ত্রী-এর মধ্যে প্রচলিত ছিল এই ব্রত। যুদ্ধক্ষেত্রে ডিউটিরত সৈন্যদের দীর্ঘায়ু কামনায় তাঁদের স্ত্রী দেবীপক্ষের পরের কৃষ্ণ চতুর্থী তিথিতে উপোস করে এই ব্রত পালন করতেন। ক্রমে এই ব্রত ছড়িয়ে পড়ে সমাজের অনান্য স্তরেও।
'করবা' শব্দের অর্থ কড়াই এবং 'চৌথ' মানে চতুর্থী তিথি। এই দুয়ে মিলে ব্রতের নামকরণ। এই দিন সধবারা নতুন কড়াই কেনেন। সেখানে নতুন কাপড়, কাচের চুড়ি এবং বাড়িতে তৈরি মুখরোচক খাবার ও মিষ্টি রাখেন। নিজেদ্রে মধ্যে সেই কড়াই আদানপ্রদানও করেন তাঁরা।
কৃষি কাজের সঙ্গেও জড়িয়ে আছে এই ব্রতের মাহাত্ম্য। এই সময়েই রবি শস্যের চাষ শুরু হয়। বপন করা হয় গমের দানা। যে বড় পাত্রে গমের দানা রাখা হয়, তাকেও 'করবা' বলা হয়।
'করবা চৌথ'-এর রীতি অনুসারে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত অবধি ব্রতীরা কোনও খাবার মুখে তোলেন না। জলপানও নিষিদ্ধ। সূর্যোদয়ের আগে বিবাহিতারা খাবার খেয়ে নেন। সাধারণত সেই খাবার তাঁকে বানিয়ে দেন তাঁর শাশুড়ি।
সন্ধেবেলা শুরু হয় আসল উৎসব। গয়না, নতুন পোশাকে, মেহেন্দি পরে সধবারা ব্রত পালন করেন। 'করবা চৌথ'-এর দিন সাধারণত লাল, হলুদ বা সোনালি রঙের পোশাক পরতে বলা হয়।
এরপর আকাশে চতুর্থীর চাঁদ দেখা দিলে সধবারা প্রথমে চালুনিতে একটি প্রদীপ রেখে, সেই চালুনির মধ্যে দিয়ে চাঁদ দেখেন। চন্দ্রদেবের কাছে স্বামীর মঙ্গল কামনা করেন স্ত্রী। সেই প্রদীপের আলোয় দেখতে হয় স্বামীর মুখ।
বরণডালা থেকে জলের পাত্র নিয়ে স্ত্রীকে খাইয়ে দেন স্বামী। সেই জল পান করেই উপোস ভাঙেন স্ত্রী। কথিত, করবা নামের মহিলা কুমিরের গ্রাস থেকে ব্রত করে নিজের স্বামীকে বাঁচিয়ে আনেন। সেই থেকেই যন দেবের আশির্বাদে তাঁর নামে এই ব্রতের শুরু হয়।