অনেকেই মনে করেন মদ যাঁরা খান, তাঁরা খুব একটা ভাল নন। যদিও মদ্যপানের সঙ্গে কিন্তু চরিত্রের কোনও সম্পর্ক নেই। অনেকে ভাবেন নিয়মিত মদ্যপান করলে কেবল লিভারের ক্ষতি হয়তো। বিষয়টা কিন্তু সত্যি নয়। বরং মদ খেলে চরিত্র ছাড়া আরও শরীরের নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ খারাপ হতে পারে। জানেন শরীরে কী কী প্রভাব পড়ে?
মদ খেলে লিভারের ক্ষতি হয় সেটা সকলে জানেন। লিভারে প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন হয়। যাকে হেপাটাইটিস বলা হয়। নিয়মিত অতিরিক্ত মদ খেলে লিভারের মধ্যে নডিউল মতো তৈরি হয়। যাকে বলা হয় সিরোসিস অফ লিভার। যার ফলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
কেবল লিভার নয়, মদ কিন্তু সরাসরি প্রভাব ফেলে আমাদের হৃদয়ের উপরেও। হৃৎপিন্ডের স্বাভাবিক যা সাইজ তার থেকে বড় হয়ে যায়। ফলে হার্টের স্বাভাবিক কাজ কর্ম ব্যহত হয়। নিজের কার্যক্ষমতা হারিয়ে হার্ট ফেলিওর হতে পারে। একে বলা হয় ডায়ালেটেড কার্ডিয়ো মায়াপ্যাথি।
মদের প্রভাব পড়ে আপনার অগ্নাশয় বা প্যানক্রিয়াসে। ক্ষতি করে অগ্নাশয়ের। অগ্নাশয়ে থাকা কিছু ইন অ্যাক্টিভ উৎসেচককে অ্যাক্টিভ করে দেয়। যা উলটে অগ্নাশয়ের ক্ষতি করে। যা প্যানক্রিয়াটাইটিসের মতো সাঙ্ঘাতিক রোগ হতে পারে।
মদের প্রভাব পড়ে আমাদের ব্রেনের উপরে। শুধু সাময়িক ভাবে নেশাগ্রস্থ হওয়া নয়, ক্ষতি হয় আরও অনেক। ওয়ারনিকেস এনকেফেলোপ্যাথির মতো ভয়ানক রোগের স্বীকার হতে পারেন আপনি। ফলে ধীরে ধীরে শরীরের ব্যালান্স নষ্ট হয়ে যায়। চোখ নাড়ানোর ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, দৃষ্টি স্থির হয়ে যায়।
মদের প্রভাবে শরীরে হরমোনের হেরফের ঘটে। ভারসাম্যকে নষ্ট করে দেয়। বিশেষ করে সেক্স হরমোনের উপর প্রভাব ফেলে। বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যা দেখা যায়। সেক্সুয়াল ড্রাইনেস তৈরি হতে পারে।
মদ শরীরে রক্ত তৈরির প্রক্রিয়াকে ব্যহত করে। ফলে রক্তের পরিমাণ কমে যেতে পারে। আবার লিভার সিরোসিস হলেও অনেকের রক্ত বমি হয়। তখন রক্তের ঘাটতি হতে পারে।
পাকস্থলির মধ্যে থাকা স্তরের ক্ষতি করে মদ। যা ভবিষ্যতে পেপটিক আলসারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মানব দেহের বিভিন্ন পেশীকেও ড্যামেজ করে মদ। অনেক সময়ে হাড়ের ক্ষয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, ফলে অস্টিওপোরেসিস হতে পারে।