আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে শেষ হয় দেবীপক্ষের। শুরু হয় কৃষ্ণপক্ষের। সেই কৃষ্ণপক্ষের চতুর্ত দিনে পালিত হয় 'করবা চৌথ'। মূলত উত্তর আর পশ্চিম ভারতে হিন্দুদের মধ্যে প্রচলিত এই ব্রত।
এই বছর 'করবা চৌথে'র ব্রত শুরু হয়েছে রবিবার সকাল ৬টা ৪৬ মিনিটে। থাকছে সোমবার ৪টে ১৬মিনিট অবধি। বিবাহিত মহিলারা স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনায়, সূর্যোদয় থেকে চন্দ্রোদয় অবধি উপোস করে ব্রত পালন করেন।
চাঁদ উঠলে চাঁদের আলোয় স্বামীর মুখ দেখে তাঁর হাতে জল খেয়েই উপোস ভাঙেন স্ত্রী। কিন্তু কেন পালন করা হয় এই ব্রত? কী তার পিছনের ইতিহাস, জানেন?
কথিত, করবা নামে এক পতিব্রতা নারী ছিলেন। তাঁর স্বামী একবার নদীতে গিয়ে কুমিরের কবলে পড়েন। কিন্তু পতিব্রতা করবা কুমিরের গ্রাস থেকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসেন স্বামীকে।
স্বামীকে বাঁচানোর পরে যমরাজের কাছে ওই কুমিরের মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করেন করবা। করবার ব্রতে সন্তুষ্ট হয়ে যমরাজ তাঁকে আশির্বাদ করে বলেন, 'যে নারীরা এই উপোস করবেন, তাঁদের স্বামীদের রক্ষা করবেন যমরাজ'। এই ব্রত প্রচার পাবে করবার নামে।
ব্রত ঘিরে রয়েছে অন্য কাহিনী। কথিত, রানি বীরবতী তাঁর স্বামীর মঙ্গল কামনায় ব্রত পালন করছিলেন। কিন্তু বীরবতির সাত দাদা উপোস করতে কষ্ট হচ্ছে ভেবে অশ্বত্থ গাছে আয়না রেখে দিয়েছিলেন।
আয়না দেখেই চাঁদ ভেবে ভুল করেছিলেন রানি বীরবতি। চাঁদ উঠে গিয়েছে ভেবে ব্রত ভাঙলে, স্বামীর মৃত্যুর খবর আসে। এরপর পুনরায় নিষ্ঠা ভরে 'করবা চৌথ' ব্রত করে স্বামীর প্রাণ ভিক্ষা করলে যমরাজ তাঁর প্রাণ ফিরিয়ে দেন।
'করবা' কথার অর্থ হল কড়াই। 'চৌথ' কথার অর্থ হল চতুর্থী তিথি। এই সময়ে মহিলারা নতুন কড়াই কেনেন। সেখানে নতুন কাপড়, কাচের চুড়ি, নানা ধরনের খাবার ও মিষ্টি রাখার প্রচলন রয়েছে।