ঐশ্বর্যের দেবী লক্ষ্মী। দেবী চঞ্চলা। কোনও কারণে তিনি রুষ্ট হলে সেই স্থান ত্যাগ করেন। তাঁর প্রস্থানের সঙ্গে সঙ্গে সুখ-সমৃদ্ধি, জৌলুস চলে যায়। বদলে সেই জায়গায় বাড়িতে প্রবেশ করেন অলক্ষ্মী।
অলক্ষ্মী বাড়িতে প্রবেশ করলে পরিবারের উপর ঘনিয়ে আসে অমঙ্গলের ছায়া। ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়া, আর্থিক অনটন, কষ্ট ধেয়ে আসে আপনার প্রতি। কিন্তু কে এই অলক্ষ্মী? কী ভাবে জন্ম হল তাঁর?
দেবীর বোন বলেই পরিচিত অলক্ষ্মী! লক্ষ্মীর বরেই দৈত্য কলিকে স্বামী হিসাবে লাভ করেন অলক্ষ্মী। অপরিচ্ছন্ন, কুৎসিত, আলস্য, অত্যাচার, ঈর্ষা, ক্রোধ, ভণ্ড, লোভ ও কামের মধ্যে বাস এই দেবীর।
কথিত দেবী লক্ষ্মীকে স্বর্গলোকে ফিরিয়ে আনতে সমুদ্রমন্থন হয়েছিল তখন জন্ম দেবী লক্ষ্মীর। শোনা যায়, গরল অর্থাৎ বিষের পাত্র নিয়ে জন্ম নিয়ে বেরিয়ে এসেছিলেন দেবী লক্ষ্মী। দেবী লক্ষ্মীর বড় দিদিও বলা হয় অলক্ষ্মীকে।
অলক্ষ্মী কৃষ্ণবর্ণা, তাঁর হাতে আছে ঝাঁটা। তাঁর পরনে থাকে রক্তমালা, রক্তকমল ও লোহার অলঙ্কার। দেবীর বাহন হল গাধা। শোনা যায় দেবী অলক্ষ্মীকে ভয় পান অসুররাও।
কথিত দেবী অলক্ষ্মীকে এতটাই ভয় পান সবাই, যে কেউ তাঁকে বিয়ে করতে চান না। তখন দেবীকে বিয়ে করার জন্য মুনি উদ্দালককে অনুরোধ করেন ভগবান বিষ্ণু। তাঁর অনুরোধেই অলক্ষ্মীকে বিয়ে করেন বিষ্ণু।
অলক্ষ্মী ভালভাবে সংসার চালাতে পারেন না। তাই মুনি তাঁকে পরিত্যাগ করেন। এই কারণেই অলক্ষ্মীর কোনও বাড়িতে ঠাঁই হয় না। অলক্ষ্মীর মূর্তিকেও ঘরের ভিতরে আনা হয় না।
কেউ কেউ বলেন সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার দুই রূপের প্রতীক দেবী লক্ষ্মী ও দেবী অলক্ষ্মী। বলা হয় ব্রহ্ম দেবের চারটি মুখের মধ্যে যে দিকটি অন্ধকারে থাকে, সেই অন্ধকারের প্রতীক অলক্ষ্মী। দীপান্বিতা লক্ষ্মী পুজোর আগের দিন তাই ঘরে ঘরে অলক্ষ্মী বিদায়ের প্রথা রয়েছে।