বছরের একটা সময়ে রঙের খেলায় মেতে ওঠে গোটা দেশ। তা এই ফাল্গুন মাসের পঞ্চমী তিথি। বাংলা জুড়ে তা পরিচিত দোল উৎসব নামে।
এই দোল এলে বাজারে দেখা যায় থালা ভর্তি করে সাজিয়ে রাখা রয়েছে রং-বেরঙের মঠ, ফুট কড়াই। শুকনো ছোলা, বা মটরকে চিনির রসে ডুবিয়ে তৈরি হয় ফুট কড়াই।
চিনির রসকে ছাঁচে ফেলে তৈরি হয় মঠ। প্রধানত পর্তুগীজদের থেকেই বাঙালিরা আমদানি করে এই মঠ মিষ্টান্ন। মঠের সঙ্গে বহু বছর ধরে চল ফুটকড়াই খাওয়ার। কোথা থেকে এল এই মিষ্টি?
আসলে এই ফাগুন মাসটি যেমন রবিশস্যের মাস, তেমনই ছোলারও মাস। একসময়ে পাকা ছোলার গাছে গ্রামবাংলার খেত ছেয়ে থাকত।
রাখাল বালকেরা আলের ধারে খড়ের আগুন জ্বেলে তাতে পাকা ছোলার গাছ ফেলে আধপোড়া করে 'হোরা' করত। 'হোরা' হচ্ছে আধপোড়া ছোলা। স্থানীয়দের কাছে এটা ছিল খুবই মুখরোচক খাবার।
বাংলার ময়রারাই ছোলার বদলে কখনও কলাই বা মটরকে ভেজে 'ফুটকলাই' তৈরি করতেন। পরে শুধু ভাজা না খেয়ে তাতেই আনা হল ছোট্ট বদল।
ভাজার পর ঘন রসে ফেলা শুরু হয় সেই সব ফুটকলাই। তৈরি হয় নতুন মিষ্টি। আর তার নাম হয় 'ফুটকড়াই'।
দোলের দিন মঠ-ফুটকড়াইও রাধা-গোবিন্দকে নিবেদন করে তারপরেই তা খায় বাঙালি। এই ভাবেই বাঙালির সংস্কৃতির সঙ্গে জুড়ে গেল দুই নতুন মিষ্টি।