ছুটি ছুটি ছুটি, গরম গরম রুটি! রবিবার বললেই আমাদের প্রথম যেটা আসে তাহলে ছুটির দিন। কিন্তু কেবল রবিবারই কেন? সোম থেকে রবি, সপ্তাহে ৭ দিনের মধ্যে রবিবারটাই কেন ছুটির দিন? জানেন তার ইতিহাস?
রবিবার কী ভাবে ছুটির দিন হল তা জানতে হলে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে প্রায় ২৬৮ বছর পিছনে। ১৭৫৭ সাল। ভারতে সূচনা হয়েছিল এক নতুন যুগের।
ভারতের শাসনভার পুরোপুরি ব্রিটিশদের হাতের কবলে। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সারা ভারত জুড়েই প্রচুর কলকারখানা স্থাপন করে ইংরেজরা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেই সব কলকারখানায় মজুরের কাজ করত ভারতীয় শ্রমিকরা।
কিন্তু সেই সময় তাঁদের কোনও ছুটি ছিল না। কেবল ব্রিটিশ কর্মচারীদের সপ্তাহে একদিন গির্জায় গিয়ে প্রার্থনা করার জন্য ছুটি দেওয়া হত। সেটা ছিল রবিবার। এই পক্ষপাতিত্ব মেনে নেননি তখনকার শ্রমিক নেতা নারায়ণজী মেঘাজী লোখান্ডে।
ছুটি চাইলেই তো আর পাওয়া যায় না। তাই এক ফন্দি আঁটলেন লোখান্ডে। ব্রিটিশরা প্রার্থনা করার জন্য রবিবার ছুটি পান। লোখান্ডে বললেন যে শ্রমিক সারাদিন খাটে তাঁদেরও উপাসনার জন্য এক দিন ছুটি পাওয়া উচিত।
খান্ডোবা পুজোর দিন হল রবিবার। সেই মতোই দাবি করলেন ছুটির। এই খান্ডোবা হলেন দেবাদীদেব মহাদেবের আরেকরূপ। দাক্ষিণাত্যের মালভূমি এবং মহারাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ অংশে কূলদেবতা হিসাবে পূজিত হন খান্ডোবা।
মূলত মহারাষ্ট্রে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল। ছুটি আদায় করতে সময় লেগেছিল অনেক। টানা ৭ বছরের দীর্ঘ বিপ্লবের পরে ১৮৯০ সালের ১০ জুন রবিবারকে শ্রমিকদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
প্রথমে সপ্তাহে ১ দিন করে মাসে ৪ দিনের মাইনে দেওয়া হত না। পরে ওই ৪ দিন অর্ধেক দিনের মাইনে দেওয়া শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় থেকে সূর্যাস্ত অবধি ডিউটি, কাজের মাঝে আধঘণ্টা টিফিন ব্রেক এই সবই লোখান্ডের আন্দোলনের ফল।