শাস্ত্রমতে, ভগবানের চরণে ফুল নিবেদন করলে পুণ্য বৃদ্ধি, পাপের বিনাশ এবং প্রচুর শুভ ফল লাভ হয়। ফুল নিবেদন করলে কোন ফল পাওয়া যায় এবং কোন কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে
হিন্দুরা বিশ্বাস করেন যে, ভগবানকে সোনা, রৌপ্য, হীরা ও গহনা নিবেদন করলে তারা যতটা খুশি হয়, ফুল নিবেদন করলে ততটা খুশি হয় না। ফুলের মালা নিবেদন করলে ফুলের তুলনায় দ্বিগুণ ফল পাওয়া যায়।
তুলসী ছাড়া সব ফুলই গণপতিজির প্রিয়। দূর্বা ও শমীপত্র গণপতির খুব প্রিয়। তবে দুর্বা অর্পন করার সময় দেখে নিন, সেটি তিন বা পাঁচটি পাতা রয়েছে কিনা।
মহাদেবের পুজোয় ফুল নিবেদনের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। বেলপত্র ও ধুতরা ফুল ভগবান শঙ্করের খুব প্রিয়। ভগবান শিবকে যে ফুল নিবেদন করা হয় তার প্রত্যেকটি গুরুত্ব ও তাত্পর্য রয়েছে। যেমন দূর্বা নিবেদন করলে জীবন লাভ হয় এবং ধুতুরা নিবেদন করলে পুত্র সন্তান লাভ হয়।
রাম তুলসী এবং শ্যামা তুলসী ভগবান বিষ্ণুর খুব প্রিয়। একদিকে যদি তাজা মালতী, চম্পা, কানের, বেলা, পদ্ম ও মণির মালা থাকে এবং অন্যদিকে বাসি তুলসী থাকে তবে ভগবান বিষ্ণু কেবল বাসি তুলসীকেই গ্রহণ করবেন।
গোলাপ, জবাকুসুম, সুগন্ধি সাদা ফুলের মতো সব লাল ফুলই দেবীর প্রিয়। দেবীকে অক ফুল ও দূর্বা নিবেদন করা হয় না। লক্ষ্মী সব ফুলেই বাস করেন কিন্তু তিনি পদ্মকে খুব ভালোবাসেন।
তুলসী পাতা, বেল পাতা ও অগস্ত্যের ফুল কখনও বাসি হয় না। পদ্ম ১১ দিন এবং কুমুদ ৫ দিন বাসি হয় না। চম্পার কুঁড়ি ছাড়া অন্য কোনও ফুলের কুঁড়ি ভগবানকে নিবেদন করা উচিত নয়।
মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণ যুধিষ্ঠিরকে তাঁর প্রিয় ফুলের কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ‘কুমুদ, কানের, মল্লিকা, চম্পা, টগর, পলাশের পাতা ও ফুল, দূর্বা, ভৃঙ্গর ও বনমালা আমার খুব প্রিয়’।
কোনও পাতা, ফুল বা ফল উল্টে ভগবানকে নিবেদন করা উচিত নয়। দুপুরের পর ফুল তোলা নিষেধ। রবিবার ও দ্বাদশীতে তুলসী গাছ ভাঙা বা পাতা তোলা উচিত নয়।
পুরাণে উল্লেখ রয়েছে, দেবতাদের কষ্ট দূর করার জন্য ভগবান বিষ্ণু প্রতিদিন শিব সহস্রনাম পাঠের মাধ্যমে শিবকে এক হাজার পদ্ম নিবেদন করতেন। একদিন ভগবান শিব তাঁর ভক্তি পরীক্ষা করার জন্য একটি পদ্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন।
একটি পদ্ম কম পড়লে ভগবান বিষ্ণু তাঁর একটি পদ্ম-চোখ ভগবান শিবের পায়ে নিবেদন করেন। এই দেখে ভগবান বিষ্ণু খুব খুশি হন এবং অসুরদের বিনাশের জন্য তাঁকে সুদর্শন চক্র দান করেন।