রথযাত্রা আগে টানা ১৫ দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন গণদেবতা জগন্নাথদেব। তাঁকে সুস্থ করে তোলার জন্য পুরীর মন্দিরের নিভৃতে চলে সেবা-শুশ্রুষা।
স্নানযাত্রার পরের দিন থেকেই পুরীধামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। অসুস্থ অবস্থায় ভগবান ভক্তদের দর্শন দেন না মহাপ্রভু।
রাজবৈদ্যদের সেবা ও চিকিত্সায় সুস্থ হয়েই নবযৌবন ফিরে পান জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরাম। আর এই ১৫ দিন নিভৃতবাসকে বলা হয় আনসারা।
এই পবিত্র আচার অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয় ফুলুরি তেল বা ভেষজ তেল। ফুলুরি তেল হল একপ্রকার ভেষজ তেল বা মহৌষধি।
বিভিন্ন রকমের ফুল, কর্পূর, অশ্বগন্ধা, মধু ও অন্যান্য আরও আয়ুর্বেদিক উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয় এই বিশেষ মহৌষধি। পুরীর মন্দিরের এই প্রথার মেনে চলেন নির্দিষ্ট রাজবৈদ্যরা।
ভেষজ তেল বা ওষুধ তৈরির জন্য পুরীর এক গোপন জায়গায় এই ফুল চাষ করা হয়। সেগুলি নিয়ে এসে মাটির নীচে রেখে দিনের পর দিন ওষুধ তৈরি করেন রাজবৈদ্য়রা।
মহাপ্রভুকে নিভৃতে সেবা করার জন্য আয়ুর্বেদিক পাঁচন তৈরি করা হয়। সেই পাঁচন জগন্নাথদেবকে খাওয়ানো হয়। তাতে তিনি দ্রুত সুস্থ বোধ করেন।
ফুলুরির তেল তিনদেবদেবীর দারুমূর্তিতে প্রলেপ দেওয়া হয়। মন্দিরের আনসার ঘরেই এই তেলের প্রলেপ দেওয়া হয়। ফুলুরির তেল প্রলেপ দেওয়ার আরও একটি কারণ রয়েছে।
বছরের এই সময়েই দারুমূর্তিতে এই তেল প্রলেপ দেওয়া হয়। তাতে মূর্তিগুলি আরও বেশি সংরক্ষিত হয়। পোকামাকড়, ইঁদুর, বা প্রতিদিনের পুজার্চনায় মূর্তিতে নানারকম ক্ষতি হতে পারে।