হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে, তন্ত্রমতে শ্যামা বা কালীমূর্তির আরাধনা করা হয়ে থাকে। শাক্ত বাঙালির কাছে কালীপুজো বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
কালী শব্দটি এসেছে কৃষ্ণবর্ণ থেকে। এখানে কাল শব্দের স্ত্রীর রূপ। বিভিন্ন পুরাণ অনুযায়ী, দেবী মহামায়ার অন্য একটি রূপ হল কালী।
শক্তির আরোধ্যা দেবী কালীর রুদ্র ও ভয়ঙ্কর রূপ হল একটি দানবীর রূপ। কালীর একাধিক রূপের বর্ণনা পাওয়া যায় এই বাংলায়।
সনাতন ধর্মীয় শাস্ত্র অনুযায়ী, পুরাকালে শুম্ভ এবং নিশুম্ভ নামক দুই দৈত্য বধ করতে দেবরাজ ইন্দ্র আদ্যাশক্তি মহামায়ার তপস্যা শুরু করেছিলেন। তুষ্ট হলে এক দেবীর আবির্ভাব হয়।
শরীরের কোষ থেকে জন্ম নেওয়া এক দেবীর আবির্ভাব হয়। এই দেবী কৌশিকী নামে পরিচিত। মহামায়া দেহ থেকে নিঃসৃত হওয়ার সময় কালো বর্ণ ধারণ করেন। সেই দেবীই কালীর আদিরূপ বলে ধরা হয়।
তান্ত্রিক পদ্ধতিতে মধ্যরাত্রে, অমাবস্যার রাত্রে মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে দেবী কালীকে পুজো করার নিয়ম। তবে, গৃহস্থ বাড়িতে সাধারণত অতান্ত্রিক ব্রাহ্মণ মতে মা কালীর পুজা দেখা যায় ।
দক্ষিণা কালী, শ্মশান কালী, ভদ্রকালী, রক্ষাকালী ,গ্রহ কালী, চামুণ্ডা, ছিন্নমস্তা প্রভৃতি। আবার বিভিন্ন মন্দিরে ব্রহ্মময়ী , আনন্দময়ী, ভবতারিণী, আনন্দময়ী ইত্যাদি নামেও মা কালীর উপাসনা করতে দেখা যায়।
বাংলায় প্রথম কালী পুজোর প্রচলন কে করেছিলেন? বলা হয় , নবদ্বীপের এক তান্ত্রিক , কৃষ্ণানন্দ প্রথম বাংলায় কালীমূর্তি পুজোর প্রচলন করেছিলেন। তার আগে, পটচিত্রে বা খোদাই করা কালীমূর্তির পুজো করা হত।
তবে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল অষ্টাদশ শতাব্দীতে নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের আমলে। তার সময়েই কালীর প্রতিমা গড়ে পুজো করা শুরু হয়।