প্রাচীন যুগ থেকেই ভারতে চলে আসছে দেবতাদের প্রতি পূজা অর্চনা করার প্রথা।আর তাই ভারতকে বলা হয় তেত্রিশ কোটি দেবতাদের দেশ।
হিন্দুধর্ম অনুসারে মহাদেব সর্বাপেক্ষা ক্ষমতাবান দেবতা। তা সত্ত্বেও তিনি ভোলেনাথ। তিনি গায়ে ভস্ম মেখে থাকেন।
আর এই দেবতাদের মধ্যে অন্যতম দেবতা হলেন দেবাদিদেব মহাদেব। সারা ভারত জুড়েই ছড়িয়ে আছে অসংখ্য শিব মন্দির।
গ্রাম গঞ্জ থেকে শুরু করে শহর, নগর সব জায়গাতেই।সমতল ভুমিরূপেই যে এই ঈশ্বরের মন্দির আছে তা নয়।পার্বত্য অঞ্চলেও তিনি সমানভাবে বিরাজমান।
তবে সারা ভারত জুড়ে প্রথমদিকে মনে করা হত জ্যোতির্লিঙ্গের সংখ্যা ৬৪। এর মধ্যে ১২টিকে পবিত্রতম বলে গণ্য করা হয়। তিনি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভাবে পূজিত হয় বারোটি জায়গায়।
হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী , অরিদ্রা নক্ষত্রের রাতে শিব স্বয়ং জ্যোতির্লিঙ্গ রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার কারণ হিসাবে এক গল্পের বর্ণনা আছে।
হিন্দুধর্মে বর্ণিত পঞ্চভূত কথাটির অর্থ হল পাঁচটি মৌলিক উপাদানের একটি সমষ্টি, যা সমগ্র মহাজাগতিক সৃষ্টির ভিত্তি। এই পাঁচটি উপাদান হল: ক্ষিতি, অপ্, তেজ, মরুৎ এবং ব্যোম।
ক্ষিতি অর্থে মাটি বা পৃথিবী, অপ্ অর্থে জল, তেজ অর্থে আগুন, মরুৎ অর্থে বায়ু এবং ব্যোম অর্থে আকাশ বোঝানো হয়। এই পাঁচটি আদি পদার্থের সমষ্টিকে পঞ্চভূত বলা হয়।
পঞ্চভূতের প্রত্যেকটির একজন অধীশ্বর শিবলিঙ্গ রয়েছেন, এগুলি পঞ্চভূত লিঙ্গ নামে পরিচিত। এই পাঁচটি শিবলিঙ্গ যেখানে প্রতিষ্ঠিত, সেই স্থানগুলিকে ‘পঞ্চভূত স্থল’ নামে অভিহিত করা হয়।
দক্ষিণ ভারতে অবস্থিত পঞ্চভূত হল পাঁচটি শিব মন্দিরের একটি সংগ্রহ যা প্রতিটি পাঁচটি উপাদানের মধ্যে একটিতে নিবেদিত। পৃথিবী, আকাশ, জল, বাতাস এবং আগুন।
একবরেশ্বর মন্দির (পৃথিবী): কঞ্চিপুরম মন্দিরের শিব লিঙ্গ পৃথিবী’র লিঙ্গ হিসাবে পূজা করা হয়। নটরজ মন্দির (আকাশ): চিদাম্বরম এ অবস্থিত শিব মন্দির। আকাশ হিসেবে শিবকে পূজা করা হয়।
জম্বুকেশ্বর মন্দির (জল): এই মন্দিরটি তিরুচিরাপল্লীতে অবস্থিত, জল হিসেবে শিবকে পূজা করা হয়। কালহস্তি মন্দির (বাতাস): অন্ধ্রপ্রদেশে অবস্থিত এই শিব মন্দিরটিতে বাতাস হিসেবে শিবকে পুজো করা হয়।
অরুনাচলেশ্বর মন্দির (অগ্নি): এই মন্দিরের শিব লিঙ্গ অগ্নি লিঙ্গম হিসাবে পূজা করা হয়। পাঁচটি উপাদান বিশুদ্ধকরণের জন্য এই প্রাচীন মন্দির নির্মিত।