কোনও দেবদেবী নয়, প্রথম মহাশিবরাত্রি কে পালন করেছিলেন?
credit: istock
TV9 Bangla
মহাশিবরাত্রি ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত হয়। এটা হল হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ আরাধ্য দেবাদিদেব মহাদেব ‘শিবের মহা রাত্রি’। এটি হিন্দু শৈব সম্প্রদায়ের কাছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান।
অন্ধকার আর অজ্ঞতা দূর করার জন্য এই ব্রত পালন করা হয়। অগণিত ভক্ত এই দিন শিবলিঙ্গে গঙ্গাজল, দুধ, বেলপাতা, ফুল দিয়ে পুজো করেন। সব ব্রতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল এই মহাশিবরাত্রি।
শিবমহাপুরাণ অনুসারে, অতি প্রাচীনকালে বারাণসী তথা কাশীধামে এক নিষ্ঠুর ব্যাধ বাস করতেন। যাঁর ধর্মকর্মের কোনও বালাই ছিল না। পশুহত্যাই ছিল তাঁর টিকে থাকার একমাত্র অবলম্বন।
একদিন শিকারে বেরিয়ে জঙ্গলে পথ হারিয়ে ফেলেন তিনি। সন্ধ্যা নেমে আসে। তখন তিনি হিংস্র জন্তু-জানোয়ারের কবলে পড়ার ভয়ে একটি গাছের উপরে আশ্রয় নেন।
সে দিন খাওয়ার মতো কোনও শিকার না পেয়ে প্রচণ্ড হতাশ হয়ে অতশত না ভেবেই আনমনে গাছ থেকে একটা একটা করে পাতা ছিঁড়ে তিনি নীচে ফেলতে থাকেন। সেই গাছটি ছিল বেলগাছ। আর সেই বেলগাছের নীচেই ছিল একটি শিবলিঙ্গ।
সে দিন ছিল শিবচতুর্দশী অর্থাৎ মহাশিবরাত্রি। আর ব্যাধও ছিল উপবাসী। তাঁর ফেলা বেলপাতাগুলো টুপটাপ করে শিবলিঙ্গের মাথায় পড়েছিল।
পর দিন ব্যাধ বাড়ি ফিরে এসে দেখেন তাঁর বাড়িতে এক অতিথি এসেছেন। তখন তিনি নিজে না খেয়ে তাঁর খাবারটা তিনি অতিথিকে দিয়ে দেন। ফলে মন্ত্রোচারণ না করলেও, ব্রত পালনটা কিন্তু না জেনেই তিনি ঠিকঠাক মতোই সম্পন্ন করেছিলেন।
পরে ব্যাধ মারা যাওয়ার পর শিবদূত আর যমদূতদের মধ্যে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধুন্ধুমার কাণ্ড শুরু হয়ে যায়। শেষে শিবের দূতেরাই জয়ী হন।
আর হেরে গিয়ে যমরাজও স্বীকার করে নেন যে, এর পর থেকে কেউ শিবচতুর্দশী পালন করলে তাঁর উপরে যমের আর কোনও অধিকার থাকবে না।