14 November 2023

অন্নকূট উত্‍সবে কটি পদ নৈবেদ্য দেওয়া হয়?

গোবর্ধন পুজো ও অন্নকূট পুজো একই দিনে পালিত হয়। এ বছর ১৪ নভেম্বর , গোবার্ধন বা অন্নকূট মহোত্‍সব পালিত হচ্ছে।

দীপাবলি উত্‍সবের চতুর্থ দিনে এই উত্‍সব পালিত হচ্ছে। শ্রীমদ্ভগবত গীতার লীলা পুরুষোত্তমে শ্রীকৃষ্ণের লীলাকাহিনি ও কীর্তির কথা উল্লেখ রয়েছে।

অন্নকূট মানে খাবারের পাহাড়, যেখানে ৫৬রকমের নিরামিষ খাবার প্রস্তুত করা হয় এবং নিয়ম মেনে শ্রীকৃষ্ণ এবং অন্যান্য দেবতাদের স্তরে স্তরে সাজিয়ে নিবেদন করা হয়। সেই সব নৈবেদ্যতে থাকে হরেক রকমের সুস্বাদু মিষ্টি, শাক-সবজি, ডাল, ভাজা সুস্বাদু খাবার। এছাড়া রান্না করা ডালও করা হয়।

পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, একদিন শ্রী কৃষ্ণ দেখেন, যে সমস্ত ব্রজবাসীরা বিভিন্ন ধরণের খাবার তৈরি করছেন, পূজার মণ্ডপ সাজানো হচ্ছে এবং সকাল থেকেই পুজোর সামগ্রী সংগ্রহে ব্যস্ত সবাই।

তখন শ্রী কৃষ্ণ যশোদাকে জিজ্ঞেস করেন, “মায়া” কার পূজার জন্য আজ এই সমস্ত মানুষ প্রস্তুতি নিচ্ছেন? যশোদা সেইসময় বলেন যে ব্রজবাসী ইন্দ্রদেবের পূজার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তখন কৃষ্ণ বললেন কেন সব মানুষ ইন্দ্রদেবের পূজা করছেন?

বৃষ্টি বর্ষণ করা ইন্দ্রদেবের কর্তব্য। আমরা যদি পূজা করতে চাই, তবে আমাদের গোবর্ধন পর্বতে করা উচিত। কারণ আমাদের গরু সেখানে চরে এবং আমরাও গোবর্ধন পর্বত থেকে ফল, ফুল, শাকসবজি ইত্যাদি পাই।

ব্রজবাসী কৃষ্ণের কথায় মুগ্ধ হয়ে ইন্দ্রদেবের পরিবর্তে গোবর্ধন পর্বতের পুজো শুরু করেন। দেবরাজ ইন্দ্র এই কর্মকীর্তিকে ভাল চোখে দেখেননি। অপমান মেনে নেননি তিনি। গ্রামবাসীদের কর্মকাণ্ডে ক্রদ্ধ হয়ে প্রলয়ঙ্করী মুষলধারে বৃষ্টি শুরু করেন। 

শ্রীকৃষ্ণের পাশাপাশি এদিন জগন্নাথ মন্দিরেও অন্নকূট উত্‍সব পালন করা হয়। রীতি অনুসারে. প্রায় ১০৮টি ব্যঞ্জন দিয়ে ভোগ নৈবেদ্য নিবেদন করতে হয়। তাতে মিষ্টি, ফল, অন্ন, সুজি, পায়েস, লুচি, পিঠে থেকে শুরু করে আরও সুস্বাদু রান্না করা হয়ে থাকে। এদিন জগন্নাথ দেবেরও পুজো করা হয়ে থাকে।

নিয়ম অনুসারে, সকালে অন্নকূটের আয়োজন শুরু করে দুপুরের আগে শেষ করা উচিত। তাতেই মিলবে সুফল। এদিন গিরিরাজ অর্থাত গোবর্ধন পর্বত ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুজো করা হয়। শুধু তাই নয়, এই দিন অন্নকূট পুজোও পালিত হয়। কারণ এই দিন অন্নকূট নিবেদনের প্রথা রয়েছে।