6th May, 2025

পাথর নয়, নিম কাঠেই কেন জগন্নাথের মূর্তি হয়? কী বলছেন পুরীর মন্দিরের সেবাইত

TV9 Bangla

Credit - PTI, Getty Images

এতদিন জগন্নাথ দেবের দর্শন করতে সকলে ভিড় জমাতেন পুরীতে। দিঘায় নতুন জগন্নাথ মন্দির তৈরি হওয়ার পর দিঘামুখী প্রচুর মানুষ। অল্প কয়েকদিনেই সেখানে ভালোই ভিড় হতে শুরু করেছে।

 এরইমাঝে দিঘার মন্দিরের নিমকাঠের জগন্নাথ বিগ্রহ নিয়ে জোর আলোচন। আসলে পুরীধামে জগন্নাথ বিগ্রহ নিমকাঠের। সম্প্রতি দিঘায় তৈরি হওয়া জগন্নাথ মন্দিরের বিগ্রহও নিম কাঠের। সেই নিম কাঠ কোথা থেকে এসেছে, তা নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।

পুরীর মন্দিরের সেবায়ত রাজেশ দৈতাপতি দিঘার মন্দিরের উদ্বোধনের দিন প্রথমে দাবি করেছিলেন, ২০১৫ সালে পুরীর মন্দিরে নবকলেবরে ব্যবহৃত পবিত্র নিম কাঠের অবশিষ্ট অংশ দিয়েই বানানো হয়েছে দিঘার মন্দিরের জগন্নাথের বিগ্রহ। তাঁর এমন মন্তব্যের পর হইচই পড়ে যায়।

পরে তিনিই ওড়িশায় ফিরে সম্পূর্ণ বিপরীত মন্তব্য করেন। এরপর আসরে নামেন ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ চৌহান। তিনি পরিষ্কার করেন, তেমন কিছু হয়নি। ২০১৫ সালে পুরীর মন্দিরে নবকলেবরে ব্যবহৃত পবিত্র নিম কাঠের অবশিষ্ট অংশ দিয়ে আরও বিগ্রহ বানানো সম্ভব নয়।

এরই মাঝে TV9 Bangla-র পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল পুরীর এক সেবাইতের সঙ্গে। তিনিও নিম কাঠ নিয়ে একই কথা জানান। পাশাপাশি তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কেন নিমকাঠেরই জগন্নাথ বিগ্রহ হওয়া উচিত?

 নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরীর মন্দিরের এক সেবাইত জানান, পুরীতে জগন্নাথকে বলা হয় দারুব্রহ্ম। নিম কাঠের তৈরি বিগ্রহ কিছু বছর পরপর বদলে ফেলা হয়। তা তৈরি হওয়ার পর সামান্য কাঠই থেকে যায়।

তিনি এও জানান, ১৯ বছর পর পর জগন্নাথ দেবের নতুন বিগ্রহ তৈরি হয়। যদি রথ থেকে ওঠা নামার সময় শরীরে আঘাত লাগে, তখন সেই কাঠ কাজে লাগানো হয়। প্রতি নবকলেবরে অবশিষ্ট কাঠ নম্বর করে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়। তাই তা থেকে অন্য বিগ্রহ তৈরির সুযোগ নেই।

জগন্নাথ বিগ্রহ কেন কাঠেরই বানানো উচিত? পুরীর মন্দিরের ওই সেবাইত বলেন, 'এমনটাই হয়ে চলেছে। আমরা দারুব্রহ্ম বলি জগন্নাথ দেবকে। পাথরের মূর্তি পুজো করার প্রথা নেই। কাঠের বিগ্রহের পুজো হয়। যদি তেমনটা না হয়, তা হলে অঘটন ঘটার সম্ভবনা রয়েছে বলা হয়।'

তিনি আরও বলেন, 'এই যেমন নিয়ম না মেনে পুজো করলে ওড়িশা রাজ্যে কোনও অঘটন ঘটতে পারে। তেমনই আধ্যাত্মিক ভাব নিয়ে কোনও ওলোটপালট কাজ হলে পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বা সেখানকার বাসিন্দাদের অঘটন ঘটতে পারে। এছাড়া ভবিষ্যপুরাণে নিম কাঠ শুভ বলা হয়।'

পুরীর মন্দিরের ওই সেবাইত এও জানান যে, রামকৃষ্ণ দয়িতাপতির সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভালো সম্পর্ক। পাথরের মূর্তি করার ভাবনাচিন্তা হচ্ছে জানার পর পন্ডা ঠাকুর জানান, নিমকাঠের দারুব্রহ্ম পুজোর নিয়ম আছে। কারণ, জগন্নাথ দেবের পাথরের মূর্তি পুজো করার নিয়ম নেই।