হাওড়া জেলা সংশোধনাগারে বন্দিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ!

হাওড়া মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে সনাতনের স্ত্রী জানান, জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতিতে কড়া বিধি নিষেধের জন্য জামিনের প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়।

হাওড়া জেলা সংশোধনাগারে বন্দিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ!
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 08, 2021 | 10:06 PM

হাওড়া: হাওড়া জেলা সংশোধনাগারের ভিতর বিচারাধীন বন্দিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠলে। অভিযোগ তুললেন মৃত বন্দি সনাতন দাস (৩২)–র স্ত্রী।

বছর দুয়েক আগে মাদক আইনে সনাতনকে গ্রেফতার করেছিল ডোমজুড় থানা। তিনি জেলা সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন। সোমবার সকালে হঠাৎই সংশোধনাগার থেকে বন্দির পরিবারককে খবর দেওয়া হয় সনাতনকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। শারীরিক অসুস্থতার জন্যই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানানো হয় মৃতের পরিবারকে।

কিন্তু সনাতনের স্ত্রী কুসুম তড়িঘড়ি হাসপাতালে ছুটে গিয়ে দেখেন স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। এর পরই তিনি জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁর স্বামীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ তোলেন। এদিকে হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, ওই বন্দির মৃত্যুর কারণ জানতে নিয়ম মেনে ময়নাতদন্তের পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তও শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার মৃত বন্দির স্ত্রী কুসুম দাস অভিযোগ করেন, স্বামীকে মৃত অবস্থাতেই সংশোধনাগার থেকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তিমি জানান, গত সপ্তাহের মঙ্গলবারও সংশোধনাগারে তিনি যখন স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে যান তখনও তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন। তার পর যদি তিনি অসুস্থ হয়েও থাকেন তাহলে পরিবারকে আগে কেন খবর দেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কুসুম দেবী।

এদিন হাওড়া মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে তিনি জানান, জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতিতে কড়া বিধি নিষেধের জন্য জামিনের প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়। স্বামীকে যাঁরা মেরেছে তাঁদের শাস্তির দাবি করেন সনাতনের স্ত্রী।

সনাতনের পারিবারিক সূত্রে খবর, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ডোমজুড় থানার পুলিশ মাদক আইনে গ্রেফতার করেছিল তাঁকে। গ্রেফতারের পর প্রায় ২০ মাস সনাতন হাওড়া জেলা সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দি ছিলেন। আন্দুলের মহিয়াড়ির বাসিন্দা সনাতন পেশায় একজন গাড়ি চালক ছিলেন। তাঁর স্ত্রী বর্তমানে পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। মৃতের পরিবারের তরফে হাওড়া থানায় জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পিটিয়ে মারার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ইয়াসে ছাগল ও মাছ মরেছে, ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন! 

এছাড়াও মৃতের আইনজীবী হাওড়ার জেলাশাসককে মেল মারফত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর পরই তড়িঘড়ি সোমবারই ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সনাতনের দেহের ভিডিওগ্রাফি করা হয়। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছে জেলা প্রশাসন।