Blood Donation: কথায় কথায় হাসপাতাল সুপার বলেছিলেন ‘রক্ত সঙ্কট’! পরদিনই রক্ত দিতে ছুটে এলেন জেলাশাসক

Alipurduar: কথাতেই রয়েছে, রক্তদান জীবনদান। প্রতিদিন সারা বিশ্বে রক্তের অভাবে কত মানুষ প্রাণ গেলেও এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি।

Blood Donation: কথায় কথায় হাসপাতাল সুপার বলেছিলেন 'রক্ত সঙ্কট'! পরদিনই রক্ত দিতে ছুটে এলেন জেলাশাসক
হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে এসে রক্ত দিলেন আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনা। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 31, 2021 | 8:35 PM

আলিপুরদুয়ার: হাসপাতালে রক্ত সঙ্কট (Blood Donation)। সেই সঙ্কট কাটাতে এগিয়ে এলেন জেলাশাসক নিজে। হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে এসে রক্ত দিলেন আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনা। অন্যকে জীবনদানের পাশাপাশি মানুষের মধ্যে রক্তদান নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে জেলাশাসকের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে রক্ত সঙ্কট চলছে। নির্বাচন ঘোষণার পর ভোটের বিধিনিষেধের জন্য রক্তদান শিবির করা যায়নি। তারপর কোভিডের জন্য বিভিন্ন সংস্থা রক্তদান শিবির করতে পারছে না। ফলে রক্তের আকাল হাসপাতালে। শনিবার এক বৈঠক চলাকালীন বিষয়টি কানে যায় জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনার।

হাসপাতালের সুপারের কাছেই রক্তের সঙ্কটের কথা জানতে পারেন জেলাশাসক। এরপরই রবিবার ছুটে যান আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে। রক্ত দেন তিনি। রক্ত দিতে পেরে দারুণ খুশি জেলাশাসক। সুরেন্দ্র কুমার মীনা বলেন, “এর আগে এখানে গত এপ্রিল মাসে এসে রক্ত দিয়েছিলাম। আবারও রক্ত দিতে পারলাম। খুব ভাল লাগছে। এই হাসপাতালে রক্ত সঙ্কট চলছে শুনলাম। তাই চলে এলাম। একজন সমাজের নাগরিক হিসাবে এটা আমার কর্তব্য। এক বিন্দু রক্ত যে সঞ্জীবনীর মতো।”

আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার চিন্ময় বর্মন বলেন, “আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ ইউনিট রক্ত লাগে। অথচ ব্লাড ব্যাঙ্কে মাত্র ৪ ইউনিট রক্ত রয়েছে। এমনি কথায় কথায় জেলাশাসককে বলেছিলাম, ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত অপর্যাপ্ত। এ কথা শুনে জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মীনা নিজেই রক্ত দিতে চলে এলেন। নিঃসন্দেহে একটা অন্যরকম বার্তা দিলেন আমাদের জেলাশাসক। যেখানে জেলা হাসপাতালে রক্তের অভাব, সেখানে জেলাশাসকের রক্ত দেওয়া সত্যিই নজির।”

বেশ কিছুদিন ধরেই আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে রক্ত সঙ্কট চলছে। পর্যাপ্ত রক্ত নেই। ফলে সমস্যায় পড়ছেন রোগীরা। বিভিন্ন স্বেচ্চাসেবী সংগঠন বাইরে থেকে রক্তদাতা এনে সাময়িক ভাবে রক্ত সঙ্কট মেটানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু তোলা দুধে শিশু বাঁচানো যেমন শক্ত, এ ভাবে বার বার ডোনার ডেকে এনে রক্ত নিয়ে সেই রক্তে প্রাণ বাঁচানো তেমনই কঠিন।

আলিপুরদুয়ারের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি অভিজিৎ সরকার বলেন, “খুবই রক্ত সঙ্কট চলছে। ডোনার এনে আমরা চেষ্টা করছি রক্তের আকাল মেটাতে। কিন্তু তাতেও হচ্ছে না। অবিলম্বে শিবির করে রক্তদান না করা হলে পরিস্থিতি সত্যি জটিল হবে।”

কথাতেই রয়েছে, রক্তদান জীবনদান। প্রতিদিন সারা বিশ্বে রক্তের অভাবে কত মানুষ প্রাণ গেলেও এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। ২০০৪ সালের ১৪ জুন, এই দিনটিতে পালিত হয় রক্তদান দিবস হিসেবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কথায়, রক্তদানের ফলে বহু মানুষের জীবন বাঁচতে পারে। অনেকসময় রক্তক্ষরণ বেশি হলে রোগীকে রক্ত দিলেও বেঁচে থাকার আশা ক্ষীণ হয়ে যায়। প্রাণঘাতী পরিস্থিতিতে রোগীকে রক্তদানের মাধ্যমে বাঁচানো সম্ভব হয়।

আরও পড়ুন: রাজ্যে সামান্য কমল দৈনিক করোনা সংক্রমণ, তবে ঊর্ধ্বমুখী মৃত্যু সংখ্যা