Child Marriage: থানায় ক্লাস টেনের ছাত্রী, পুলিশ বলল ‘বস চুপ করে, তোর বাবাকে ফোন করছি’… মেয়ের কাণ্ডে হতবাক বাবা নিজেই

Bankura: অভাবের সংসার। দিনমজুর ওই ব্যক্তির স্ত্রী, দুই মেয়েকে নিয়ে কোনওমতে দিন গুজরান। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হতে দেননি বাবা।

Child Marriage: থানায় ক্লাস টেনের ছাত্রী, পুলিশ বলল 'বস চুপ করে, তোর বাবাকে ফোন করছি'... মেয়ের কাণ্ডে হতবাক বাবা নিজেই
পাত্রসায়র থানা এলাকায় নিজের বিয়ে রুখল নাবালিকা। ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 03, 2022 | 6:23 PM

বাঁকুড়া: ক্লাস টেনের ছাত্রী পড়াশোনা করতে চায়। বাবা, মা গরীব। খুব কষ্ট করে মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। মেয়ের ইচ্ছে, বড় হয়ে শিক্ষিকা হবে। বাপ-মায়ের দুঃখ ঘোচাবে। এদিকে বন্ধুরা জানায়, ওই কিশোরীর মা-বাবা মেয়ের বিয়ে দিতে চায়। বন্ধুদের কাছ থেকে সেই খবর পেতেই ক্ষোভে-অভিমানে ‘বিদ্রোহিনী’ হয়ে ওঠে ওই কিশোরী। নিজের বিয়ে রুখতে মা-বাবার বিরুদ্ধে নালিশ জানায় থানাতেই। তার এই সাহস দেখে হতবাক পুলিশের কর্মীরাও। মেয়ের এমন জেদ, সাহস দেখে থানা থেকে ডেকে পাঠানো হয় বাবাকে। বাঁকুড়ার পাত্রসায়র থানা এলাকার ওই কিশোরীর কথা এখন মুখে মুখে ফিরছে। যদিও থানায় দাঁড়িয়ে ওই কিশোরীর বাবা জানান, মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা তাঁদের ছিল না। বন্ধুদের মুখে শুনে রাগে থানায় চলে এসেছে।

অভাবের সংসার। দিনমজুর ওই ব্যক্তির স্ত্রী, দুই মেয়েকে নিয়ে কোনওমতে দিন গুজরান। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হতে দেননি বাবা। কিন্তু বড় মেয়ে ক্লাস টেনে উঠতেই চাপ বাড়তে থাকে বাবার ঘাড়েও। এরপরই ঠিক করেন একটা মেয়ের অন্তত বিয়ে দিয়ে দেবেন। সেইমতো কথা এগোচ্ছিল। মেয়েকে তিনি কিছু জানাননি। তবে বন্ধুদের কাছ থেকে জানতে পারে ওই কিশোরী। বিয়ের বয়স এখনও অনেকটাই দূর। এরপরই ঠিক করে পুলিশকে জানাবে।

যেমন ভাবা, তেমন কাজ। শনিবার সন্ধ্যায় সটান গিয়ে হাজির হয় স্থানীয় পাত্রসায়র থানায়। গোটা ঘটনা খুলে বলে সে। থানার ওসির কাছে সাহায্য চায়। এগিয়ে আসেন ওসি বিদ্যুৎ পালও। তিনিই উদ্যোগ গিয়ে থানায় ডেকে পাঠান ওই ছাত্রীর বাবা ও মাকে। কেন এখনই মেয়ের বিয়ের দেওয়া ঠিক হবে না, তা তাঁদের বুঝিয়ে বলেন। এরপর মা, বাবার হাত ধরেই বাড়ি ফেরে ওই সাহসী কন্যা।

ওই কিশোরী বলে, “থানায় গিয়ে বললাম বাড়ি থেকে বিয়ে ঠিক করেছে। কিছু একটা করুন। আমি এখন বিয়ে করতে চাই না, পড়তে চাই। আমার ইচ্ছা দিদিমণি হব। বাবা মাঠে কাজ করে। আমি চাই শিক্ষিকা হয়ে মা, বাবার কষ্ট দূর করতে। খুব কষ্ট করে আমাকে বাবা, মা পড়াশোনা করায়। আমি চাই আরেকটু কষ্ট করে পড়াটা এগিয়ে নিয়ে যেতে। এরপরই আমাকে থানা থেকে বলে ‘বস কিছুক্ষণ। তোর বাবাকে ফোন করে বলছি’। বাবা গিয়ে কথা বলে। তারপর আমাকে নিয়ে আসে।” ওই কিশোরীর বার্তা, “আমি চাই ১৮ বছর না হলে কেউ যেন বাড়ির মেয়েকে বিয়ে না দেয়।

ওই কিশোরীর বাবার কথায়, “বন্ধুবান্ধবের মুখে শুনেছে আমরা ওর বিয়ে দিতে চাই। সেই রাগে থানায় এসেছে। কিন্তু আমরা বিয়ের কথা ভাবিনি। ওর বিয়ের বয়স হলে তারপরই বিয়ে দেব। ওর ইচ্ছা পড়াশোনা করার। আমিও ক্ষমতা না থাকলেও যতটা পারি করি।” পাত্রসায়রের বিডিও জানান, একজন নাবালিকা বিয়ে করতে চায় না, পড়াশোনা করতে চায়। সে কারণে থানা পর্যন্ত গিয়েছে। এটা সত্যিই গর্বের।