Cattle Smuggling Case: ৫টাকার নোট দিয়ে কোটি টাকার মুনাফা! গরু পাচারে কী এমন ‘ম্যাজিক’ ছিল এই নোটে?

Cattle Smuggling Case: পাচারকারীরা বিশেষ চিরকুট ব্যবহার করত। যেখানে কোন পথ থেকে পাচার করা হত, তা উল্লেখ থাকত।

Cattle Smuggling Case: ৫টাকার নোট দিয়ে কোটি টাকার মুনাফা! গরু পাচারে কী এমন 'ম্যাজিক' ছিল এই নোটে?
গরু পাচারে পাঁচ টাকার নোট
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 20, 2022 | 2:06 PM

বীরভূম: বীরভূমের ইলামবাজার দেশের বৃহত্তম গরুর হাট। সেখান থেকেই রমরমিয়ে চলত পাচার কারবার। বাংলাদেশে গরু পাচারের সব থেকে বড় করিডর হিসাবে ব্যবহার করা হত মুর্শিদাবাদকে। গরু পাচারে কাজে লাগত পাঁচ টাকার নোট। এখন বাজারে এই পাঁচ টাকার নোটের প্রায় দেখাই মেলে না। কিন্তু গরু পাচারকারীদের কাছে সেই মূল্য অসীম।

গরু পাচারের ক্ষেত্রে বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের যোগ মারাত্মক। গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআই-এর ডেরায় বীরভূম তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআই বলছে, তাদের হাতে আসা তথ্য থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট, গরু পাচার চক্রের মূল ঘাঁটি বীরভূম। এখান থেকেই নিয়ন্ত্রিত হত গরু পাচারের কাজ কারবার। কেষ্টর গড় ইলামবাজার গরু পাচারের কাজ কারবার। সেখান থেকে চলত পাচারচক্র।

কিন্তু প্রশ্ন পাচারের গরুকে চিনত কীভাবে?

গরুগুলোকে আলাদা করা হত বিশেষ এক ধরনের স্ট্যাম্পে। ইলামবাজার থেকে মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশে পাচার করা হত গরু। প্রতি শনিবার ইলামবাজারে বসে গরুর হাট। পাচারের জন্য গরু চিহ্নিত করা হত। সেই গরুগুলির গায়ে দেওয়া হত বিশেষ স্ট্যাম্প। পাচারকারীদের হাতে পৌঁছে যেত চিরকুট। এই দুটি সঙ্কেতের ওপর ভর করে গরু পাচার চলত।

বিশেষ কায়দায় গরুগুলিকে নদী পারাপার করা হত। গরুর গলার দু’পাশ থেকে কলার ভেলা বেঁধে দেওয়া হত। তারপর গরুগুলিকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হত। এই হাট থেকেই কোটি কোটি টাকার পাচার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

পাচারকারীরা বিশেষ চিরকুট ব্যবহার করত। যেখানে কোন পথ থেকে পাচার করা হত, তা উল্লেখ থাকত। মুর্শিদাবাদ জেলার সীমান্ত এলাকায় যে গরু পাচার চক্র কাজ করত, তা নিয়ন্ত্রণ করা হত অনুব্রতর গড় বীরভূম থেকেই। মুর্শিদাবাদের সব থেকে বড় করিডর পাইকর এলাকা। বীরভূম, মুর্শিদাবাদের অন্যান্য হাট থেকে আসা গরু পাচার হত। সেগুলিকে সাগরদিঘি হাট থেকে পাচারের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হত। ভাগীরথী নদীর ওপর গড়ে উঠেছিল একাধিক অবৈধ ফেরিঘাট।

সাগরদিঘির ঘাট পার হলেও ওপরদিকে ভগবানগোলা। সরকারিভাবে যাতায়াতের কোনও রাস্তা ছিল না। গরু পাচারের জন্য অবৈধভাবে তৈরি হয়ে যায় ঘাট। গরু পাচারে কাজে লাগত পাঁচ টাকার নোট। এখন বাজারে এই নোটের দেখা প্রায় মেলে না বললেই চলে। নোটের গায়ে লেখা থাকত পাচার হতে চলা গরুর সংখ্যা। এখন অবশ্য সে সবই অতীত।

মুখ ঢেকে ক্যামেরার সামনে এক পাচারকারী বললেন, “এক একটা গরু পিছু পাচার করতে হাজার টাকা করে মিলত। একদম বাংলাদেশ বর্ডারে দিয়ে আসতাম। পুলিশেও ঘুষ খেত। পুলিশ বলে দিত দেখেশুনে যাও। যদি লোক থাকে তাহলে সিগন্যাল দিত। পটকা ফাটাত।” পাচারকারীদের কথাতেই স্পষ্ট, প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়েই পাচার হয়েছে লাখ লাখ গরু। কারবার হয়েছে কোটি কোটি টাকার। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, এত দিন সব দেখেও না দেখে ছিলেন সবাই।