Crime News: মোষের গাড়ির ভিতরও এই কাণ্ড? পুলিশ ধরতেই দে ছুট…
Birbhum News: পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুবরাজপুরের সালুঞ্চি গ্রাম থেকে সদাইপুর এলাকা হয়ে সিউড়ির দিকে যাচ্ছিল অবৈধ কয়লা বোঝাই ৬টি মোষের গাড়ি।
বীরভূম: বাঁশ আর চটে ঘেরা ছোট্ট গাড়ি। দুই চাকা, জোয়াল মোষের কাঁধে। দুলকি চালে এগিয়ে চলেছে গাড়ি। গাড়ির ভিতর বোঝাই করা বস্তা। উপরে খড় বিচুলি বিছানো। দেখে মনে হচ্ছে গবাদি পশুর খাবার বোঝাই। পর পর ৬টি গাড়ি। সন্দেহ হয় পুলিশের। ততক্ষণে গাড়ি রেখে পালিয়েছেন চালক-সহ অন্যরা। এরপরই গাড়ির উপর রাখা বিচুলি সরাতে হতবাক হয়ে যান পুলিশ কর্মীরা। ৬টি মোষের গাড়িতে টন টন কয়লা। শুক্রবার প্রায় ১২ টন অবৈধ কয়লা আটক করল সদাইপুর থানার (Birbhum Sadaipur) পুলিশ। এদিন ভোরের দিকে সদাইপুর থানার রেঙ্গুনি গ্রামের রাস্তায় ৬টি অবৈধ কয়লা বোঝাই মোষের গাড়ি আটক করে পুলিশ। ওই বিপুল কয়লা পাচারের জন্য় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলেই পুলিশের অনুমান। কিছুদিন আগে এই সদাইপুর থেকেই এরকম অবৈধ কয়লা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুবরাজপুরের সালুঞ্চি গ্রাম থেকে সদাইপুর এলাকা হয়ে সিউড়ির দিকে যাচ্ছিল অবৈধ কয়লা বোঝাই ৬টি মোষের গাড়ি। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সদাইপুর থানার ওসি মিকাইল মিঞার নেতৃত্বে বিরাট পুলিশবাহিনী অন্ধকারে রেঙ্গুনি গ্রামের রাস্তায় ওৎ পেতে ছিল। পুলিশ দেখে অবৈধ কয়লা বোঝাই মোষের গাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান চালকরা।
প্রসঙ্গত, এর আগেও বীরভূমের সদাইপুর থানার পুলিশ পাচার হওয়ার আগে প্রচুর পরিমাণ অবৈধ কয়লা আটক করেছে। বড় ট্রাক, ট্রাক্টর, পিকআপ ভ্যান, মোষের গাড়ি, এমনকী মোটর সাইকেলেও অবৈধ কয়লা পাচারের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। কখনও জাতীয় সড়ক, আবার কখনও গ্রামের রাস্তা বেছে নিয়েছে পাচারকারীরা। সদাইপুর থানার পুলিশ এর আগেও কখনও কয়লার উপর কাঠ চাপিয়ে, কখনও ইট ঢাকা দিয়ে, কখনও আবার বালি বা কার্টুন বক্সে করে কয়লা পাচারের চেষ্টা হয়েছে। সদাইপুর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
কয়লা পাচারকে কেন্দ্র করে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। একযোগে ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই ও ইডি। একাধিক গ্রেফতারিও হয়েছে। নজরে রাজ্যের একাধিক প্রভাবশালী। কার্যত হইচই চলছে এই তদন্ত ঘিরে। অথচ কয়লা পাচারের অভিযোগে কিন্তু রাশ পরানো যায়নি। উল্টে পাচারকারীদের অন্যতম করিডর হিসাবে পরিচিত বীরভূম জেলা ধরে পাচারের চেষ্টা চলছেই।
শুধু বীরভূম জেলারই সদাইপুর, রাজনগর ও মহম্মদবাজার থানা এলাকা মিলিয়ে মোট প্রায় ১৮ টন কয়লা উদ্ধার করেছে বীরভূম জেলা পুলিশ। একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বীরভূম জেলার রাজনগর এলাকার বড়া এলাকায় একটি ট্রাকে প্রায় ৪ টন কয়লা উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় গাড়ির মালিকের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয় পুলিশের তরফে।
অন্যদিকে মহম্মদবাজারে জাতীয় সড়কে একটি কয়লাবোঝাই লরি ধরে পুলিশ। ২ টনের বেশি কয়লা উদ্ধার হয় সেখান থেকে। এই ঘটনায় গাড়ির চালককে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানতে পেরেছে ইসিএলের কাছ থেকে অবৈধভাবে এই কয়লা কিনে মুর্শিদাবাদে পাচার করা হচ্ছিল। শুক্রবার ধৃতকে আদালতে তোলা হবে।