South Dinajpur: আশাকর্মীর চাকরির প্রলোভনে কুপ্রস্তাব, রাজি না হওয়ায় ধর্ষণের হুমকি, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

South Dinajpur: আশা কর্মীর চাকরির নামে কুপ্রস্তাব, রাজি না হয় মহিলাকে ধর্ষণের হুমকি তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে।

South Dinajpur: আশাকর্মীর চাকরির প্রলোভনে কুপ্রস্তাব, রাজি না হওয়ায় ধর্ষণের হুমকি, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 19, 2022 | 11:23 PM

তপন: আশা কর্মীর চাকরি দেওয়ার নাম করে দলীয় কর্মীর স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতার (Trinamool Leader) বিরুদ্ধে৷ নেতার কুপ্রস্তাবে রাজি না হাওয়ায় প্রথমে স্বামীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ৷ এমনকি পরে ওই মহিলাকে নানা ভাবে ভয় দেখানো হয়৷ বর্তমানে প্রাণ ভয়ে শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে রয়েছেন ওই মহিলা। এদিকে ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী দুজনেই তৃণমূল কর্মী বলে জানা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা৷ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর (South Dinajpur) জেলার তপন ব্লকের গোফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের হাঁসনগর এলাকায়। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা রেজাউল হক। এদিকে এই ঘটনায় সরব হয়েছে জেলা বিজেপি (BJP)। অন্যদিকে এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই বলে দাবি জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের। যদিও পুরো ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত।

জানা গিয়েছে, তপন ব্লকের গোফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের হাঁসনগর এলাকার বাসিন্দা রেজাউল হক এলাকায় তৃণমূল নেতা বলেই পরিচিত। জেলা তৃণমূলের তরফে প্রকাশিত তপন ব্লক তৃণমূল কমিটিতে নামও রয়েছে রেজাউলের। এই এলাকারই এক মহিলাকে ২৭ অক্টোবর রাতে ফোন করে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উঠেছে রেজাউল হকের বিরুদ্ধে। এমনকী তাঁর প্রস্তাব রাজি হলে তাঁকে আশা কর্মীর কাজ পাইয়ে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। প্রস্তাবে রাজি না পাওয়ায় মহিলার স্বামীকে কয়েকদিন আগে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এখনও আসছে লাগাতার হুমকি। ৭ তারিখ তপন থানায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন মহিলা। তবে অভিযোগ জানালেও খাতায় কলমে অভিযোগের কোনও প্রমাণপত্র তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে জানিয়য়েছেন ওই মহিলা। এরপরই শুক্রবার তিনি দ্বারস্থ হয়েছেন পুলিশের সুপারের কাছে। 

যদিও এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে জানান, এনিয়ে তিনি এখনও অভিযোগপত্র হাতে পাননি৷ হাতে পেলে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। এ বিষয়ে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার ঘাসফুল শিবিরের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা ভাষায় তোপ দেগে বলেন, এটি বর্তমানে তৃণমূলের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূল আজ এই কালচারেই অভ্যস্ত। তৃণমূল নেতা তারই দলের কর্মীর স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়। সেই কুপ্রস্তাব না মানায় তার স্বামীকে গ্রেফতার করিয়ে দেওয়া হয়৷ এই অরাজকতা শুধু দক্ষিণ দিনাজপুর নয় গোটা রাজ্য জুড়ে চালাচ্ছে তৃণমূল। 

ঘটনা প্রসঙ্গে ওই মহিলা বলেন, “আমার স্বামী বাড়িতে না থাকায় রাতে ফোন করে নানা কুপ্রস্তাব দেয়। বলে ওনার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করলে আশা কর্মীর চাকরি দেব। টাকা দেব। গোটা জীবনে কোনও অভাব অনটন হবে না। তৃণমূল নেতা রেজাউল এই কুপ্রস্তাব দিয়েছে। ওর প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমার স্বামীকে বিভিন্নভাবে ফাঁসিয়ে দিয়ে থানায় ধরিয়ে দিচ্ছে। ধর্ষণ করার হুমকিও দিয়েছে। আমার স্বামী এখন বাড়িতে আছে। পুলিশ ওকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। এখন ছেড়েছে। আমি ভয়ে বাবার বাড়িতে আছি। আমি প্রথম তপন থানায় গিয়েছিলাম। কিন্ত, অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও রিসিপ্ট দেওয়া হয়নি। সে কারণেই এসপি-র কাছে অভিযোগ জানিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে চাইছি। আমরা কিন্তু তৃণমূলেই ছিলাম।” ফোনে কুপ্রস্তাব দেওয়ার কল রেকর্ডিংও তাঁর কাছে আছে বলে জানিয়েছেন ওই মহিলা। 

তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর সুভাষ চাকি বলেন, “তপনের বিষয়টি জেলা নেতৃত্বের কাছে খবরটি নজরে আসছে৷ দল পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এনিয়ে পুলিশেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যার ফলে পুলিশ ও পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। তবে এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনো ব্যাপার নেই।” অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা রেজাউল হক বলেন, “আমি ওই মহিলাকে চিনি না। আমি রাজনীতির মধ্যে আছি। সম্মানহানি করার জন্যই হয়তো এটা করছে।”