Balurghat: ক্লাস চলাকালীন আচমকা সিলিং ফ্যান ভেঙে পড়ল ক্লাস ওয়ানের ছাত্রীর মাথায়

Balurghat: জানা গিয়েছে, আহত শিশুর নাম বাসন্তী বর্মণ। বয়স পাঁচ বছর এক মাস। সে সবেমাত্র স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে।

Balurghat: ক্লাস চলাকালীন আচমকা সিলিং ফ্যান ভেঙে পড়ল ক্লাস ওয়ানের ছাত্রীর মাথায়
আহত শিশু (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 05, 2022 | 8:25 PM

তপন: প্রতিদিনের মতোই স্কুলে গিয়েছিল বছর পাঁচের মেয়েটা। চলছিল ক্লাস। হঠাৎ খুলে পড়ল ক্লাসঘরের মধ্যে থাকা সিলিং। সোজা এসে পড়ল শিশুটির মাথায়।

মঙ্গলবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের চামটাগুড়ি এলাকার তপন পূর্ব চক্র পাতকোলা এফপি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মাথায় সিলিং ফ্যান পড়ে জখম এক প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। গুরুতর ওই খুদের মাথায় দু’টি সেলাই পড়েছে বলে খবর। বর্তমানে শিশুটি বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

এ দিকে, ওই ঘটনার পর স্কুলে আরও একটি ফ্যান খুলে পড়েছে খবর। যদিও দ্বিতীয় ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে কেউ আহত হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় স্কুলের ভেতরে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি স্কুল খোলার পরেও কেন ওই ফ্যানগুলি সারাই করা হয়নি? তা নিয়ে স্কুলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলছেন আহত ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা।

জানা গিয়েছে, আহত শিশুর নাম বাসন্তী বর্মণ। বয়স পাঁচ বছর এক মাস। সে সবেমাত্র স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। এখনও ভর্তি প্রক্রিয়া পুরোপুরি সম্পূর্ণ হয়নি। এ দিকে, ওই স্কুলে প্রথম থেকে চতুর্থ প্রায় ১০০ জন পড়ুয়া রয়েছে। মঙ্গলবার প্রথম শ্রেণির ওই ক্লাসরুমের হঠাৎ ফ্যান ভেঙে সোজা ওই পুড়ুয়ার মাথায় আঘাত লাগে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাতে না পাঠাতে তৃতীয় শ্রেণির ক্লাসরুমেরও ফ্যান ভেঙে পড়ে। জানা গিয়েছে, ওই স্কুলের ছাদ একেবারেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে ওই ফ্যানের হুক গুলি নড়েবড়ে রয়েছে। আর তা দেখার মত কেউ না থাকায় এই ধরনের বড় বিপদের ঝুঁকি বাড়ছে।

প্রসঙ্গত, স্কুল শিক্ষা দফতর আগেই স্কুলের নিরাপত্তা ভালভাবে খতিয়ে দেখার জন্য নোটিস দিলেও কীভাবে ওই বড় দুর্ঘটনা ঘটল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এখানে স্কুলের উদাসীনতাকেই দায়ি করছে ওয়াকিবহাল মহল।

এ দিকে, এই ঘটনার খবর পেয়ে বালুরঘাট জেলা সদর হাসপাতালে ওই ছাত্রীকে দেখতে আসেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সন্তোষ হাঁসদা। জানা গিয়েছে, শিক্ষা দফতরের তরফে আগেই স্কুলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। তার পরেও এমন গাফিলতি কেন? তা নিয়ে পুরো ঘটনাটির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন চেয়ারম্যান। সন্তোষবাবু বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ওই শিশুকে দেখতে এসেছিলাম। স্কুল খোলার আগেই আমি জেলার সমস্ত স্কুলকে নোটিস পাঠিয়েছিলাম। স্কুলের পানীয় জল, শৌচাগার, বসার জায়গা থেকে শুরু করে সমস্ত পরিকাঠামো দেখে নেওয়ার জন্য জানিয়েছিলাম। এরপরেও কীভাবে এই দুর্ঘটনায় ঘটল। এটা কোনওভাবেই আপোস করা যাবে না। পুরো বিষয়টির তদন্ত করা হবে। যাতে আগামীতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে।’

শিশুর মা দিপিকা বর্মণ বলেন, ‘আমার মেয়ের মাথায় দু’টি সেলাই পড়েছে। যার ফলে এখন মেয়েকে নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।’ অন্যদিকে ওই শিশুর পিসি নন্দরানী বর্মণ বলেন, ‘স্কুলের এই হাল হলে আমরা বাচ্চাদের কীভাবে স্কুলে কিভাবে পাঠাব। আজকে একটা ফ্যান ভেঙে পড়ার কিছুক্ষণ পরে আরও একটি ফ্যান ভেঙে পড়েছে। তাই এই বিষয়গুলি স্কুলের দেখা উচিত। তা না হলে আজকে আমাদের শিশু আহত হয়েছে। আগামীতে অন্য শিশু হবে। ‘

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শুভব্রত দাস বলেন, ‘আমি অসুস্থ থাকার কারণে কিছুদিন ধরে ছুটিতে রয়েছি। পুরোপুরি জানা নেই। তবে এই বিষয়টি অন্য শিক্ষকদের কাছে জানতে পেরেছি। ওই শিশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফ্যানগুলি কী অবস্থায় রয়েছে। তা খতিয়ে দেখা হবে। এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে তা দেখা হবে।’