Cow Smuggling: দক্ষিণ দিনাজপুরের সীমান্ত দিয়েও এক কালে পাচার হত গরু, তদন্তের দাবি তুলল বিরোধীরা
South Dinajpur: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তিনদিকে বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। জেলায় মোট ২৫২ কিলোমিটার বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে।
বালুরঘাট: এক সময় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সীমান্ত ব্যবহার করেও হত গরুপাচার। পাচারকারীরা গরু পাচারের অন্যতম করিডর হিসেবে ব্যবহার করত এই জেলাকে। তাই দক্ষিণ দিনাজপুরেও গরু পাচারের তদন্ত হওয়া উচিত। এমনই দাবি তুললেন সে জেলার বাম এবং বিজেপি নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, মূলত শীতকালেই সব থেকে বেশি গরুপাচার হত। এর অন্যতম কারণ কুয়াশা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তিনদিকে বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। জেলায় মোট ২৫২ কিলোমিটার বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। যার মধ্যে এখনো ৩০ কিলোমিটারও বেশি সীমান্ত উন্মুক্ত। আর পাচারকারীরা এই উন্মুক্ত সীমান্তের মাধ্যমেই গরুপাচার করত বলে অভিযোগ বিরোধীদের। হিলি সীমান্ত এলাকা দিয়েই সব থেকে বেশি গরু বাংলাদেশে পাচার হত বলে অভিযোগ।
গরুপাচারে বাধা দেওয়ায় বিএসএফ জওয়ানদের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাত পাচারকারীরা। নিজেদের আত্মরক্ষায় বেশ কয়েকবার গুলি চালিয়েছিল বিএসএফ। সেই গুলিতে একাধিক পাচারকারীর মৃত্যুও হয়েছিল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। তবে বিগত পাঁচ-ছয় বছর থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় সে ভাবে গরু পাচার হয় না বললেই চলে। এর প্রধান কারণ পুলিশের বাড়তি নজরদারি এবং সীমান্তে বিএসএফ-এর কড়া প্রহরা।
বর্তমানে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় গরুপাচার এবং অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতার নিয়ে। এই সময়ই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা সরব হয়েছেন সে জেলার গরুপাচারের ঘটনার তদন্ত নিয়ে। তাঁদের দাবি, জেলায় তদন্ত হলে অনুব্রত মণ্ডলের মতো জেলার বহু প্রভাবশালীর নাম উঠে আসবে। নেতা মন্ত্রীদে নামও উঠে আসবে বলে দাবি বাম ও বিজেপির।
এ বিষয়ে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি মানস সরকার বলেছেন, “সকলেই জানে এক সময় দক্ষিণ দিনাজপুর গরু পাচারের অন্যতম করিডর ছিল। হিলি দিয়ে হাজার হাজার গরু পার হত বাংলাদেশে৷ এর তদন্ত হলে অনুব্রত মন্ডলের মতো জেলার একাধিক প্রভাবশালী নেতার নাম উঠে আসতে পারে।” আরএসপি নেতা প্রলয় ঘোষ বলেন, “টিভি নাইন বাংলা যে ভাবে গরু পাচারের বিষয়টি তুলে ধরছে, সেই জায়গা থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতেও গরু পাচারের তদন্ত হওয়া উচিত। তাহলে একাধিক রাঘববোয়ালদের নাম উঠে আসবে তদন্তে। কারণ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতেও এক সময় প্রচুর গরু পাচার হত।”
তৃণমূল জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার বলেছেন, “গরুর তো আর পাখা নেই, যে উড়ে উড়ে বর্ডারে গিয়ে পাচার হয়ে যাচ্ছে। সীমান্তে তো প্রহরায় থাকে কেন্দ্রীয় বাহিনী অর্থাৎ বিএসএফ। আর বিএসএফকে নিয়ন্ত্রণ করে স্বরাষ্ট্র দফতর। যার মন্ত্রী অমিত শাহ। শুধুমাত্র এক দুজন নেতার নাম জড়িয়ে দিলেই হবে না। গরু পাচার-সহ যত অসামাজিক কার্যকলাপ সীমান্তে হয় তার মদত দিল্লি থেকে আসে। এই সব ক্ষেত্রে সরাসরি দিল্লী যুক্ত রয়েছে।”
এ বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে বলেছেন, “বর্তমানে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় গরুপাচার একদম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে জেলা জুড়ে।”