জ্বর-আতঙ্ক ছিলই, এবার সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রকোপ! শিলিগুড়িতে শিশুদের মধ্যে নয়া আতঙ্ক
Siliguri: তবে শিলিগুড়িতে জ্বর-আতঙ্ক অব্যাহত। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আউটডোরে ভিড় রয়েছে মা ও শিশুদের।
শিলিগুড়ি: শিশুদের জ্বর (Viral Fever) আতঙ্ক, বাড়ছে বিপদ। তার ওপর আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠল ডেঙ্গুর (Dengue) প্রকোপ। উত্তরবঙ্গে (North Bengal) আবারও বেআব্রু শিশু চিকিত্সা পরিষেবা।
শিলিগুড়িতে জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হল বেশ কয়েকটি শিশু। এই মুহুর্তে জেলা হাসপাতালে ৮৪ জন শিশুর চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৫ শিশু।
তবে শিলিগুড়িতে জ্বর-আতঙ্ক অব্যাহত। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আউটডোরে ভিড় রয়েছে মা ও শিশুদের। সর্দি, কাশি, প্রবল জ্বর ও বমির উপসর্গ নিয়ে বাচ্চারা আসছে জেলা হাসপাতালে। শিশু বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক সুবির ভৌমিক অবশ্য এ নিয়ে কিছুই বলতে চান নি। তিনি বলেন, “এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলব না। যা জানার স্বাস্থ্য ভবন থেকে জেনে নিন।”
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৪২ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। নতুন করে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। তবে শিলিগুড়ি-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাচ্চাদের ভিড় বাড়ছে সেখানেও। গুরুতর অসুস্থ না হলে কাউকেই ভর্তি নেওয়া হবে না বলে মৌখিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি, “আমরা ভাইরাসকে চিনতে পারছি না। অন্য বছরগুলিতে অক্টোবর মাসে ঠান্ডা পড়লে কিছু জ্বর সর্দি কাশি বাচ্চাদের হতো। কিন্তু এবার তা সেপ্টেম্বরেই হচ্ছে। হুহু করে প্লেটলেট ও রক্তের শ্বেত রক্তকণিকা কমে যাচ্ছে। এর জেরেই দুর্বল হয়ে পড়ছে শিশুরা।”
শিশুদের প্রত্যেকটি উপসর্গ নিয়ে চিকিত্সকরা সচেতন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি নার্সিংহোম গুলিতেও ভিড় উপচে পড়ছে। সরকারি চিকিৎসকেরা এ নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে প্রাক্তন সরকারি হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষঞ্জ চিকিৎসক সুবল দত্ত বলেন, “প্রচন্ড ছোঁয়াচে ভাইরাস। আমরাও আক্রান্ত হয়ে পড়ছি। পুষ্টির অভাবে থাকলে জ্বরে আক্রান্ত বাচ্চাদের অর্গান ফেলিওর হচ্ছে। দ্রুত কমছে প্লেটলেট। আমরা চিকিৎসা চালাচ্ছি।”
একই ছবি ধূপগুড়ি হাসপাতালের ক্ষেত্রেও ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত ৪ জন শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে ধূপগুড়ি হাসপাতালে। প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন শিশুকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর পরিবারের সদস্যরা নিয়ে চলে গিয়েছেন। করোনার আতঙ্কে অধিকাংশ পরিবার শিশুদের হাসপাতলে ভর্তি রাখতে চাইছেন না।
কিন্তু যে সমস্ত শিশুদের অবস্থা আশঙ্কাজনক, তাদের ভর্তি রাখা হয়েছে স্থানীয় হাসপাতালে। অনেকক্ষেত্রে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আক্রান্তের তথ্য ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সূত্র বলছে, জলপাইগুড়ি হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছে তিনশোর বেশি শিশু। মালবাজারে হাসপাতালে ভর্তি ৮০ শিশু। দার্জিলিঙ, কালিম্পঙে তেমনভাবে শিশু আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলেনি। তবে জ্বরে বেআব্রু হচ্ছে উত্তরবঙ্গে শিশু চিকিত্সা। একাধিক জেলায় রয়েছে শয্যার অভাব। ১২-১৪ দিনেও জানা গেল না জ্বরের কারণ।