সুর বদলাচ্ছেন দীনেশ, ৪৮ ঘণ্টা আগের টুইটেই মিলেছিল ইঙ্গিত

দীনেশের মুখে মোদীর প্রশংসা অবশ্য প্রথমবার নয়

সুর বদলাচ্ছেন দীনেশ, ৪৮ ঘণ্টা আগের টুইটেই মিলেছিল ইঙ্গিত
মোদী সরকারের ভূয়সী প্রশংসা দীনেশ ত্রিবেদীর মুখে
Follow Us:
| Updated on: Feb 12, 2021 | 4:46 PM

কলকাতা: ভোটের মুখে বাংলার রাজনীতিতে একটা শব্দ বারবার শিরোনামে এসেছে, ‘বেসুরো।’ শুভেন্দু-রাজীব-বৈশালী সবাই ছিলেন সে ‘বেসুরো’-দের দলে। কিন্তু দীনেশ ত্রিবেদীকে সেই দলে ফেলা যাবে না। কারণ এই সাংসদের সুর বদলের বীজ অনেক আগেই বপণ হয়েছিল।

২০১২ সালেই সূত্রপাত। মনমোহন সিং সরকারের মন্ত্রিসভার রেলমন্ত্রী ছিলেন তিনি। দলের এবং দলনেত্রীর মতের বিপক্ষে গিয়ে রেল ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। আর তাতেই পড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোষের মুখে। রেলমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয় তাঁকে। বদলে মুকুল রায়কে রেলমন্ত্রী করেন মমতা। তারপর জল গড়িয়েছে অনেক। দলনেত্রীর সুনজরে থাকা সেই মুকুল রায়ই শিবির বদল করে ফেলেছেন বছর কয়েক আগে। অথচ রাজনৈতিক মহলের গুঞ্জন সত্ত্বেও তৃণমূলেই থেকে গিয়েছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী।

আরও পড়ুন: বনধের সকালে সল্টলেকে চিকিৎসকের বাড়ির ছাদের রেলিংয়ে ঝুলছেন যুবক!

বিজেপির সঙ্গে তাঁর গোপন যোগাযোগের কথা নিয়ে আলোচনাও হয়েছে বিস্তর। এত বছর ধরে সামনের সারিতে আর দেখা যেত না তাঁকে। তবে বুধবারের একটা টুইটেই তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে সময় আসন্ন। রাজীব-শুভেন্দুদের মত তাঁর দলবদলের ইঙ্গিত নিয়ে চর্চা হয়নি তেমন। কারণ দলের বিরুদ্ধে সরাসরি মুখ খুলতে কমই দেখা গিয়েছে তাঁকে। অথচ শুক্রবারের বনধের বাংলায় রাজনীতির বড় চমকটা দিলেন তিনিই। রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন তিনি। তারপরই অনেকের চোখে পড়ে ৪৮ ঘণ্টা আগের সেই টুইট।

মোদীর বক্তব্যের ভিডিও পোস্ট করে টুইট করেন দীনেশ ত্রিবেদী

গত ১০ ফেব্রুয়ারি, বুধবার লোকসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘দেশের উন্নয়নে সরকারি দফতরের যেমন গুরুত্ব আছে, বেসরকারি বা প্রাইভেট সেক্টরের গুরুত্বও ততটাই। বেসরকারি সংস্থা মোবাইল তৈরি করে বলেই গরিব মানুষের কাছেও আজ মোবাইল পৌঁছে গিয়েছে। টেলিকমে প্রাইভেট সেক্টরের ভূমিকার জন্যই এত সস্তায় ডেটা পাচ্ছেন দেশের মানুষ।’ এই বেসরকারিকরণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন উচ্চ কণ্ঠে বিরোধিতা করছেন, তখন মোদীর বক্তব্যকে সমর্থন করে টুইট করেন দীনেশ ত্রিবেদী। মুখ্যমন্ত্রী যখন প্রচারে গিয়ে বলছেন,’দেশটাকে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।’ দীনেশ ত্রিবেদী তখন মোদীর সেই বক্তব্যের ভিডিও পোস্ট করে লিখছেন, ‘আমি এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত।’

অর্থাৎ সুর বদলের ছবি বুধবারই ধরা পড়েছিল। কিন্তু চর্চায় আসেনি সেভাবে। তবে কি দলবিরোধী মত পোষণ করে ভিতরে ভিতরে দলের রোষের মুখে পড়েছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী? প্রশ্ন  উঠছে রাজনৈতিক মহলে।

মোদীর প্রশংসা অবশ্য প্রথমবার করলেন না দীনেশ ত্রিবেদী। ২০১৫ তে গুজরাতের কচ্ছ জেলার মাণ্ডবীতে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করে এসেছিলেন তিনি। মোদীর বড়ভাই সোমভাই মোদীর সঙ্গে একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, নতুন প্রধানমন্ত্রী দেশের ভাবমূর্তি বদলে দিয়েছেন। মোদী সরকারকে সমর্থন করাই এখন ‘বুদ্ধিমানের কাজ’। সেইসময়ও দীনেশকে নিয়ে রাজনৈতিক গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল।