
হুগলি: তখনও দেশ স্বাধীন হয়নি। প্রিয়বালা কুণ্ডু তখন পূর্ববঙ্গ তথা আজকের বাংলাদেশের বাসিন্দা। ১৯২৩ সালে জন্ম তাঁর। এরপর কেটে গিয়েছে একটা বিরাট সময়। উত্থান-পতন সবই দেখেছেন তিনি। দেখেছেন জাতীয়তাবোধ, দেখেছেন সামাজিক পতন। দেখেছেন মানবিকতার রাজনীতি, দেখেছেন হানাহানির রাজনীতি। যুগ বদলেছে, সময় বদলেছে, কিন্তু বদলাননি প্রিয়বালা। তিনি আর পূর্ববঙ্গের বাসিন্দা নন। এখন চুঁচুড়ার কপিডাঙ্গাই তাঁর স্থায়ী ঠিকানা। শনিবার তাঁর বাড়িতেই এসেছিল বিএলও।
রাজ্যজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জনের কাজ। বাড়ি-বাড়ি ঘুরছেন বিএলও-রা। তাঁদের কাঁধে এখন বড় দায়িত্ব। ভোটার তালিকার ‘শুদ্ধিকরণের’ প্রথম ধাপটা এই বিএলও-দেরই সপে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই সূত্র ধরেই শনিবার সংশ্লিষ্ট বুথের বিএলও গুলনাহার খাতুন গিয়েছিলেন ১০৩ বছর বয়সী বৃদ্ধা প্রিয়বালা কুণ্ডুর বাড়িতে। তিনি এখন খুব একটা হাঁটাচলা করতে পারেন না। বাড়িতেই থাকেন। শেষ লোকসভা ভোটও দিয়েছেন বাড়ি বসেই। এবার এসআইআর-এর ফর্ম পেলেন বাড়ি বসেই।
এদিন বিএলও গুলনাহার খাতুন বলেন, ‘আমি সত্যিই ওনাকে দেখে খুব খুশি। আমার খুব ভাল লাগছে। উনি এই বয়সেও কিছুটা হলেও সচল। আমি চাই উনি আরও দীর্ঘজীবী হোক। সুস্থ থাকুক।’ ২০০২ সালের সংশোধিত তালিকায় নাম রয়েছে বৃদ্ধা প্রিয়বালার। এদিন তিনি জানিয়েছেন, পূর্ববঙ্গ থেকে আসার খড়দহে উঠেছিলেন প্রিয়বালা। তখন ছোট সংসার। এখন তা বড় হয়েছে। খড়দহ থেকে পরবর্তীকালে চুঁচুড়ায় চলে আসেন তাঁরা। এখন সেখানেই নিজের ছেলে-বৌমা, নাতি-নাতনিকে নিয়ে থাকেন তিনি। বিএলও মারফৎ জানা গিয়েছে, মাঝে কয়েক বছর ভোট না দেওয়ায় না নাম কাটা গিয়েছিল তাঁর। কিন্তু গতবছরের ভোটার তালিকায় ফের নাম ওঠে প্রিয়বালার।
এদিন বৃদ্ধের নাতি অজয় কুণ্ডু বলেন, ‘বয়সের কারণে উনি কম শোনেন। কিন্তু ভোট নিয়ে জ্ঞান একেবারে তাজা। এটা যে এসআইআর-এর ফর্ম তা তিনি বুঝতে পারেননি। ভোটের কাগজ ভেবেছেন, হাতেও তুলে নিয়েছেন।’