Khanakul School : ছাত্র যেখানে ‘শিক্ষক’

Khanakul School : ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি মিলিয়ে মোট ১০৬ জন পড়ুয়া স্কুলে। তিন জন শিক্ষকের মধ্যে কোনও এক জন ছুটি নিলেই পড়াশোনায় অসুবিধা হয়। তখন পড়ুয়াদেরই ক্লাস নিতে হয়।

Khanakul School : ছাত্র যেখানে 'শিক্ষক'
স্কুলে শিক্ষক রয়েছেন তিন জন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 11, 2022 | 6:14 PM

হুগলি : বেঞ্চে বসে পড়ুয়ারা। ব্ল্যাক বোর্ডে এক পড়ুয়া কিছু লিখে তাদের বোঝাচ্ছে। ক্লাসে উঁকি দিয়ে দেখা গেল, ভিতরে কোনও শিক্ষক নেই। ওই ছাত্রই বাকিদের পড়া বোঝাচ্ছে। জানা গেল, শিক্ষকের অভাবে অনেক সময় ছাত্ররাই শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে। এভাবেই চলছে হুগলির খানাকুলের পূর্ব কাবিলপুর জুনিয়র হাইস্কুল। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস রয়েছে এই স্কুলে। পড়ুয়ার সংখ্যা ১০৬ জন। শিক্ষক রয়েছেন ৩ জন। স্কুলে কোনও গ্রুপ ডি কর্মী নেই।

খানাকুল ১ নম্বর ব্লকের পূর্ব কাবিলপুর গ্রাম। ২০১০ সালে জুনিয়র এই হাইস্কুল চালু হয়। সেই সময় স্কুলে চার জন শিক্ষক ছিলেন। পরে উৎসশ্রী পোর্টালে আবেদনের ভিত্তিতে এক জন শিক্ষক বদলি হয়ে চলে যান। তার পর থেকে আর কোনও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি স্কুলে।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সোমনাথ দাস বলেন, “৫ জন শিক্ষকের অনুমোদন রয়েছে স্কুলে। আর গ্রুপ ডি কর্মী একজন থাকার কথা। কিন্তু, বর্তমানে স্কুলে কোনও গ্রুপ ডি কর্মী নেই। আর বায়ো সায়েন্স ও বাংলা শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে।” স্কুলে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগের আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি মিলিয়ে মোট ১০৬ জন পড়ুয়া স্কুলে। তিন জন শিক্ষকের মধ্যে কোনও এক জন ছুটি নিলেই পড়াশোনায় অসুবিধা হয়। তখন পড়ুয়াদেরই ক্লাস নিতে হয়। অষ্টম শ্রেণির ক্ষেত্রে ওই ক্লাসেরই পড়ুয়া ক্লাসে পড়ায়। আর সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাস নেয়। আর অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া সপ্তম শ্রেণির ক্লাসে পড়ায়। স্কুলের ছাত্র অজয় পোড়েল ও অভিজিৎ সর্দার জানাল, “নিচু ক্লাসের ভাই বোনেদের যাতে ক্লাস অফ না যায়, তাই আমরাই পালা করে ক্লাস নেই।” কিন্তু এই ভাবে কতদিন চলবে ? পড়ুয়াদের বক্তব্য, “আমরা চাই অবিলম্বে শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ করা হোক।”

Hooghly

ক্লাস নিচ্ছে এক পড়ুয়া

২০১০ সালে স্কুলটি চালু হওয়ার পর গ্রামবাসীরা খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু, স্কুলের বর্তমান অবস্থায় উদ্বিগ্ন তাঁরা। অভিভাবক সমর সর্দার, সন্ন্যাসী পোড়েলরা বলেন, “গ্রামে বিদ্যালয় স্থাপন হওয়ায় খুব আনন্দ হয়েছিল। কিন্তু এ রকম চলতে থাকলে হয়ত শিক্ষক শূন্য হয়ে পড়বে স্কুলটি। তখন ছাত্রদের কী হবে?” তবে শিক্ষকের অভাবে ক্লাস বন্ধ না করে পড়ুয়াদের দিয়ে ক্লাস করানোর পদক্ষেপের প্রশংসা করলেন তাঁরা। বললেন, ক্লাস নেওয়ার জন্য পড়ুয়াদের ভাল করে পড়াশোনা করতে হয়। এতে তাদের উপকার হচ্ছে।

এই নিয়ে হুগলি ডিআই তপন কুমার বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি জানতেন না। সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকেই জানলেন। আগামী দিনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।