Hooghly : ঠিকানা ভুলেছেন বৃদ্ধা, গত ২ মাস ধরে ‘ঘর’ উত্তরপাড়া স্টেশন

Hooghly : মাস দুয়েক আগে রেখাদেবীকে ওই প্ল্যাটফর্মে দেখেন দোকানদাররা। কোথায় বাড়ি, পরিবারে আর কে আছে, কিছুই বলতে পারেননি। শুধু নিজের নামটুকু বলেন।

Hooghly : ঠিকানা ভুলেছেন বৃদ্ধা, গত ২ মাস ধরে 'ঘর' উত্তরপাড়া স্টেশন
গত ২ মাস প্ল্যাটফর্মই ঠিকানা রেখা চক্রবর্তীর
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 04, 2022 | 5:55 PM

উত্তরপাড়া : নিজের নামটা মনে আছে। রেখা চক্রবর্তী। বারবার জিজ্ঞাসা করলে বলছেন, লম্বা মতো একটা ছেলে তাঁকে স্টেশনে নামিয়ে দিয়ে গিয়েছে। আর কিছু মনে করতে পারছেন না। গত ২ মাস ধরে উত্তরপাড়া স্টেশনের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মই বৃদ্ধার আস্তানা। নিত্যযাত্রীরা তাঁকে প্রায়ই তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মের বেঞ্চে শুয়ে থাকতে দেখেছেন। তেমনই কয়েকদিন দেখার পর বৃদ্ধার কাছে এগিয়ে যান উত্তরপাড়া মাখলার বাসিন্দা দেবাশিস মজুমদার। বৃদ্ধার কথা শুনে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ছবি দিয়েছেন। তাঁকে আর্থিক সাহায্যও করেন। বৃদ্ধার এই অবস্থার কথা শুনেছেন উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব। তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

মাস দুয়েক আগে রেখাদেবীকে ওই প্ল্যাটফর্মে দেখেন দোকানদাররা। কোথায় বাড়ি, পরিবারে আর কে আছে, কিছুই বলতে পারেননি। শুধু নিজের নামটুকু বলেন। প্রথমদিকে, দোকানদারদের কাছে চেয়ে খেতেন। রাতে ঘুমোন প্ল্যাটফর্মে। দেবাশিসবাবু কয়েকদিন অফিস থেকে বাড়ি ফেরার সময় স্টেশনে ওই বৃ্দ্ধাকে দেখেন। একদিন কাছে যান। তখন বৃদ্ধা তাঁকে বলেন, লম্বা মতো একটা ছেলে তাঁকে স্টেশনে রেখে গিয়েছে। মশার কামড়ে রাতে ঘুম হয় না। খেতেও পান না ঠিকমতো। খুব কষ্ট হয় তাঁর। দেবাশিসবাবু তাঁকে কিছু টাকা দেন। ওষুধ কিনে দেন।

টাকা নিতে চাননি রেখাদেবী। দেবাশিসবাবুকে তিনি অনুরোধ করেন, তাঁর জন্য যদি একটা আশ্রয় ঠিক করে দেওয়া হয়, খুব ভাল হয়। দেবাশিস বাবু বৃদ্ধার ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে দিয়ে তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি প্রশাসনের কাছেও সাহায্যের আবেদন জানান।

দেবাশিস বাবু বলেন, “বৃদ্ধাকে দেখে মনে হয় ভাল পরিবারের। কোনও কারণে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে আসতে বাধ্য হয়েছেন। অনেক সরকারি হোম আছে। কোনও ভাবে উদ্যোগ নিয়ে যদি বৃদ্ধার একটা ব্যবস্থা করা যেত ভাল হত।” বৃদ্ধার কথা শুনেছেন উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব। তিনি জানান, মহকুমা শাসক, পুরসভা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দেখে তাঁর পরিবার খোঁজ করবেন কি না, রেখাদেবী জানেন না। কিন্তু, তাঁর আশা, একটা আশ্রয় মিলবে। এই আশাতেই প্ল্যাটফর্মের বেঞ্চে বসে দিন গুনছেন তিনি।