Pneumonia: প্রাণঘাতী জ্বর-নিউমোনিয়ায় কাবু বাংলা, এরই মধ্যে সুখবর শোনাল হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর
Pneumococcal Vaccination: প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ শিশু প্রাণ হারায় নিউমোনিয়ায়। ২০১৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রে ৫ বছরের কম বয়স যে সমস্ত শিশুর, তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর প্রায় ১৫ শতাংশ এই সংক্রমণে।
হাওড়া: গত মাসেই রাজ্যের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল নিউমোনিয়ার (Pneumonia) সঙ্গে লড়াই করতে শিশুদের বিনামূল্যে টিকা (Pneumococcal Vaccination) দেবে রাজ্য। সদ্যোজাত থেকে ১ বছরের শিশুদের বিনামূল্যে নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন (পিসিভি) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এর পর একমাসও ঘোরেনি গোটা রাজ্যে শিশুদের জ্বরের প্রকোপ হু হু করে বাড়ছে। এরই মধ্যে নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রশিক্ষণ শুরু করে নজির তৈরি করল হাওড়া।
শিশুদের নিউমোনিয়া, রক্ত ও ফুসফুসের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে রাজ্য সরকারের তরফে নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন বা পিসিভি টিকা চালু করা হচ্ছে। এই ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্যই এবার হাওড়া জেলার স্বাস্থ্য কর্মীদের বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হল। সোমবার হাওড়ার কোণা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই প্রশিক্ষণ হয়।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই চন্দ্র মণ্ডল জানালেন, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই শিশুদের নিয়মিত টিকাকরণের মধ্যে নিউমোকক্কাল চলে আসবে। আগামী মাসের ৭ তারিখ থেকেই হাওড়া জেলায় সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে এই ভ্যাকসিন দেওয়া চালু হবে। শিশুদের দেড় মাস, সাড়ে ৩ মাস ও ৯ মাসে এই ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ় দেওয়া হবে। বেসরকারি জায়গায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ করে এই ভ্যাকসিন নিতে হয়। সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে অন্য ভ্যাকসিনের মতোই বিনামূল্যে দেওয়া হবে তা।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, শিশুদের নিউমোনিয়া বা রক্ত, ফুসফুসের সংক্রমণের মতো রোগ প্রতিরোধ করতেই এই ভ্যাকসিন রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া হচ্ছে। এই রোগে অনেক শিশুর প্রাণহানি হয়। তা ঠেকাতেই এই উদ্যোগ রাজ্য সরকারের। হাওড়া জেলায় ব্লকস্তর থেকে ধীরে ধীরে জেলাস্তরে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
কেন্দ্রের ‘ইউনিভার্সাল ইমিউনাইজেশন প্রোগ্রাম’-এ নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন বা পিসিভির তিন ডোজ়ের কথা বলা হয়েছে। যদিও চারটে ডোজ় দিতে হয়। কিন্তু সেটা পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে ছোট আকারে কয়েকটি জায়গায় দেওয়া হচ্ছে। সবার জন্য দেওয়া হয় না। পশ্চিমবঙ্গে সরকারি ভ্যাকসিনেশন সেন্টারগুলি থেকে বাচ্চারা নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন পায় না। ফলে ওদের প্রাইভেট হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে গিয়ে নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন নিতে হয়। ফলে নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন নেওয়ার হার খুবই কম। যার জেরে ইনভেসিভ নিউমোকক্কাল ডিজিজ (IPD) হয়।
প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ শিশু প্রাণ হারায় নিউমোনিয়ায়। ২০১৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রে ৫ বছরের কম বয়স যে সমস্ত শিশুর, তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর প্রায় ১৫ শতাংশ এই সংক্রমণে। গত কয়েকদিনে শিশুদের মধ্যে যে জ্বরের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে, সেখানে অনেকেরই শরীরে নিউমোনিয়াও ধরা পড়েছে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, এই মুহূর্তে শিশুদের জন্য এই নিউমোনিয়া কত বড় হুমকি! সেখানে নিউমোকক্কাল টিকা দেওয়া শুরু হলে নিঃসন্দেহে তা একটা আলাদা রক্ষা কবচের কাজ করবে।
আরও পড়ুন: Kolkata Rain: এক রাতের বৃষ্টিতেই ভেসে যায় কলকাতা! মুক্তির পথও রয়েছে, বলছেন নগরায়ন বিশেষজ্ঞরা