Bikaner-Guwahati Express Train Accident: ময়নাগুড়ি রেল দুর্ঘটনায় আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির
Maynaguri Rail Accident: শনিবার দুপুরে একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল নিয়ে হাসপাতালে আসেন সেফটি কমিশনার। দুর্ঘটনায় আহতদের খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি তিনি তাঁদের বয়ানও নথিভুক্ত করেন
জলপাইগুড়ি: ৪৮ ঘণ্টা কাটেনি। তার আগেই ময়নাগুড়ি রেল দুর্ঘটনায় (Bikaner-Guwahati Express Train Accident) আহতদের দেখতে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এলেন কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি লতিফ খান। শনিবারই আহতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। চলে জিজ্ঞাসাবাদও। বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় তদন্তে কোনও ফাঁক থাকবে না এ কথা আগেই জানিয়েছিল রেল দফতর। এ বার, সেই মোতাবেক, আহতদের দেখতে হাসপাতালে এলেন কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি।
শনিবার দুপুরে একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল নিয়ে হাসপাতালে আসেন সেফটি কমিশনার। দুর্ঘটনায় আহতদের খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি তিনি তাঁদের বয়ানও নথিভুক্ত করেন। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে লতিফ বলেন, “আহতদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। দুর্ঘটনার মুহূর্তে তাঁরা কী কোনও বিশেষ অবস্থার সম্মুখীন তাঁরা হয়েছিলেন কি না বা তাঁরা কীভাবে প্রাণে বাঁচলেন এই সব কিছু খতিয়ে দেখা হয়েছে।” এছাড়া লতিফের আরও সংযোজন, “ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। সময়মতো বিস্তারিত জানানো হবে। যাঁরা আহত তাঁদের সকলকেই নির্ধারিত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।”
শনিবারই আলিপুরদুয়ার ডিভিশনাল রেলওয়ের ম্যানেজারের কার্যালয়ে যান দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের চালক প্রদীপ কুমার। তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই দায়ের হয়েছে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা। এক যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে জিআরপি। লিখিত অভিযোগে ওই যাত্রী জানিয়েছেন, নিউ জলপাইগুড়ি ছাড়ার পরে কোচবিহারের দিকে যাওয়ার পথেই ট্রেনটি অত্যন্ত জোরে চলতে শুরু করে। তারপরেই হঠাৎ জোরে ব্রেক কষে চালক। তারপরেই ট্রেনের একাধিক বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়।
যদিও রেল চালক প্রদীপ কুমারের বক্তব্য, “তখন ১৬টা বেজে ৫২-৫৩ মিনিট হবে। আচমকাই একটা ভীষণ ঝাঁকুনি অনুভব করি। তারপরই এর্মাজেন্সি ব্রেক কষি। পিছনে কী হচ্ছে, আমার পক্ষে জানাটা সম্ভব ছিল না। যখন দেখি, তখন পিছনের ৬ চাকা লাইনচ্যুত হয়েছিল। কারণ আমি গাড়ি চালাচ্ছিলাম। ট্র্যাকশন মোটর খোলা ছিল কিনা, সেটা জানা আমার পক্ষে কোনওপক্ষেই সম্ভব নয়।” রেলমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শুক্রবারই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ। রেলমন্ত্রী বলেন, “আমি নিজে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখেছি। আচমকা যান্ত্রিক ত্রুটির জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেক্ষেত্রে যে ইক্যুইপমেন্টগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলি সংগ্রহ করে ভাল করে খতিয়ে দেখা হবে। সেখানে কোনও সমস্যা রয়েছে কি না। সেক্ষেত্রে বেশ কিছু চিহ্নও পাওয়া যেতে পারে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনার শিকড়ে গিয়ে তদন্ত করা হবে।”
পাশাপাশি, রেলমন্ত্রীর আরও সংযোজন, “কোচের জন্য কোনও সমস্যা হয়নি। নতুন অত্যাধুনিক LHB কোচ অধিকাংশ ট্রেনেই চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে কোচের জন্য কোনও সমস্যা হয়নি। গোটা ঘটনাই তদন্ত করে দেখা হবে। কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি তদন্ত করে দেখবে।”
বৃহস্পতিবার বিকেলে, আচমকাই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে উত্তরবঙ্গে। দুর্ঘটনার সময় ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে চলছিল এক্সপ্রেস ট্রেনটি। দুর্ঘটনায় দেখা যায়, ট্রেনের বগিগুলো খেলনা গাড়ির মতো একে অপরের ওপর উঠে পড়েছে। এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত প্রায় ৪৪ জন। তাঁদের সকলকেই তৎক্ষণাৎ জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি ভর্তি করা হয়। অনেকেই সুস্থ হয়ে ফিরে যান। কিছুজন এখনও চিকিৎসাধীন।
আরও পড়ুন: Chandannagar Municipal Election: ‘জল খাবে কিন্তু ঘোলা করে খাবে, কে খাবে সবাই জানি’