
জলপাইগুড়ি: কাঁটাতারহীন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা অনেক সময় ভারতে ঢুকে পড়ে। সীমান্তের বাসিন্দারা এই নিয়ে বিভিন্ন সময় অভিযোগ করেন। এবার বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের সঙ্গে মারামারি করে পাচার রুখলেন সীমান্তের বাসিন্দারা। এই নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ি সীমান্তে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের সাহায্যকারী ভারতীয় দালাল তাঁদের গুলি করে খুনের হুমকি দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, গতকাল রাতে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের দক্ষিণ বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বনগ্রাম এলাকায় উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে একদল বাংলাদেশি দুষ্কৃতী। রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে পাচারকারীরা বেশ কয়েক বস্তা বিভিন্ন ধরনের সবজির বীজ নিয়ে উন্মুক্ত সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে প্রবেশ করে। বিনিময়ে তারা নেশার ওষুধ নিয়ে যাচ্ছিল। বিষয়টি দেখে ফেলেন গ্রামের যুবকরা। তাঁদের উপর চড়াও হয় চোরা চালানকারীরা। শুরু হয় মারামারি।
খবর পেয়ে এলাকায় হাজির হয় মানিকগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশকর্মী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ১৩০ নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা। ততক্ষণে অবশ্য বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনায় আহত হন বনগ্রামের যুবক সমীর রায়। তাঁকে চিকিৎসার জন্য হলদিবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায় BSF। অভিযোগ, পাচার করতে না পারায় স্থানীয় পরিবারগুলিকে হুমকি দিয়েছে ভারতীয় দালাল। আর এতে আতঙ্কিত গ্রামের মানুষ।
আহত সমীর রায় বলেন, “সীমান্ত এলাকায় পাচারের প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধর করেছে বাংলাদেশি পাচারকারীরা।” স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণ রায়, সান্ত্বনা রায়, গীতা রায় বর্মণ প্রশ্ন তোলেন, “বিএসএফ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এরা ভারতে ঢুকে আমাদের ছেলেদের মারধর করল?” একইসঙ্গে তাঁরা দ্রুত উন্মুক্ত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার দাবি জানান।
গ্ৰাম পঞ্চায়েত সদস্য তথা আহত যুবকের বাবা তরুণ রায় বলেন, “বাংলাদেশী দুষ্কৃতীরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে বীজ নিয়ে আসছিল। বিনিময়ে তারা নেশার ওষুধ নিয়ে যাচ্ছিল। সেইসময় চোর চোর বলে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের পিছু ধাওয়া করলে ওরা চার- পাঁচ জন মিলে আমার ছেলেকে ঘিরে ফেলে মারধর শুরু করে। পাশাপাশি লাঠি দিয়ে ছেলের মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করে। সেইসময় ছেলে লাঠিটিকে হাত দিয়ে আটক পালিয়ে আসে।” ওই যুবকের চিৎকার শুনে বেরিয়ে আসে আশপাশের বাসিন্দারা। তাঁরাও রুখে দাঁড়ান পাচারকারীদের বিরুদ্ধে। তারপরই পাচারকারীরা পালায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এরকম পাচার প্রায়ই হয়।