Jalpaiguri: পোশাক খুলে রাস্তায় বের করে দেবে, বৃদ্ধ বাবাকে বলেছিল মেয়ে, বাড়ি থেকে উদ্ধার বৃদ্ধের দেহ

Jalpaiguri News: নিহতের নাম অজিত কর্মকার (৭৩)। তিনি সরকারি চাকরি করতেন। বাড়িতে স্ত্রী ও মেয়ে আছেন।

Jalpaiguri: পোশাক খুলে রাস্তায় বের করে দেবে, বৃদ্ধ বাবাকে বলেছিল মেয়ে, বাড়ি থেকে উদ্ধার বৃদ্ধের দেহ
কান্নায় ভেঙে পড়েছেন নিহতের বোন। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 19, 2022 | 9:19 PM

জলপাইগুড়ি: দাদাকে বৌদি ও ভাইঝি অত্যাচার করে মেরে ফেলেছেন। এমনই অভিযোগ তুলে ভাইঝিকে জুতোপেটা করলেন পিসি। শুক্রবার জলপাইগুড়ি পুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এমনও অভিযোগ, বৃদ্ধকে মেরে তিনদিন ধরে ঘরের ভিতরই ফেলে রাখা হয়। এদিন বাজে গন্ধ বেরোতে শুরু করলে পাড়া প্রতিবেশিরা বেরিয়ে আসেন। পুলিশও খবর পেয়ে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। নিহতের নাম অজিত কর্মকার (৭৩)। তিনি সরকারি চাকরি করতেন। বাড়িতে স্ত্রী ও মেয়ে আছেন। পাশেই অজিতবাবুর ভাইয়ের বাড়ি। তাঁর ভাইপোর অভিযোগ, জ্যেঠুকে জ্যেঠিমা ও দিদি নিয়মিত মারধর করতেন। দিনের পর দিন এই অত্যাচার সইতে সইতেই এই পরিণতি হয়েছে। যদিও জলপাইগুড়ি হাসপাতালে চিকিৎসকদের মতে, হাসপাতালে যখন ওই বৃদ্ধকে নিয়ে আসা হয়, নিহতের স্ত্রী ও কন্যা দু’জনই মানসিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন। তাঁরা বারবারই বলছিলেন, অজিতবাবু মৃত নন। ঘুমিয়ে আছেন। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

স্থানীয় কলেজ পাড়ার বাসিন্দা অজিত কর্মকারের বোন গীতা কর্মকার বলেন, “আমরা আসলে দাদার বাড়িতে আমাদের বৌদি, ভাইঝি ঢুকতে দেয় না। দাদা আমার বাড়ি গিয়ে কাঁদে। বাবাকে আট বছর বয়সে হারিয়েছি। এরপর দাদাই বড় করেছে বাবার স্নেহে। তাঁর এই কষ্ট সহ্য হত না আমাদের। দাদাকে কতবার বলেছি, আমার কাছে এসে থাকতে। বৌদি আর মেয়ে মিলেই আমার দাদাটাকে মেরে ফেলল।” স্থানীয়দের অভিযোগ অজিতবাবুর স্ত্রী অঞ্জলি ও মেয়ে অনিন্দিতা কারও সঙ্গে মেশেন না। অজিতবাবু কারও সঙ্গে কথা বললে তাঁকেও মারধর করেন। প্রায় প্রায়ই বাড়িতে ঝামেলা হয়। সম্প্রতি সেই ঝামেলা চরমে ওঠে।

নিহতের ভাইপো অমিত কর্মকার বলেন, “আমার জ্যেঠি আর দিদি কারও সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখে না। আমাদের সঙ্গে ঝগড়া করে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা পাশেই থাকি। সবসময় খারাপ কথা বলে। পাড়ার লোকের সঙ্গেও একই ব্যবহার করে। দিন তিনেক আগে জ্যেঠিমা হঠাৎ শুনি চিৎকার করে দিদিকে বলছে, জ্যেঠুর কিছু হয়েছে। দিদি শুনছি পাল্টা বলছে, কাউকে ডাকবে না, ডাকলে মেরে ফেলব। আজ তিনদিন পর বাজে গন্ধ বেরোতে শুরু করে। এদিকে শুনলাম ওষুধ নেওয়ার নাম করে নাকি জ্যেঠি বেরিয়ে থানায় গিয়ে বলে আসে স্বামী ঘরে মরে পড়ে আছে তিনদিন ধরে। বাড়িতে লাইট জ্বালায় না, দরজা খোলে না। জ্যেঠু কারও সঙ্গে কথা বললেই দিদি, জ্যেঠি মারধর করত। ঘটনার আগের দিন রাতেও খুব চিৎকার শুনি। দিদি বলছিল জামা কাপড় খুলে রাস্তায় বের করে দেবে।”

জলপাইগুড়ি হাসপাতালের চিকিৎসক আশিস সরকার বলেন, “মৃত্যুর কারণ জানতে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেহ পাঠানো হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু। কীভাবে শ্বাসরুদ্ধ, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না এলে বলা সম্ভব না। নিহতের স্ত্রী ও মেয়েকে দেখে যেটা মনে হল মানসিকভাবে তাঁরা এখন থিতু নন। ওনারা মনে করছেন, ওই ব্যক্তি মারা যাননি।”