COVID19 in Jhargram: আক্রান্ত হাসপাতাল সুপার থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারও, কোভিড-কাঁটায় কাবু ঝাড়গ্রাম!

COVID19: অন্যদিকে ঝাড়গ্রাম জেলাশাসকের কার্যালয়েও একাধিক আধিকারিক করোনা আক্রান্ত। তাই, অফিস চত্বর জুড়ে একাধিক বিধিনিষেধ চালু করা হয়েছে।

COVID19 in Jhargram: আক্রান্ত হাসপাতাল সুপার থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারও, কোভিড-কাঁটায় কাবু ঝাড়গ্রাম!
ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 06, 2022 | 8:15 AM

ঝাড়গ্রাম: শুধু কলকাতা নয়, কোভিড আবহে রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতেও বেহাল দশা। জেট স্পিডে বাড়ছে করোনা গ্রাফ। সংক্রমণের জেরে ভেঙে পড়েছে ঝাড়গ্রামের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার চিকিৎসক ইন্দ্রনীল সরকার। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম ঘোষও কোভিডে আক্রান্ত।

জেলা হাসপাতাল সূত্রে খবর, দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। করোনা পরীক্ষার ৬ জন ল্যাব টেকনিশিয়ানের মধ্যে ৫ জনই করোনা আক্রান্ত। ফলে হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করতে সমস্যা হচ্ছে। হাসপাতালের  গাইনোকলজিস্ট-সহ একাধিক চিকিৎসক ও কিছু স্বাস্থ্য কর্মী আক্রান্ত। আক্রান্ত হয়েছেন হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল সরকার। তাঁর জ্বর ও অন্যান্য উপসর্গ রয়েছে।

শুধু ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল নয়, একাধিক হাসপাতালেই একই ছবি। বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে একজন মেডিক্যাল ডাক্তার-সহ অন্যান্য বেশ কিছু স্বাস্থ্য কর্মী আক্রান্ত। নয়াগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ডাক্তার, ল্যাব টেকনিশিয়ান, নার্স-সহ  ৮ জন স্বাস্থ্য কর্মী আক্রান্ত।

অন্যদিকে ঝাড়গ্রাম জেলাশাসকের কার্যালয়েও একাধিক আধিকারিক করোনা আক্রান্ত। তাই, অফিস চত্বর জুড়ে একাধিক বিধিনিষেধ চালু করা হয়েছে। অফিসের মূল ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাইরে রাখা বাক্সেই প্রয়োজনীয় কাগজ জমা করতে হচ্ছে। কার্যালয়ের ভিতর একাধিক অফিসেও স্যানিটাইজেশনের কাজ চলছে। মাস্ক ছাড়া রাস্তায় নয়, কড়া নজরদারি পুলিশের। ঝাড়গ্রামে, গতকাল আক্রান্ত ১৮ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ২৪ জন। শেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ ১৫ জন। তবে মঙ্গলবার ও বুধবার কোনও মৃত্যু হয়নি জেলায়।

উল্লেখ্য,  করোনায় (COVID -19) আক্রান্ত পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। বুধবার তাঁর শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। কিছু মৃদু উপসর্গ অনুভব করছেন তিনি। হালকা সর্দি-কাশি রয়েছে, জ্বর-জ্বর অনুভবও করছেন। উল্লেখ্য, প্রথমে তাঁর ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়। পরে আরটিপিসিআর পরীক্ষায় করা হলে রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। বুধবারও দফতরে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।

রাজ্যে আবারও লম্বা লাফ করোনার। দৈনিক সংক্রমণ একধাক্কায় বেড়ে ১৪ হাজারের গণ্ডি পেরিয়ে গেল বুধবার। মঙ্গলবার এই সংখ্যাটা ছিল ৯ হাজারের কিছু বেশি। একদিনে প্রায় পাঁচ হাজার বেড়েছে দৈনিক সংক্রমণ। আক্রান্তের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে কলকাতা। আক্রান্তদের মধ্যে ৬ হাজারেরও বেশি কলকাতায়। এরপরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। শেষ ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ২৪ পরগনায় আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছেন ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ।

হু হু করে রাজ্যে সংক্রমণ বাড়ছে বটে, তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন – সতর্ক থাকতে হবে, তবে ভয় পেলে চলবে না। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান থেকে দেখা গিয়েছে, যেমন সুনামির মতো করে সংক্রমণ বেড়েছে, ততটাই দ্রুত হারে সংক্রমণ কমবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ইতিমধ্যেই সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী হয়ে গিয়েছে। আমাদের দেশে তথা রাজ্যেও করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট ততটা ভয়ঙ্কর এখনও হয়নি। হাসপাতালে ভর্তির হার তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। অক্সিজেনের চাহিদা দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় যেমনভাবে দেখা গিয়েছিল, তেমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। রাজ্যে বর্তমানে যতগুলি কোভিড বেড রয়েছে, তার মাত্র ৩.৮৩ শতাংশ বেডেই রোগী ভর্তি রয়েছেন। রাজ্যে মোট কোভিড বেড রয়েছে ২৩ হাজার ৯৪৭। বাংলায় এখন মোট হাসপাতালে ভর্তি কোভিড রোগীর সংখ্যা দুই হাজারে সামান্য বেশি।

তবে এই দেখে মুখ থেকে মাস্ক নামিয়ে দিলে চলবে না। দেশে ওমিক্রনই যে ডমিনেন্ট ভ্যারিয়েন্ট হয়ে উঠেছে, এমন কোনও স্পষ্ট তথ্য নেই এখনও আমাদের হাতে। সুতরাং, ওমিক্রনের পাশাপাশি আমাদের আশেপাশে ডেল্টা এবং ডেল্টা প্লাসও ঘুরে বেরাচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় ভয় নয়, বরং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং মাস্ক পরা – এই হাতিয়ারেই কাবু হবে করোনা।

আরও পড়ুন: Bengal BJP: ‘ঘাসফুলের বি-টিম, চলন বাঁকা’, বিজেপিতে বাড়ছে ‘বিদ্রোহ’, এ বার দলত্যাগ প্রাক্তন মোর্চা নেত্রীর