ঝাণ্ডা লাগিয়ে নদীর-ও দখল নিল তৃণমূল! অথৈ জলে ৫০০ মৎস্যজীবী পরিবার
TMC: ৫০০ মৎস্যজীবীর (Fisherman) পরিবারকে সম্পূর্ণ রোজগারহীন করে তৃণমূলের (TMC) পতাকা লাগিয়ে নদীর দখল নেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসক দলের বিরুদ্ধে। মাছ চাষিরাই বঞ্চিত মাছ চাষ থেকে!
মালদহ: ৫০০ মৎস্যজীবীর (Fisherman) পরিবারকে সম্পূর্ণ রোজগারহীন করে তৃণমূলের (TMC) পতাকা লাগিয়ে নদীর দখল নেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসক দলের বিরুদ্ধে। মাছ চাষিরাই বঞ্চিত মাছ চাষ থেকে! তৃণমূলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিলেন মৎস্যজীবীরা।
মালদহের হরিশচন্দ্রপুরের ২ ব্লকের ভালুকা বাজার এলাকা। এখানে ফুলহার নদীর একটা অংশ বাঁধের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে। এই এলাকার অনধিক ৫০০ মাছ চাষি নদীতে মাছ ধরে বিক্রি করেই সংসার চালান। মাছ চাষিদের ওই নদীতে মাছ চাষ করার অনুমতি দিয়েছেন রাজ্যপাল থেকে জেলা প্রশাসন। এমনকি গোলমাল হওয়ায় সেখানে ১৪৪ ধারাও রয়েছে। চাষিরা একে একে সেখানে মাছ ধরেন। কিন্তু হঠাৎই লাঠি-বল্লম নিয়ে হাজির হয়ে নদীর ধার দিয়ে বাঁধ বরাবর তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে জাল দিয়ে ঘিরে সেখানে মাছ ধরা শুরু করলেন তৃণমূলের একদল কর্মী সমর্থকরা!
পরোয়া নেই সরকারি নির্দেশের। ১৪৪ ধারা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। দিব্যি নদী দখল করে মাছ চাষ করে ব্যবসা শুরু করেছে শাসক দলের কয়েকজন নেতা। এমনকি এখন আর নদীর ধারেকাছে ঘেঁষতে পারছে না এলাকার ৫০০ মাছ চাষি! এমনই অভিযোগ করেছেন তাঁরা। এখন এ ই ৫০০ পরিবারের রোজগার সম্পূর্ণ বন্ধ। প্রায় অনাহারে দিন কাটছে পরিবারের সদস্যদের।
ওই মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, গত একমাস ধরে এভাবেই চলছে। বিডিও বা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। কেউ দেখতেও আসেননি তাঁদের। কেমন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন তাঁরা। মালদহের ভালুকা বাজার এলাকার বাঁধ লাগোয়া নদীর এই অংশ একরকম ভেড়ির মত হয়ে থাকে। প্রচুর মাছ থাকে তাতে। আর তাই এই অংশ দখল করে মাছ চাষের উদ্যোগ নেয় বহু প্রভাবশালীরা। বহুবার এই নিয়ে গোলমাল, সংঘর্ষ হয়েছে। বিষয়টি রাজ্যপাল পর্যন্তও পৌঁছয়। এরপর বেশ কয়েক বছর বছর আগে এলাকার ৫০০ মাছ চাষির পরিবারকে ওই এলাকায় মাছ চাষ করার অধিকার দিয়ে চিঠি দেন এসডিও। সেই অনুমতি আসে স্বয়ং রাজ্যপালের কাছ থেকে।
পাশাপাশি ওই এলাকায় একে একে সুশৃঙ্খল ভাবে মাছ ধরার জন্যে ১৪৪ ধারা করে দেওয়া হয়। যাতে ভিড় করে গোলমাল বাঁধাতে কেউ না পারে। কিন্তু এখন এসবের কোনও পরোয়া না করে, এলাকার দখল নিয়েছে তৃণমূল। মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত মাছ চাষিরাই। যারা দখল নিয়েছে তাঁরা আমাদের ক্যামেরার সামনেও দাপটের সঙ্গে বলেছে তাঁরা তৃণমূল করে। তাই পতাকা লাগিয়ে ঘিরে নিয়ে দখল নিয়েছে নদীর।
এই নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডলের কথায়, এসব আসলে গৃহযুদ্ধের সূচনা। অন্যদিকে এই ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছে হরিশচন্দ্রপুর-২ এর তৃণমূল ব্লক সভাপতি হজরত আলী। তবে তাঁর দাবি, একদল মানুষ তৃণমূল পরিচয় দিয়ে দলের বদনাম করছে। সেটা দেখছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: বিজেপি কর্মী কেন ভ্যাকসিন পেলেন না? প্রতিবাদে পুরনিগম ঘেরাও করল সিপিএম!