Fraud Case: সরকারি চাকরির নামে সাড়ে ১৪ লাখের ‘প্রতারণা’, এবার প্রতারিত তৃণমূল নেতা

Upper Primary: উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মোটা টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে হরিশচন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডহরা গ্রামের বাসিন্দা মহিদুর রহমান ওরফে বাদল নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে।

Fraud Case: সরকারি চাকরির নামে সাড়ে ১৪ লাখের 'প্রতারণা', এবার প্রতারিত তৃণমূল নেতা
প্রতারক যুবক মহিদুর রহমান ওরফে বাদল
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 29, 2022 | 4:27 PM

মালদা: এবার বিতর্ক উচ্চ প্রাথমিক নিয়ে। উচ্চ প্রাথমিকে চাকরি দেওয়ার নাম করে সাড়ে ১৪ লাখ টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠল মালদার হরিশচন্দ্রপুরে। আর এবার যিনি প্রতারিত, তিনি নিজেই একজন তৃণমূল নেতা। খবরটি চাউর হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে মালদার হরিশচন্দ্রপুরে। সাম্প্রতিক অতীতে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সরগরম রাজ্য। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চলছে সিবিআই তদন্ত। এর মধ্যেই উচ্চ প্রাথমিকে চাকরি দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণার আরও একটি অভিযোগ সামনে এল। উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষকতার চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মোটা টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে হরিশচন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডহরা গ্রামের বাসিন্দা মহিদুর রহমান ওরফে বাদল নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। আর যিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তিনি হরিশচন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের সাদলিচক গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন সাদলিচক গ্রামের বাসিন্দা তথা স্থানীয় পঞ্চায়েতে তৃণমূলের যুব সভাপতি আরজাউল হক।

ওই প্রতারক যুবকের বিরুদ্ধে হরিশচন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন প্রতারিত আরজাউল হকের বাবা মহম্মদ শাহজাহান। অভিযোগের ভিত্তিতে হরিশচন্দ্রপুর থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আরজাউল হকের বাবা মহম্মদ শাহজাহান জানান, তাঁর ছেলে আরজাউল ২০১৯ সালে উচ্চ প্রাথমিকে টেট পরীক্ষায় পাশ করে। এরপর ইন্টারভিউয়ের জন্যও ডাক পায়। তবে চাকরি পেতে অসফল হয়। সেই সুযোগে প্রতারক মহিদুর রহমান ওরফে বাদল চাকরি করিয়ে দেওয়ার নাম করে তাঁর ছেলের কাছ থেকে তিন কিস্তিতে সাড়ে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। তবে চাকরি করাতে পারেনি।

পরবর্তী কালে তাঁর ছেলে জানতে পারে, যে সে প্রতারণার শিকার হয়েছে। এরপর টাকা ফেরত চাইতে গেলে ওই যুবক টালবাহানা করতে শুরু করে। ঘটনার জেরে গ্রামে সালিশি সভাও বসানো হয়। এরপর দুই কিস্তিতে ২ লাখ টাকা ফেরত দিলেও এখনও সাড়ে ১২ লাখ টাকা দিতে অস্বীকার করছে। মোবাইল বন্ধ রেখেছে। এখন তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে।

তিনি আরও জানান, হরিশচন্দ্রপুর এলাকার বেশ কয়েকজন শিক্ষিত যুবক যুবতীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছে ওই যুবক। তারা ভয়ে অভিযোগ করতে পারছে না। এর আগেও ওই যুব্ক বিভিন্ন দফতরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এলাকার বেশ কয়েকজনের চাকরি করিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আরজাউলের বাবা। প্রতারক মহিদুর রহমান গ্রেফতার হলেই আসল ‘নায়কে’র নাম উঠে আসবে বলে আশাবাদী তিনি।

ঘটনাটি নিয়ে তৃণমূল শিবিরকে বক্রোক্তি শানিয়েছেন জেলার বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি নেতা অম্লান ভাদুরীর বক্তব্য, “সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে ব্যাপক হারে টাকা তোলার একটি ইন্ডাস্ট্রি বানানো হয়েছে। তা মালদা জেলাতেও সক্রিয়। সমস্ত দফতরে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলছে। এতে তৃণমূলের নিচু তলার কর্মীদের থেকে শুরু করে উপর তলার নেতারা জড়িত। এখানে যে প্রতারিত হয়েছে, সেও তৃণমূল করে, যে প্রতারক সেও তৃণমূল। আজ কাক কাকের মাংস খেয়ে ফেলছে।”

বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী জানিয়েছেন, “যদি কেউ চাকরির নাম করে টাকা নেয়, কোন দলের আছে, কোন ধর্মের আছে, তা আমরা দেখব না। যে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা দিয়েছে, সেও কেন এতদিন আমাদের না জানিয়ে টাকা দিল? আর যে টাকা নিয়েছে, তার বিরুদ্ধেও যাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা হয়, তা আমরা দেখব।” তবে এই ঘটনায় বিজেপির থেকে যে আক্রমণ করা হচ্ছে, তাতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ। তাঁর বক্তব্য, “বিজেপি নিজেরাই টাকা তুলে তুলে বড় একটা ভাড়ার করে নিয়েছে। কোন নেতারা সৎ আছেন, দেখাক।”