Drinking Water Problem : ‘কল আছে, জল নেই’, পানীয় জলের জন্য পুকুরই ভরসা মুর্শিদাবাদের এই গ্রামের
Drinking Water Problem : পুকুর থেকে জল এনে ফুটিয়ে খান বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বারবার অভিযোগ জানিয়ে পানীয় জলের সমস্যার সমাধান হয়নি।
মুর্শিদাবাদ : পরপর লাইন দিয়ে পুকুর থেকে কলসি, বালতিতে জল ভরছেন মহিলারা। গ্রাম-গঞ্জে এই দৃশ্য চিরাচরিত। কিন্তু, যদি বলা হয়, এই জল মেয়েরা বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন পানীয় জল হিসেবে ব্যবহারের জন্য। তাহলে কেমন যেন অবিশ্বাস্য লাগে। ২০২২ সালে এসে গ্রামের বাসিন্দারা পুকুরের জল পান করছেন? মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের জরুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শিমলা গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, এটাই বাস্তব এখানে। পুকুরের জলই পান করতে হচ্ছে তাঁদের।
শিমলা গ্রামের স্কুল পাড়া এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, তাঁদের পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। এখানে ২৫-৩০টি পরিবারের বাস। কিন্তু, কোনও পানীয় জলের টিউবওয়েল নেই। এতদিন এলাকার একটি বাড়ি থেকে সবাই পানীয় জল নিতেন। ওই পরিবারের নিজস্ব সাবমার্সিবল রয়েছে। কিন্তু, বেশ কিছুদিন আগে ওই পরিবার জানিয়ে দেয়, তারা এলাকার সবাইকে আর পানীয় জল দিতে পারবে না।
ওই পরিবার তাদের সাবমার্সিবল থেকে জল দেওয়া বন্ধ করতেই আতান্তরে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। পানীয় জল কোথা থেকে পাবেন? শেষ পর্যন্ত গ্রামের একটি পুকুর থেকে জল নিয়ে এসে পানীয় জল হিসেবে ব্যবহার করছেন। তাঁরা বলেন, পুকুর থেকে জল এনে ভাল করে উনুনে ফুটিয়ে নেন। তারপর ঠান্ডা করে ছেঁকে সেই জল পান করেন। পুকুরের জল পান করলে নানা রোগ-জ্বালা হতে পারে। তাঁরা বলছেন, সব জেনেও পুকুরের জল পান করতে হচ্ছে।
রঞ্জিত সর্দার নামে এক গ্রামবাসী বলেন, “ভোটের আগে রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিশ্রুতি দেয় যে টিউবওয়েল বসানো হবে। কিন্তু, ভোট শেষ হয়ে গেলেই আর তাদের দেখা যায় না। টিউবওয়েলও বসে না।” তাঁর অভিযোগ, পঞ্চায়েতে একাধিকবার এই নিয়ে বলা হয়েছে। কিন্তু, কাজ কিছু হয়নি।
মমতা সর্দার নামে এক মহিলা বলেন, “জলের ট্যাপ বসানোর জন্য ২৪০ টাকা করে নিয়েছে। কয়েক মাস আগে জলের জন্য পাইপ লাইনও পাতা হয়। সরকারি ট্যাপ কল বসানো হয়েছে। কিন্তু, সেখানে জল আসে না।”
ওই এলাকায় পানীয় জলের সমস্যার কথা স্বীকার করলেন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সোজা সরকারের স্বামী অনুপ সরকার। তিনি বলেন, “গ্রামের কিছু জায়গায় জলের সমস্যা রয়েছে। পাইপ বসেছে। কিন্তু, জল এখনও পৌঁছায়নি।” পানীয় জলের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতে আবেদন জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।
তবে গ্রামবাসীদের অভিযোগ ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন বিডিও মহম্মদ আবু তায়েব। তিনি বলেন, “ঘরে ঘরে তো আর পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয়। এলাকায় পানীয় জলের জন্য সাবমার্সিবল আছে।”