
কলকাতা: তিনি প্রতিবাদী, বিদ্রোহী বললেও ভুল হবে না। দলের মধ্য়ে সংস্কারের দাবিতে বারংবার সুর চড়িয়েছেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। যার পাল্টা একাধিক বার তাঁকে ‘সমঝেও দিয়েছে’ শাসকশিবিরের শৃঙ্খলা কমিটি। কিন্তু সেই বার্তায় কোনও কালেই বিশেষ গুরুত্ব দেননি হুমায়ুন। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই নতুন দল গড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। যত ভোট এগিয়ে এসেছে, সেই বার্তাকে ততই জিইয়ে রাখতে তৎপর হয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ভরতপুরের বিধায়কের সাফ কথা, ‘২০ ডিসেম্বর যেতে দিন, আমার যে দল, সেটির কথা আমি সর্বসম্মুখে জানিয়ে দেব। এই দলের চেয়ারম্যান আমিই হব। পাশাপাশি, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর, মালদা, নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনার কিছু কিছু এলাকায় প্রার্থী দেব।’ ২০১৬ সালের মতো হুমায়ুন কিন্তু একা নন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে তাঁর সঙ্গে অনেকেই যোগ দিতে পারেন। বলে রাখা প্রয়োজন, সেই বছরও ‘প্রতিবাদী’ হয়ে মুর্শিদাবাদে নির্দলীয় প্রার্থী হয়েছিলেন হুমায়ুন। তবে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন জয়। একাংশ বলছেন, ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে সেই ছবির পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।
সম্প্রতিই ১৫ই অগস্টের মধ্যে নতুন দল খোলার বার্তা দিয়েছিলেন ভরতপুরের বিধায়ক। কিন্তু সেই নতুন দল খোলার ঘোষিত দিনক্ষণের আগেই ক্যামাক স্ট্রিটে জেলা-বৈঠকে ডাকা হয় তাঁকে। এদিন হুমায়ুন বলেন, ‘ওখানে তিন ঘণ্টা বৈঠক হয়েছিল। আমাকে নিয়েও আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু সেই আলোচনা নিয়ে মানুষের সামনে বিকৃত তথ্য তুলে ধরেছিলেন নীলিমেশ।’ উল্লেখ্য, এই নীলিমেশ বিশ্বাস তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি। তোলাবাজি থেকে হুমকি-হুঁশিয়ারি, এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিদ্বেষেরও অভিযোগ হুমায়ুনের। এদিন বিধায়ক বলেন, ‘INTTUC-র সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে মাসে মাসে ‘তোলা’ পাঠান নীলিমেশ।’
পাশাপাশি, তাঁর সংযোজন, ‘১১ই অগস্ট অভ্যন্তরে যে বৈঠক হল, সেখানে কী আলোচনা হল, এই সব নিয়ে বহরমপুরের আনাচে-কানাচে একাধিক বিকৃত তথ্য ছড়িয়েছেন নীলিমেশ। এসব নিয়ে অনেক অভিযোগ করেছি। কিন্তু কিছুই লাভ হয়নি। এই দুর্ব্যবহার মনে পুষে রেখে আর থাকতে পারছি না। ৬ ডিসেম্বর ইচ্ছা রয়েছে বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করার। তারপর ২০ ডিসেম্বরের পর নতুন দল তৈরি করব।’ অবশ্য, ভোটের আগে নতুন দল নিয়ে জোট বাঁধতেও রাজি হুমায়ুন। তাঁর কথায়, ‘আমি সিট শেয়ারিং করব, একা লড়ব না। বামেদের সঙ্গে যাব, আইএসএফ-এর সঙ্গে যাব। কংগ্রেসকেও বাদ দেব না হয় তো।’