Nadia Suicide: ভুলবশত তৃণমূল নেতার স্ত্রীকে ফোন, ‘শাস্তি’ দিতে পার্টি অফিসের বাইরেই মারধর, অপমানে মর্মান্তিক সিদ্ধান্ত যুবকের
Nadia: স্থানীয় সূত্রে খবর, যুবকের নাম অমিত দেবনাথ (২২)। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বিকালে স্বরূপগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাগীরথী বিদ্যাপীঠ পাড়া সুকান্ত পল্লী এলাকায়।
নদিয়া: এলাকায় দাপুটে তৃণমূল নেতা হিসাবে পরিচিত। তাঁরই স্ত্রী-র কাছে ভুলবশত ফোন চলে যায় এলাকারই এক যুবকের। সেই ভলের ‘শাস্তি’ দিতে মাঠে-ময়দানে নেমে পড়েন তৃণমূল কর্মীরা। অভিযোগ, পার্টি অফিসের বাইরে বেধড়ক মারধর করা হয়। হাতে-পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েও মেলেনি নিস্তার। শেষে অপমানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী ওই যুবক।
স্থানীয় সূত্রে খবর, যুবকের নাম অমিত দেবনাথ (২২)। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বিকালে স্বরূপগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাগীরথী বিদ্যাপীঠ পাড়া সুকান্ত পল্লী এলাকায়। গোটা ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে জনতা অভিযুক্তদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় নবদ্বীপ থানার পুলিশ। পরে পুলিশকে ঘিরেও চলে বিক্ষোভ।
সূত্রের খবর, শনিবার ভুলবশত অমিতের ফোন থেকে কল চলে যায় এলাকার দাপুটে তৃণমূল কর্মী সঞ্জীব সমাদ্দারের স্ত্রীর কাছে। এরপর ওই যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় দলীয় কার্যালয়ের সামনে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলেও দাবি মৃতের পরিবারের।
এরপর পুনরায় অর্থাৎ রবিবার সকালে বাড়ি থেকে অমিতকে ডেকে নিয়ে গিয়ে প্রকাশ্যে ওই যুবককে বেধরক মারধর করা হয়। তার মা গিয়ে হাতে পায়ে ধরে ক্ষমা চাওয়ার পরও রেহাই মেলেনি পুত্রের। এরপরই বাড়ি ফিরে অপমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয় ওই যুবক। তার আত্মহত্যার খবর পেয়ে খুবই ফেটে পড়েন এলাকার মানুষ।
কে এই সঞ্জীব সমাদ্দার?
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সঞ্জীব সমাদ্দার ওরফে কালু শাসক দলের সাথে যুক্ত থাকা সুবাদে এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায়। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ওই তৃণমূল নেতার ভয়ে এলাকার মানুষ সর্বদা আতঙ্কে থাকেন। প্রতিবাদ করতে পারেন না। এই ঘটনা ঘটার পর গ্রামবাসীরা নবদ্বীপ থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ বেশ কয়েক ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে আসে। ঘটনা স্থলে পুলিশ এলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে এলাকার মানুষ। তাঁদের দাবি পুলিশ দেরিতে আসার কারণ অভিযুক্তদের পালিয়ে যেতে পুলিশ সাহায্য করেছে।।
পরিবারের ও এলাকার মানুষের অভিযোগ পুলিশ এই ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করছিল। তখনই পুলিশকে ঘিরে তারা বিক্ষোভ দেখায়। দীর্ঘ এক ঘণ্টার পর বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানালে, ঘেরাও তুলে নেয় ক্ষিপ্ত জনতা। আনুমানিক রাত সাড়ে আটটা নাগাদ মহেশগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে দেহটি উদ্ধার করে নবদ্বীপ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। সেখানেই সারারাত থাকার পর সোমবার দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠাবে নবদ্বীপ থানার পুলিশ।
এই ঘটনায় তৃণমূল ব্লক সভাপতি জানান, ‘আমি ঘটনাটি শুনেছি। কিন্তু সম্পূর্ণ বিষয়টি জানি না। তবে সঞ্জীব সমাদ্দার ও তাঁদের তৃণমূল কর্মীরা যদি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকেও দল এই ঘটনা সমর্থন করে না।’ মৃতের মা বলেন, ‘ বন্ধুকে ফোন করতে গিয়ে আমার ছেলের ফোনটা ভুল করে ওই তৃণমূল নেতার স্ত্রীর ফোনে চলে যায়। তারপর ও ভাত খাচ্ছিল। ওকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। সেই কারণে অপমানে আত্মঘাতী হয় আমার ছেলে।’ তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি সঞ্জীব সমাদ্দারের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।