
হিঙ্গলগঞ্জ: সাতমাসের অন্তঃসত্ত্বা প্রসূতি মৃত সন্তান প্রসব করেছিলেন। সেই ভ্রূণকে মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। ১৮ মাস পর সেই মৃতদেহ মাটি থেকে তোলা হল ময়নাতদন্তের জন্য। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের ভেটকিয়া এলাকার। মৃত সন্তানের মা রেশমা খাতুনের অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতের নির্দেশে মাটি খুঁড়ে হাড়গোড় উদ্ধার করল পুলিশ।
জানা গিয়েছে, ভেটকিয়া এলাকার রেশমা খাতুনের সঙ্গে এলাকারই জামিরুল গাজির বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের সময় ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা পণ নিয়েছিলেন জামিরুল। বিয়ের পর তাঁদের একটি কন্যাসন্তান হয়। কয়েক বছর পর জামিরুল শ্বশুরবাড়িতে জানান, ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ দিলে একটা চাকরি পাবেন তিনি। শ্বশুরবাড়ির কাছে সেই টাকা চান। কিন্তু অভাবের সংসার চালিয়ে রেশমার বাবা সেই ৫ লক্ষ টাকা দিতে দেরি করেন। অন্যদিকে রেশমা আবার অন্তঃসত্ত্বা হন। অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা না পেয়ে রেশমার উপর অত্যাচার শুরু করেন জামিরুল। বাপেরবাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য রেশমার উপর চাপ সৃষ্টি করেন।
রেশমার বাবা মেয়ের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা দেন জামিরুলকে। অভিযোগে, পুরো ৫ লক্ষ টাকা না পেয়ে রেশমার উপর অত্যাচার চালান জামিরুল। সেইসময় রেশমা সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। অভিযোগ, জামিরুল ও তাঁর পরিবার ওষুধ খাইয়ে গর্ভেই সন্তানকে মেরে ফেলে। এবং সেই ভ্রূণকে গর্ভপাত করিয়ে মাটিতে পুঁতে দেয়।
অভিযোগ, রেশমাকে মারধর করে রাস্তার ধারে ফেলে দিয়ে যান জামিরুল। এলাকার মানুষ তাঁকে উদ্ধার করে রেশমার বাপেরবাড়িতে দিয়ে যায়। রেশমা শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে তাঁর সন্তানকে খুন এবং তাঁর উপর অত্যাচারের অভিযোগ করেন হিঙ্গলগঞ্জ থানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকদিন আগে জামিরুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে ছয়দিনের পুলিশ হেফাজতে নেয় হিঙ্গলগঞ্জ থানা। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আদালতের নির্দেশে এদিন সেই ভ্রূণ মাটি খুঁড়ে তুলে পুলিশ।
রেশমা খাতুন
এদিন রেশমা খাতুন বলেন, “আমার গর্ভস্থ সন্তানকে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গর্ভপাত করিয়ে পুঁতে দিয়েছিল আমার স্বামী।” অভিযোগ অস্বীকার করেন জামিরুল। স্ত্রীকে মারধর করতেন না বলেও তাঁর দাবি। উল্টে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল।