Suicide: পরীক্ষায় ধরা পড়েছিল ডেঙ্গু, গলায় ফাঁস দিয়ে হাসপাতালের শৌচাগারে ‘আত্মঘাতী’ রোগী!

North 24 Pargana: মৃতের পরিজনরা জানিয়েছেন, জ্বরে ভুগছিলেন ইন্দ্রজিত্‍। পরীক্ষা করার পর তাঁর ডেঙ্গু ধরা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলবারই শ্যামনগরেই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

Suicide: পরীক্ষায় ধরা পড়েছিল ডেঙ্গু, গলায় ফাঁস দিয়ে হাসপাতালের শৌচাগারে 'আত্মঘাতী' রোগী!
অ্যাম্বুল্যান্স চালকের আত্মহত্যায় আঙুল তৃণমূল নেত্রীর দিকে। প্রতীকী চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 18, 2021 | 5:00 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: বেশ কিছুদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন জগদ্দল শ্যামনগরের বাসিন্দা ইন্দ্রজিত্‍ মণ্ডল। ঠিক কী কারণে জ্বর তা অবশ্য প্রথমটায় বোঝা যায়নি। কিন্তু জ্বর না কমায় বাধ্য হয়েই পরীক্ষা করান তিনি। পরীক্ষার পরে বছর আটান্নর প্র‍ৌঢ়র ডেঙ্গু (Dendue) ধরা পড়ে। চিকিত্‍সার জন্য প্রথমে তাঁকে ভর্তি করা হয়, বেসরকারি হাসপাতালে। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ার কামারহাটির সাগরদত্ত হাসপাতালে ভর্তি হন ইন্দ্রজিত্‍। বুধবার সেখানেই শৌচাগারে তাঁর ঝুলন্ত দেহ আবিষ্কার হয়।

মৃতের পরিজনরা জানিয়েছেন, জ্বরে ভুগছিলেন ইন্দ্রজিত্‍। পরীক্ষা করার পর তাঁর ডেঙ্গু ধরা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গলবারই শ্যামনগরেই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তারপর তাঁকে আনা হয় কামারহাটির সাগরদত্ত হাসপাতালে। এতদূর পর্যন্ত সবই ঠিক ছিল। এদিন রাতে আচমকা হাসপাতাল থেকে ফোন আসে। রোগীর পরিবারকে দ্রুত হাসপাতালে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়। খবর পেয়েই সঙ্গে সঙ্গে সাগরদত্তে ছোটেন ইন্দ্রজিতের পরিবার। কিন্তু, তখন আর ইন্দ্রজিত্‍ নেই! হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, শৌচাগারে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ইন্দ্রজিত্‍। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতাল চত্বরে।

মৃতের পরিবারের অভিযোগ, আত্মহত্যা করতে পারেন না ইন্দ্রজিত্‍। পাল্টা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, কোনও রোগী বিশেষ করে ডেঙ্গু রোগী কেন আচমকা শৌচাগারে আত্মহত্যা করবে? পাশাপাশি, এই ঘটনায় হাসপাতালের কেউ জড়িত নয় বলেই দাবি কর্তৃপক্ষের। তাহলে কি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পরেই কোনও মনোরোগে ভুগছিলেন ইন্দ্রজিত্‍? তাই এই কঠোর পদক্ষেপ করলেন? উঠছে প্রশ্ন।

ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে বেলঘড়িয়া থানার পুলিশ। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। গোটা ঘটনাকে খতিয়ে দেখছে পুলিশ।তবে আত্মহত্যার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। পাশাপাশি, হাসপাতাল চত্বরে যাতে কোনওরকম কোনও উত্তেজনার সৃষ্টি না হয় সেদিকেও বিশেষ নজর দিয়েছে প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, করোনাকাঁটায়, অলক্ষ্যে নিজের শক্তি বৃদ্ধি করে চলেছে ডেঙ্গু (dengue)। হুঁশ ফিরছে না প্রশাসনের। রাজ্য জুড়ে পরিলক্ষিত হচ্ছে এই একই ছবি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ২৭ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে সাড়ে ৬০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন ডেঙ্গুতে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কাই সত্যি হচ্ছে। ডেঙ্গুর দাপট বাড়ছে রাজ্যে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ২৭ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বরের মধ্যে বাংলায় ডেঙ্গুর কবলে পড়েন ৬৫০ জন। গত বছর এই সময় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪১৯।

গত সপ্তাহ থেকেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। চলতি সপ্তাহে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাতে উত্তর ২৪ পরগনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৬৩ জন। কলকাতায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৯২ জন। হাওড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ১২২। নদিয়ায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩২ জন। দার্জিলিংয়ে এই সংখ্যাটা ২৬। এরপরই রয়েছে মালদহের স্থান। এখানে আক্রান্তের সংখ্যা এখনও ৭৩। উত্তর দিনাজপুরে ১৬।

ডেঙ্গুর এই সংখ্যাবৃদ্ধি ক্রমেই চিন্তা বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য ভবনের। যদিও, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “ডেঙ্গু এখন হচ্ছে ঠিকই। তবে সেই সংখ্যাটা এখনও অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়নি। সকলে সাবধানে নিয়ম মেনে থাকলেই ডেঙ্গু ছড়াবে না।” অভিযোগ উঠছে,  করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হতেই ডেঙ্গু নিয়ে বিশেষ কোনও পদক্ষেপ করছে না প্রশাসন। বাড়ি বাড়ি পরিদর্শনে যাচ্ছেন না স্বাস্থ্যকর্মীরাও। জমা জল থেকেই ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এই বছর প্রথম ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা রাজ্যে ৯০০ ছাড়িয়েছে। রোজই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের।

ডেঙ্গুর উপসর্গ

যে কোনও রোগেরই উপসর্গ সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে রোগ মোকাবিলার প্রথম ধাপটাই আপনি জেনে গেলেন। উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবা পেতে সময় মতো রোগ নির্ণয় করা দরকার। চোখের ব্যথা, বমি বমি ভাব, মাথাব্যথা, বমি, হাড়ের ব্যথা, ফুসকুড়ি, পেশী ব্যথা, অস্বাভাবিক রক্তপাত, জয়েন্টে ব্যথা, ক্লান্তি বা অস্থিরতার মতো লক্ষণগুলি দেখা দিলে সতর্ক হোন। এগুলি ডেঙ্গুর উপসর্গ।

ডেঙ্গুর চারটি সেরোটাইপের হদিশ মিলেছে। এর মধ্যে বিপদজনক ডেন ২ ও ডেন ৩। এ রাজ্যে এই দুই সেরোটাইপেরই বাড় বাড়ন্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, দেখা গিয়েছে ডেন ২ সব থেকে মারাত্মক। এর পিছনেই রয়েছে ডেন ৩। মাইক্রো বায়োলজিস্টরা বলছেন, ‘ডেন ২ ডেন ৩ মারাত্মক। অথচ এবারও শোনা যাচ্ছে এই দু’টো এ রাজ্যে ভালই পাওয়া যাচ্ছে। ডেন ৩ বেশি পাওয়া যাচ্ছে।’ সাধারণত ডেঙ্গু জ্বর ছয় থেকে সাতদিনের মধ্যে সেরে যায়। হেমারেজিক ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বেশি। ডেন ২ বা ডেন ৩ ঘটাতে পারে ডেঙ্গু হেমারেজ। এর ফলে শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়।

আরও পড়ুন: Police: মুকুলের এলাকায় এত চুরি কেন! মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের পরেই তড়িঘড়ি বদলি ওসির