Sundarban Woman: দুলদুলির এই লক্ষ্মী যেন সাক্ষাৎ বিশ্বকর্মা, অনায়াসে সারিয়ে ফেলেন সাইকেল-বাইক

North 24 Parganas: উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের দুলদুলি গ্রামপঞ্চায়েতের স্বরূপকাটি গ্রাম। সে গ্রামেরই গৃহবধূ বছর ৪২-এর লক্ষ্মী বৈদ্য।

Sundarban Woman: দুলদুলির এই লক্ষ্মী যেন সাক্ষাৎ বিশ্বকর্মা, অনায়াসে সারিয়ে ফেলেন সাইকেল-বাইক
লক্ষ্মী বৈদ্য।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 31, 2023 | 1:22 PM

বসিরহাট: এ এক অন্য লক্ষ্মীর গল্প। জন্ম থেকে তাঁর লড়াই শুরু। সুন্দরবনের (Sundarban) মেয়ে লক্ষ্মীর বড় হওয়া প্রকৃতির সঙ্গে যুঝে। সেই লড়াই তাঁকে কঠিনে-কোমলে গড়েপিটে নিয়েছে। এরপর স্বামীর ঘরে গেলেন। কোল ভরে এল তিন সন্তান। সংসারে পেট বাড়ল, কিন্তু স্বামীর আয় যে আর বাড়ে না। স্বামীর ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন সেই লক্ষ্মী। যে হাতে সন্ধ্যা হলে তুলসিতলায় পিদিম জ্বালে, সেই হাতই দিনভর ঘুরিয়ে চলেন সাইকেল, বাইক, ভ্যান রিক্সার চাকা। চাকায় পিটিয়ে চলেন হাতুড়ি। এ লক্ষ্মী বিশ্বকর্মার বরকন্য়া, গাঁয়ের মেকানিক বউ। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের দুলদুলি গ্রামপঞ্চায়েতের স্বরূপকাটি গ্রাম। সে গ্রামেরই গৃহবধূ বছর ৪২-এর লক্ষ্মী বৈদ্য। স্বামী ৫২ বছরের গৌরহরি বৈদ্য পেশায় দিনমজুর। দুই মেয়ে, এক ছেলে তাঁদের। লক্ষ্মী ছোট থেকেই সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয় চোখের সামনে দেখেছেন। আর দেখেছেন সংসারের অভাব অনটন। তবে কোনও প্রতিকূলতার সঙ্গে কীভাবে লড়তে হয় তা তিনি ভালই জানেন। অন্তরের সেই শক্তিতেই এ লক্ষ্মী যেন দশভূজা।

বিয়ের পর স্বামীর ঘরে এসে লক্ষ্মী দেখেছেন, মানুষটাকে একা হাতে সংসার ঠেলতে কতটা লড়তে হয়। একার রোজগারে সংসার যে আর চলে না। তখন লক্ষ্মীর ২৫ বছর বয়স। সেই থেকে নতুন লড়াই শুরু। তখন ভ্য়ান চালাতেন। পরে বাচ্চা হল, সংসারেও কাজ বাড়ল। ভ্যান চালানোর আর সময় পেতেন না। তাই একটি সাইকেল সারাইয়ের দোকান খোলেন।

স্বরূপকাটি বাজারে সেই দোকানেই লক্ষ্মী এখন ভ্যান, রিক্সা থেকে শুরু করে মোটর বাইক সারানোর কাজ করে চলেছেন দিনরাত। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। একমাত্র ছেলে লোকেশ বৈদ্য টাকি গভর্নমেন্ট কলেজে সংস্কৃত অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করছেন। লক্ষ্মী বৈদ্য বলেন, “১৫ বছর হয়ে গেল দোকানটার। ভ্যান চালিয়ে কিছু অর্থ সঞ্চয় করে তা দিয়ে দোকান করেছি।

আগে এখানে রাস্তা খারাপ ছিল, সাইকেল মোটর সাইকেল লিক হয়ে যেত। পাশাপাশি চেন কেটে যেত সাইকেলের। তা সারাই করার জন্য দোকানে ছুটে আসত। প্রতিদিন ২০০-২৫০ টাকা আয়ও হতো।” তবে এখন গ্রামের রাস্তাঘাটও অনেক ভাল। তাই সে সব সমস্যা কমেছে বলে জানান লক্ষ্মী। ফলে আয়েও থাবা বসেছে। এখন দিনে ৫০-৬০ টাকা আয় হয়।

এদিকে স্বামীর দিনমজুরির কাজও তেমন হয় না। ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন অনেক। ছেলে উচ্চশিক্ষায় সফল হয়ে একটা ভাল চাকরি করবে। তবে এখানেও তাঁর চিন্তা। খরচ তো অনেক। সবটা ঠিকমতো সামাল দিতে পারবেন তো? লক্ষ্মী বৈদ্য চান সরকার যদি কিছুটা সাহায্য করেন তা হলে কিছুটা নিশ্চিন্ত হতে পারেন তিনি।