TMC Raju Sahani: ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা, বাবা ছিলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা, কে এই রাজু সাহানি? উত্থানপর্ব অবাক করবে

Halishahar: হালিশহর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সিপিএমের রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, রাজু সাহানির গেস্ট হাউজ এবং বসত বাড়ি, দুই-ই বেআইনিভাবে তৈরি।

TMC Raju Sahani: ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা, বাবা ছিলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা, কে এই রাজু সাহানি? উত্থানপর্ব অবাক করবে
গ্রেফতার রাজু সাহানি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 03, 2022 | 9:47 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: শুক্রবারই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যান রাজু সাহানি। শনিবার আসানসোল আদালত রাজুকে পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজত দিয়েছে। হালিশহরে বিরাট বাড়ি, সঙ্গে গঙ্গাতীরে মনোরম পরিবেশে রিসর্ট। মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা রোজগার বলছেন এলাকার লোকজন। কিন্তু কে এই রাজু সাহানি? মুকুল রায়-শুভ্রাংশু রায়দের ‘গড়ে’ কীভাবেই বা এমন ‘রাজকীয়’ উত্থান হল তাঁর?

হালিশহরে জন্ম রাজু সাহানির। সেখানকার লালকুঠি মিত্রপাড়ায় বড় হওয়া। রাজুর বাবা লক্ষ্মণ সাহানি এক সময়ের দাপুটে সিপিএম নেতা। তিনিও জন্ম থেকেই হালিশহরে। সেই লক্ষ্মণের দুই ছেলে রাজু আর রাজা। কল্যাণীর নাম করা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল পড়াশোনা। এরপর বেঙ্গালুরু সফর। সেখানে চাকরি করতে যান তিনি। ঠিক করেন দক্ষিণ ভারতের ছবিতে অভিনয় করবেন।

ইচ্ছাপূরণও হয়। বেশ কয়েকটি সংস্থার হয়ে মডেলিংয়ের পাশাপাশি রাজু সাহানি দক্ষিণী ছবিতে অভিনয়ও করেন। তবে বাবার শরীরটা ভাল যাচ্ছিল না। বাবা চেয়েছিলেন, ছেলে ভিটেয় ফিরে আসুক। এরপরই হালিশহরে ফেরা। বাবার হাত ধরেই রাজনীতির আঙিনায় পা। বাবা বামপন্থী হলেও পরবর্তীকালে শিবির বদল করেন। ২০১০ সালে তৃণমূলে যোগ দেন এবং ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ভোটে জেতেন। হালিশহর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন তিনি।

বাম অধ্যায় শেষ করে রাজ্যে যখন তৃণমূল ক্ষমতায় এল, অন্যান্য পুরসভা দখলে নিলেও হালিশহর পুরসভা হাতে পেতে বেশ কসরত করতে হয়েছে জোড়াফুল শিবিরকে। দীর্ঘদিন পুরসভাগুলিতে বোর্ড ছিল না, ভোট হয়েছে মেয়াদ শেষের বহু পরে। এরপর মুকুলের পদ্মে ঘেঁষা, বিশেষ করে সপুত্র মুকুল রায় বিজেপিতে যাওয়ার পর ব্যারাকপুরের বিজেপি (পদ্ম টিকিটেই জয়ী হন) সাংসদ অর্জুন সিংয়ের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে হালিশহরে তৃণমূলের সংগঠনে থাবা বসায় বিজেপি। রীতিমতো দড়ি টানাটানি চলে দুই ফুলে। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখান একাধিক কাউন্সিলরও।

২০১৯ সাল। নৈহাটি পুরসভার সামনে পথসভায় মুখ্যমন্ত্রী ডাক দিলেন, হারানো পুরসভা পুনরুদ্ধারের। এরপর ২০২০ সালের অগস্ট। চেয়ারম্যান অংশুমান রায়কে সরিয়ে রাজু সাহানিকে প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব দিল তৃণমূল। এরপর গত পুরভোটে আবারও প্রার্থী করা হল রাজুকে। ২০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ভোটে লড়ে জয়ী হলে এবং তা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। তাঁকেই চেয়ারম্যান করল দল। এরপর গত দেড় এক দেড় বছরে রকেট গতিতে ছুটেছে রাজুর জয়রথ। অন্তত এলাকার লোকজন তেমনই বলছেন।

হালিশহর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সিপিএমের রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, রাজু সাহানির গেস্ট হাউজ এবং বসত বাড়ি, দুই-ই বেআইনিভাবে তৈরি। অসম-বেঙ্গল রিভার সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের জায়গা দখল করে নাকি রাজু তাঁর বসবাসের ‘অট্টালিকা’ ও গেস্ট হাউস, রিসর্ট বানিয়েছেন। রাজনৈতিক শক্তি দেখিয়ে বেআইনিভাবে আরও অনেক কিছু দখল করেছেন বলেও অভিযোগ রবীন্দ্রনাথবাবুর।