শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ কৌশিক কেন ভাইস চেয়ারম্যান? পানিহাটিতে তুঙ্গে ঘোষ-চ্যাটার্জি দ্বৈরথ

Panihati Municipality: রাজ্য সরকারের তরফে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ২৫টি পুরসভায় নতুন করে প্রশাসকমণ্ডলী নিয়োগ করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। আর তার পর থেকেই পানিহাটি এলাকায় রাজনৈতিক তরজা কার্যত তুঙ্গে উঠেছে। কারণ, কৌশিক।

শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ কৌশিক কেন ভাইস চেয়ারম্যান? পানিহাটিতে তুঙ্গে ঘোষ-চ্যাটার্জি দ্বৈরথ
ছবি: ফেসবুক
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 17, 2021 | 5:29 PM

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: মুচিপাড়াকাণ্ডে ধৃত বিজেপি নেতা সজল ঘোষের (Sajol Ghosh) জামিন দিয়েছে আদালত। ২০ হাজার টাকার বন্ডে বিজেপি নেতা প্রদীপ ঘোষের ছেলে সজলের হয়েছে সোমবারই। এদিকে গত শুক্রবার বাড়ির দরজা ভেঙে সজলের গ্রেফতারি নিয়ে কার্যত দিলীপ ঘোষদের হয়ে সওয়াল করা পানিহাটির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর কৌশিক চ্যাটার্জিকেই (Koushik Chatterjee) বসানো হল পানিহাটি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পদে। যা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত তৃণমূলের অন্দরমহল। একদা শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ এবং একুশের ভোটে বিজেপির হয়ে চিফ ইলেকশন এজেন্টের ভূমিকা পালন করা কৌশিককে কেন ভাইস চেয়ারম্যানের পদের জন্য বেছে নেওয়া হল? শুধুমাত্র নির্মল ঘোষকে (Nirmal Ghosh) শায়েস্তা করার জন্যই কি এই পদক্ষেপ? প্রশ্ন তৃণমূলের অন্দরেই।

রাজ্য সরকারের তরফে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ২৫টি পুরসভায় নতুন করে প্রশাসকমণ্ডলী নিয়োগ করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। আর তার পর থেকেই পানিহাটি এলাকায় রাজনৈতিক তরজা কার্যত তুঙ্গে উঠেছে। কারণ, কৌশিক। প্রশাসকমণ্ডলীর ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে যে কৌশিককে, ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়ে তিনি বিজেপিতে চলে যান। বিজেপির হয়ে চিফ ইলেকশন এজেন্টের ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু ভোট মিটতে আবারও তৃণমূলে ফিরে আসা সেই কৌশিকেই আস্থাশীল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব! আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় তৃণমূল শিবিরে।

পানিহাটির রাজনীতিতে কৌশিক চ্যাটার্জি ওরফে ভোলা নির্মল ঘোষের বিরোধী শিবির বলে পরিচিত। ভোলাবাবুর দিদিও কাউন্সিলর। উল্টোদিকে তৃণমূলের দমদম-বাারকপুর সাংগঠনিক চেয়ারম্যান নির্মল ষোষের মেয়েও কাউন্সিলর। পানিহাটিতে কান পাতলেই শোনা যায় ঘোষ বনাম চ্য়াটার্জির দ্বন্দ্বের কথা। সেই ঘোষ পরিবারকে শায়েস্তা করতে কি বিজেপি নেতা সজলের হয়ে সওয়াল করা কৌশিকেই ভরসা করছে তৃণমূল? এমন প্রশ্ন উঠছে দলেরই অন্দরে। বিষয়টি নিয়ে ‘অবাক’ পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ। পুরো বিষয়টি নিয়ে তিনি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে প্রশ্ন রাখবেন বলে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, বিজেপি নেতা সজল ঘোষের বাড়ির দরজা ভেঙে তাঁকে গ্রেফতার করা নিয়ে যখন প্রবল নিন্দা করে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন দিলীপ ঘোষ, তখনও কৌশিক ছিলেন বিজেপিরই পাশে। সেই তাঁকেই কেন পানিহাটি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের আসনে বসানো হল? প্রশ্ন তৃণমূলেরই একাংশের।

এদিকে মধ্যমগ্রাম পুর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরলেন রথীন ঘোষ। তাঁর জায়গায় বসানো হচ্ছে নিমাই ঘোষকে। দক্ষিণ দমদম পুর প্রশাসক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান পদ সরছেন মন্ত্রী সুজিত বসু। পাশাপাশি, বারাসতের ক্ষেত্রেও ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হল অশনি মুখোপাধ্যায়কে। তিনি বারাসত সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি হয়েছেন। তাই তাঁকে পুরসভা থেকে সরিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান করা হল সমীর তালুকদারকে।

তাছাড়া এক পদ নীতি মেনে পুরুলিয়ার পুর প্রশাসকেও পরিবর্তন দেখা গেল। প্রাক্তন সাংসদ মৃগাঙ্ক মাহাতোর জায়গায় আনা হল নবেন্দু মাহালি। নবেন্দু আগে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র ছিলেন। রঘুনাথপুরের প্রশাসক মদন বরাটকে সরিয়ে তরণী বাউরিকে আনা হয়েছে। উল্লেখ্য, যাঁদের সরানো হল তাঁদের বিরুদ্ধে একুশের বিধানসভা ভোটে পুরুলিয়া বিধানসভায় অন্তর্ঘাতের অভিযোগ ওঠে। পুরুলিয়া বিধানসভার প্রার্থী তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন এঁদের বিরুদ্ধে। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও আলাদা করে রিপোর্ট দিয়েছিল। এসবের মধ্যে তাই প্রশ্ন উঠছে, পানিহাটিতেই কেন অন্যথা হল? কেন শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ কৌশিকের ওপর ভরসা রাখছে দল, এ নিয়ে দলের অন্দরেই দানা বাঁধছে ক্ষোভ বলে খবর সূত্রের। আরও পড়ুন: পুলিশের সঙ্গে বচসা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে গ্রেফতার করল পুলিশ