Bengal Flood: এক ধাক্কায় অর্ধেক! দিনে প্রায় ৩৩ হাজার কিউসেক জল ছাড়ছে দুর্গাপুর ব্যারেজ

Bengal Flood: শনিবার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ প্রায় অর্ধেক করে দিয়ে ৩৩ হাজার ১০০ কিউেসেক জল ছাড়তে শুরু করল দুর্গাপুর ব্যারাজ।

Bengal Flood: এক ধাক্কায় অর্ধেক! দিনে  প্রায় ৩৩ হাজার কিউসেক জল ছাড়ছে দুর্গাপুর ব্যারেজ
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 07, 2021 | 4:46 PM

পশ্চিমবঙ্গ: বঙ্গ-বন্যা পরিস্থিতিতে আপাতত জল ছাড়ার পরিমাণ কমালো দুর্গাপুর ব্যারাজ-সহ (Durgapur Barrage) মাইথন, পাঞ্চেত ড্যাম। শুক্রবার রাতেই মাইথন ও পাঞ্চেতে  জল ছাড়া বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিসি। অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর ব্যারাজ (Durgapur Barrage) থেকে ৬০ হাজার ৮৭৫ কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছিল। শনিবার থেকে সেই জল ছাড়ার পরিমাণ প্রায় অর্ধেক করে দিয়ে ৩৩ হাজার ১০০ কিউেসেক জল ছাড়তে শুরু করল দুর্গাপুর ব্যারাজ। পাশাপাশি, ডিভিসির নির্দেশে মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে মিলিতভাবে ২৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।

ডিভিসি সূত্রে খবর, শুক্রবার ১৫ হাজার কিউসেক করে মোট ৩০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে দুটি ড্য়ামে। দুটি ড্য়ামেরই একটি করে লকগেট খোলা হয়েছে। এই মুহূর্তে ৪৯০ ফুট জল রয়েছে মাইথনে। পাঞ্চেতে জলের পরিমাণ ৪২৩ ফুট। দামোদর উপত্যকায় নতুন করে বৃষ্টিপাত হয়নি বটে, তবে এরপর বৃষ্টি হলে ফের বানভাসী হতে পারে দামোদর নিম্ন উপত্যকা। তবে, জল ছাড়ার পরিমাণ কমালেও বন্যা পরিস্থিতি এখনও অনিয়ন্ত্রিত রাজ্যে।

ঘাটাল:

এখনও জলমগ্ন ঘাটাল। পৌর এলাকা-সহ অজবনগর ও মনসুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রাম জলের তলায়। যোগাযোগের একমাত্র ভরসা ডিঙ্গি বা নৌকা।জল কমতে শুরু করলেও একেবারে স্বাভাবিক হতে এখনও বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে । কিন্তু নেই পানীয় জল। অপ্রতুল যোগাযোগ ব্যবস্থা। এই নিয়ে চরম ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বন্যাকবলিত এলাকার মানুষজন। তাঁদের দাবি, বন্যায় প্রশাসনিক আধিকারিকদের দেখা নেই। এখনও  রাজ্য সড়ক ও ত্রাণ শিবিরেই বসবাস করছে বহু মানুষ । শনিবার, ঘাটালে বন্যা পরিদর্শনে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।  নৌকো করে ত্রাণ সামগ্রী সঙ্গে নিয়ে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। সঙ্গে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তন্ময় দাস ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কাপাট।

রূপনারায়ণ:

রুপনারায়ণ নদীর বাঁধ ভেঙে বিপর্যস্ত খানাকুলের ধান্যঘড়ির বন্দর বাসস্ট্যান্ড এলাকা। ভেঙে তছনছ বাস স্ট্যান্ডের একাধিক দোকান। জলের স্রোতে ভেসে গিয়েছে রাস্তা। জলে ডুবেছে বাস। কিছুটা জল কমায় গ্রামবাসীরা নিজেরাই বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী সাঁকো তৈরী করেছেন। সেখান দিয়েই চলছে পারাপার। প্রশাসনিক কর্তাদের দেখা না মেলায় ক্ষোভ এলাকাবাসীর। অন্যদিকে প্লাবিত খানাকুল। রূপনারায়ণের ৩টি নদীর জল স্তর বিপদসীমার ওপরে ঘূর্ণি তৈরি করছে। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে কাচা বাড়ি।  ভিত নড়বড়ে পাকা বাড়িরও। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ টি বাড়ি ধূলিসাত্‍ হয়ে গিয়েছে।  বেশ কয়েকটি পাকা বাড়ি পুরোপুরি আলগা হয়ে উল্টে পড়েছে। এখান থেকেই মানুষজনকে উদ্ধার করেছে ভারতীয় বায়ুসেনার হেলিকপ্টার।

মালদা: 

ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙন এবার মালদার বৈষ্ণবনগরে। তীব্র ভাঙনের পাশাপাশি নদী ঢুকে পড়ছে পার অনুপনগর গ্রামে।  ১ ঘন্টার মধ্যে তলিয়ে যায় প্রায় ১০০ মিটার এলাকা। ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য় হচ্ছে মানুষ। খোলা আকাশের নীচে ২৩০ টি পরিবার। এর আগেও একাধিকবার ভাঙন দেখা গিয়েছে মালদার গঙ্গায়। সম্প্রতি বন্যা পরিস্থিতির জেরে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। কিন্তু দেখা মেলেনি প্রশাসনিক আধিকারিকদের।

ডিভিসি ইস্যুতে সরকারিভাবে খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চারপাতা সেই চিঠির প্রথম লাইনেই মুখ্য়মন্ত্রী লিখেছেন এই বন্যা ম্যান মেড। পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক সীমারেখা স্পষ্ট করে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ডিভিসির জল ছাড়ার জন্যই ডুবতে বসেছে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলা। মৃত্য়ু হয়েছে ১৬ জনের। নষ্ট হয়েছে বহু চাষের জমি। ২০১৫ সালে একাধিকবার ডিভিসি-র সংস্কারের দাবি জানানো হলেও তা এখনও অধরা থেকেছে। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করার আর্জি জানিয়েছিলেন মমতা।

পাল্টা, দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের সাফ দাবি, কেন্দ্র-রাজ্য নজরদারিতেই জল ছাড়ার প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু পলি পড়ে যেভাবে নদীগুলির নব্যতা কমেছে, তাতে কোনও ভাবেই জলাধারগুলি জল ধরে রাখতে পারছে না। তাই অতিরিক্ত জল ছাড়তেই হচ্ছে। এরপর, শুক্রবার জল ছাড়া বন্ধ হল মাইথন পাঞ্চেত ড্যামে। আরও পড়ুন: টিভি নাইন বাংলার খবরের জের! অশোকনগর টিকা-কাণ্ডে বৈঠক জেলা প্রশাসনের