Village without electricity: আসানসোলের পাশেই বিদ্যুৎবিহীন গ্রামে শিক্ষার আলো জ্বালাচ্ছেন ‘রাস্তার মাস্টার’

Asansol: আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার অন্তর্গত নামো জামডোবা গ্রাম। ২০২২ সালেও এই গ্রামে পৌঁছয়নি বিদ্যুৎ। যদি তা আসানসোল পুরনিগমের ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত।

Village without electricity: আসানসোলের পাশেই বিদ্যুৎবিহীন গ্রামে শিক্ষার আলো জ্বালাচ্ছেন ‘রাস্তার মাস্টার’
জামডোবা গ্রামে এ ভাবেই চলছে পড়াশোনা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 15, 2022 | 1:49 PM

আসানসোল:  সন্ধ্যা নামলেই আঁধারে ডুব দেয় গোটা গ্রাম। বিদ্যুৎবিহীন গ্রামে অন্ধকার নেমে আসতেই শোনা যায় ঝিঁঝি পোকার ডাক আর রাতের পথ কুকুরের চিৎকার। সে সবকে ছাপিয়েও কানে আসে শিশুদের নামতা বা ছড়ার আওয়াজ। বিদ্যুৎহীন গ্রামে ওই শিক্ষার আলো জ্বেলে রেখেছে ডিবরি বাতি। সেই ডিবরি বাতি জ্বেলেই পড়াশোনা করে গ্রামের কচিকাঁচারা। লকডাউনে স্কুল বন্ধ হওয়ার পর অনলাইনে পড়াশোনার উপায় ছিল না এলাকার পড়ুয়াদের। সে সময় থেকে এক শিক্ষক নিজের উদ্যোগেই পড়ুয়াদের নিয়ে শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন এক শিক্ষক।

আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার অন্তর্গত নামো জামডোবা গ্রাম। ২০২২ সালেও এই গ্রামে পৌঁছয়নি বিদ্যুৎ। যদি তা আসানসোল পুরনিগমের ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। সেই গ্রামে নেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ও। তিন কিলোমিটার দূরে পাশের গ্রামের স্কুলে পড়তে যেতে হয় পড়ুয়াদের। গ্রামে বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোনও নেই। তাই অনলাইন শিক্ষার সুযোগও নেই। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার পরিকাঠানো থেকে বহুযোজন দূরে রয়েছে আসানসোলের কাছে আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রাম।

এই গ্রামে সরকারের পরিষেবা না পর্যাপ্ত ভাবে না পৌঁছলেও ‘দুয়ারে শিক্ষা’ পৌঁছে দিচ্ছেন ‘রাস্তার মাস্টার’ দীপনারায়ণ নায়েক। জামুরিয়া তিলকা মুরমু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই শিক্ষক কোভিড লকডাউনে এগিয়ে এসেছিলেন একালার পড়ুয়াদের পাশে। স্কুল বন্ধের সময় পিছিয়ে পড়া গ্রামের পড়ুয়াদের রাস্তায় বা খোলা আকাশের নীচে পড়াশুনা করিয়েছিলেন। অনলাইন পঠন-পাঠনের সুযোগ যাদের ছিল না, তাদের শিক্ষা দিতেই নিজের উদ্যোগেই খোলা আকাশের নীচে স্কুল তৈরি করেছিলেন। তখন থেকেই শুরু ‘দুয়ারে শিক্ষা’ পরিষেবা। করোনা চোঙরাঙানি অনেকটাই কমে গিয়েছে। স্কুলের পঠনপাঠনও এখন স্বাভাবিকের পথে। কিন্তু যে গ্রামে এখনও স্কুল নেই। নেই শিক্ষার ন্যূনতম পরিকাঠামো। বিদ্যুৎ নেই। সেই গ্রামে তিনি এখনও শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। রাস্তার দু’পাশে মাটির বাড়ি আর সেখানে রয়েছে দাওয়া। সেখানেই দেওয়ালে দেওয়ালে ব্ল্যাকবোর্ড তৈরি করে চলছে পঠন পাঠন। তার সঙ্গে রয়েছে টিফিনের ব্যবস্থা। ঠিক যেমনটা স্কুলের মিড ডে মিলের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। এ ভাবেই পড়াশোনা চালাচ্ছেন আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামের ছেলে-মেয়েরা।

এ তো গেল শিক্ষার কথা। নামো জামডোবা গ্রামে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। ওই গ্রামে প্রায় ৩৫০ জনের বাস। সেই গ্রামে ঢোকার রাস্তা এখনও বেহাল। পানীয় জলেরও সমস্যা রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে স্বাধীনতার এত বছর পরেও গ্রাম কেন এত অনুন্নয়নের শিকার এই গ্রাম? উঠছে প্রশ্ন। গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছে তাঁদের দুর্দশার কথা। বিদ্যুৎবিহীন গ্রামে যাবতীয় সমস্যার থেকে মুক্তির দাবিও জানিয়েছেন তারা। সাংসদ থাকাকালীন বাবুল সুপ্রিয় এই গ্রামে সোলার স্ট্রিট লাইটের ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা এখন বিকল। গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি পড়েছে কিন্তু বিদ্যুৎ কবে আসবে তা জানা নেই। গ্রাম অন্ধকারে ডুবে থাকলেও রাস্তার মাস্টারের সৌজন্যে শিক্ষার আলো জ্বলজ্বল করছে এই গ্রামে।