Road Accident: প্রথমে মেয়েটিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হল, তারপরই নীল শার্ট, সাদা প্যান্ট পরা লোকটাকে… তুমুল হইচই, রাস্তা যেন লোকারণ্য
Asansol: তিনজনকেই আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু জরুরি বিভাগেই বাবা ও মেয়েকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
পশ্চিম বর্ধমান: মৃত্যু যে এতটা মর্মান্তিক হতে পারে, ভাবতেই পারছে না পরিবার। স্ত্রী, মেয়েকে নিয়ে বাইকে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। আচমকাই বাইকের টাল সামলাতে না পেরে উল্টে পড়ে যান রাস্তায়। সেই সময় একটি তেলের ট্যাঙ্কার আসছিল। রাস্তায় পড়ে থাকা তিনজনকে পিষে দিয়ে চলে যায় সেটি। তিনজনকেই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে বাবা ও মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। ওই মহিলার অবস্থা আশঙ্কাজনক। শনিবার আসানসোল ২ নম্বর জাতীয় সড়কে এই ঘটনা ঘটে। নিহতদের নাম দীপক চট্টোপাধ্যায় (৫৩) ও দোয়েল চট্টোপাধ্যায় (১৮)। আহত দোলা চট্টোপাধ্যায় (৫০) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শনিবার ঘটনাটি ঘটে আসানসোল উত্তর থানার জুবিলি মোড়ের অদূরে পলাশডিহার কাছে।
এই পরিবার পুরুলিয়ার নিতুরিয়া থানার হিজুলি গ্রামের বাসিন্দা। পুরুলিয়ায় রেলের ঠিকাদার হিসাবে কাজ করতেন দীপকবাবু। মেয়ে দোয়েল এ বছরই পুরুলিয়ার পারবেলিয়া হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। এদিন পুরুলিয়া থেকে তাঁরা আসানসোলের জামুড়িয়া থানার চাঁদায় যাচ্ছিলেন। সেখানেই দোয়েলের মামার বাড়ি। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার সময় দীপক চট্টোপাধ্যায়ের মাথায় হেলমেট থাকলেও মাথা খালি ছিল দোলাদেবী ও দোয়েলের।
পলাশডিহায় হঠাৎই টাল সামলাতে না পেরে দীপকবাবুর মোটরবাইকটি উল্টে যায়। তিনজনই মোটরবাইক নিয়ে রাস্তায় পড়ে যান। হঠাৎই পাশ দিয়ে একটি বড় তেলের ট্যাঙ্কার যাচ্ছিল। সেটি তাঁদের কার্যত উপর দিয়েই চলে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ছুটে আসে আসানসোল উত্তর থানার ট্রাফিক গার্ডের পুলিশ। দোলনের পরণে ছিল জিন্স, টপ। উপুড় রয়ে রাস্তায় পড়েছিলেন তিনি। পাশেই চিৎ হয়ে শুয়ে বাবা। নীল শার্ট, সাদা প্যান্ট। পায়ে জুতোজোড়া ততক্ষণে ছিটকে গিয়েছে বহদূর। দোলাদেবীও রাস্তায় পড়ে, পোশাক রক্তে ভেজা। পুলিশ এসে দেহগুলি তুলে নিয়ে রাস্তার ধারে শোওয়ায়। মাঝরাস্তা তখন রক্তে ভাসছে।
তিনজনকেই আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু জরুরি বিভাগেই বাবা ও মেয়েকে মৃত ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে আহত দোলাদেবীকে ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় ঘণ্টাখানেকের মধ্যে একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই এলাকায় যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাফিক ব্যবস্থা বলে কিছুই নেই। সবসময়ই গাড়ি বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। পথযাত্রীদের চলাফেরা কার্যত প্রাণ হাতে নিয়েই করতে হয়। প্রায়ই দুর্ঘটনাও ঘটে। পুলিশ সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।