Ghatal Flood: ‘চোখের সামনে জলের তোড়ে ভেসে গেল বাবা’, মৃতদেহ নিয়ে যেতে খুঁজতে হল নৌকা

Death in flood: বিশ্বকর্মা পূজো সেরে বাবা-ছেলে বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার সময় বন্যার জলে মৃত্যু হল পুরোহিত বাবার। চোখের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হল ছেলেকে।

Ghatal Flood: 'চোখের সামনে জলের তোড়ে ভেসে গেল বাবা', মৃতদেহ নিয়ে যেতে খুঁজতে হল নৌকা
চন্দ্রকোণায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 18, 2021 | 7:40 AM

ঘাটাল: বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে ঘাটালে (Ghatal)। কার্যত জলের তলায় গোটা এলাকা। আর সেই ভয়ঙ্কর বন্যার (Flood) বলি হলেন এক ব্যক্তি। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের বন্য নতুন নয়। একটি বেশি বৃষ্টি হলেই বেড়ে যায় জলস্তর। আর সেখানেই জলের তোড়ে তলিয়ে গেলেন এক ব্যক্তি। ছেলে সামনে দাঁড়িয়েও থাকলেও কিছু করতে পারলেন না। কিছু বুঝে ওঠার আগে তলিয়ে গেলেন বাবা। এমনকি মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে যেতেও বেশ কষ্ট করতে হল পরিবারকে। জল এত বেশি জলে রয়েছে যে মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছিল। কোনোরকমে নৌকা জোগাড় করে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।

বিশ্বকর্মা পূজো সেরে বাবা-ছেলে বাড়ি ফিরছিলেন শুক্রবার। ফেরার সময় বন্যার জলে মৃত্যু হল পুরোহিত বাবার। আর বাবার মৃত্যু চোখের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হল ছেলেকে। এমনই জানালেন মৃতের ছেলে।

শুক্রবার দিলীপ হড় ও তাঁর ছেলে রাজকুমার হড় বিশ্বকর্মা পুজো করতে গিয়েছিলেন। তাঁরা ঘাটাল পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের গড়প্রতাপ নগরের বাসিন্দা। সকালে বন্যার জল কিছুটা কম থাকার কারণে বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে রাজকুমার ঘাটাল ইলেকট্রিক অফিসে বিশ্বকর্মা পুজো করতে যান। আর ফেরার সময়ই ঘটে এই বিপত্তি।

পুজো শেষে বিকেলে পাঁচটা নাগাদ বাবাকে নিয়ে যখন বাড়ি ফিরছিলেন রাজকুমার, তখন বাড়ির রাস্তায় বেড়েছে জল। রীতিমতো বইছে স্রোত। আর তাতেই তলিয়ে গেল দিলীপ হড়। ছেলের চিৎকার-চেঁচামেচিতে স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত পৌঁছে দিলীপকে উদ্ধার করলেও প্রাণে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এমনকি উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যেতেও পোহাতে হল অনেক সমস্যা।

চার পাশে জল এক মানুষ সমান। জলের মধ্যে কী করে নিয়ে যাওয়া হবে, কেউ বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তারপরে রাত এগারোটা নাগাদ নৌকো খোঁজাখুঁজি করে জল পেরিয়ে ঘাটাল থানার পুলিশের সহযোগিতায় দিলীপকে ঘাটাল হাসপাতালে নিয়ে আশা হয়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

আরও পড়ুন: COVID Vaccination: প্রতি সেকেন্ডে ৮০০ টিকা! চিনকে হারিয়ে কীভাবে টিকাকরণে বিশ্বরেকর্ড গড়ল ভারত?

মৃতের ছেলে রাজকুমার হড় জানান, বাবা আর মায়ের সঙ্গে পুজো সেরে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি বাবা-মা প্রায় পাশাপাশি ছিলাম, প্রত্যেকে প্রত্যেকের দূরত্ব ছিল এক হাতের। কিন্তু বাঁধের রাস্তায় এতো স্রোত যে কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাবা স্রোতে তলিয়ে যায়।’ স্থানীয়রা জানায় বন্যার পরিস্থিতি ভয়াবহ, মৃতদেহ হাসপাতলে আনতেও প্রচুর বেগ পেতে হয়েছে, নৌকো ভাড়া করে মৃতদেহ নিয়ে আসতে হয়েছে হাসপাতালে।

আরও পড়ুন: Jalpaiguri District Hospital: গায়েব পিকুর চাবি, অগত্যা তালা ভেঙে ঢুকলেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা

বৃহস্পতিবারই ঘাটালে কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙেছে ৬ নম্বর চাইলকুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামকিশোরপুর এলাকায়। বেশ কয়েক ফুট নদী বাঁধ ভেঙে পরপর বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবনের আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন। ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চত্বরে জল জমে দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীর আত্মীয়-সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল থাকায় বৃষ্টি হলেই সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চত্বরে জমে হাঁটু সমান জল। দূর্ভোগে পড়তে হয় রোগীর আত্মীয় সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের।