কোথাও ভেঙেছে বাঁধ, কোথাও ব্রিজ! তিনদিনের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত বাংলার বিস্তীর্ণ অংশ
Flood in Bengal: আজই পশ্চিম মেদিনীপুরের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র (Soumen Mahapatra)।
পশ্চিম মেদিনীপুর: বৃষ্টি ও নদী বাঁধ ভাঙনের ফলে বিপাকে পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রশাসন নিষ্ক্রিয় বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষের। নতুন করে উপকূলের জেলায় বাড়তি চাপ বাড়ল বলেই মনে করছে প্রশাসনিক কর্তারা। কাঁথি, এগরা, তমলুক ও হলদিয়া মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় চরম জল যন্ত্রনার শিকার মানুষ। একই ছবি পশ্চিম মেদিনীপুর ও বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ অংশে। নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় হাওড়া, হুগলিত একাংশ বন্যায় ভেসে গিয়েছে।
কেলেঘাই নদীর জল সোজা পূর্ব দিকে মংলামাড়ো, বড়হাটের ওপর দিয়ে ইটাবেড়িয়া খালের ওপর দিয়ে এগিয়ে গিয়েছে। আতঙ্কে প্রহর গুনছে এলাকাবাসী। ভাঙনের ভ্রূকুটি ২০০৮ সালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির স্মৃতিকে উস্কে দিচ্ছে। কেলেঘাই ও বাঘুই নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে। পটাশপুর-ডেবরা প্রভৃতি এলাকায় রাস্তা জলের তলায়। মানুষ প্রাণে বাঁচার তাগিদে পরিবার পরিজনকে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করছেন। এ দিকে সরকারি ভাবে বন্যা পরিস্থিতির ঘোষণা না হওয়ায় প্রশাসনের তরফে কিছু করা যাচ্ছে না প্রশাসনের তরফে। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ২০০০-এর বেশি মানুষ উদ্ধার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, গালুডি জলাধার থেকে ২ লক্ষ ১০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ায় জলস্তর বেড়েছে সুবর্ণরেখায়। বৃহস্পতিবারই সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী এলাকা পরিদর্শন করেন গোপীবল্লভপুর ১ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক দেবজ্যোতি পাত্র। গালুডি জলাধার থেকে যে জল ছাড়া হয়েছে সেই জল। রাতে গোপীবল্লবপুর সুবর্ণরেখা এলাকায় পৌঁছে যাবে সেই জল। সাধারণ মানুষকে নদী তীরবর্তী এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে আশ্রয়ের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে, দেওয়া হচ্ছে শুকনো খাবার।
এ দিনই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পশ্চিম মেদিনীপুরে যান সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তিনি জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে বিস্তারিত রিপোর্ট দেবেন তিনি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা, সবং-এর জলমগ্ন এলাকা জলমগ্ন। এ দিন এলাকা পরিদর্শন করে আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠকও করেন মন্ত্রী। তিনদিনের বৃষ্টিতে সবংয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। কেলেঘাই ও কপালেশ্বরী নদীর বাঁধও ভেঙেছে। মন্ত্রী বলেন, ‘এলাকা ঘুরে গিয়ে আমি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেব। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা ত্রান পাঠিয়েছি। যা যা করনীয় আমরা করব।
বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লকেও একই ছবি। সদর জয়পুর যাওয়ার একমাত্র রাস্তায় খালের ওপর একটি ব্রিজের দুই পাশ বৃষ্টির জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রায় ২০ বছর আগে তৈরি হয়েছিল এই সেতু। তারপর থেকেই কোনরকম রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসীরা। চার বছর আগে ভগ্নপ্রায় সেতুটি এলাকার মানুষ নিজেরাই হাত লাগিয়ে বালির বস্তা দিয়ে কিছুটা হলেও মেরামতি চেষ্টা করে। তবে এই দু-দিনের একের পর এক বৃষ্টির জলে ভেসে যায় ব্রিজের সংযোগস্থল দুই দিকের রাস্তা। চরম দুর্ভোগের শিকার গ্রামবাসীরা।
আরও পড়ুন: ‘অজানা জ্বরে কারও মৃত্যু হয়নি’, দাবি স্বাস্থ্য সচিবের