Ketugram crime: নার্সের চাকরিতে যাতে যোগ না দেয় স্ত্রী, সেই কারণে হাত কেটে ব্যাগে ভরে চম্পট মহম্মদ শেখের
Ketugram: ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে। জখম গৃহবধূর নাম রেণু খাতুন। অভিযুক্ত স্বামী শের মহম্মদ শেখ। দু'জনই কেতু গ্রামের বাসিন্দা।
কেতুগ্রাম (পূর্ব বর্ধমান): ছোট থেকেই ভাল পড়াশোনায়। স্বপ্ন ছিল নার্স হওয়ার। সেই স্বপ্ন পূরণও হয়েছিল। কিন্তু স্ত্রী-র সাফল্য সহ্য হয়নি স্বামীর। ভাল চাকরি পেয়ে যদি ছেড়ে যান স্ত্রী? নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকেন। আর তারপরই শিউরে ওঠার মতো সিদ্ধান্ত। নার্সের চাকরিতে যাতে স্ত্রী যোগদান করতে না পারে সেই কারণে ধারাল অস্ত্র দিয়ে ডান হাতের কবজি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। এখানেই শেষ নয়, সেই কাটা হাতটি নিয়ে ব্যাগে ভরে চম্পট দিল স্বামী।
ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে। জখম গৃহবধূর নাম রেণু খাতুন। অভিযুক্ত স্বামী শের মহম্মদ শেখ। দু’জনই কেতু গ্রামের বাসিন্দা। রেণুর পরিবারের দাবি, ছোট থেকেই পড়াশোনায় মেধাবি ছিলেন তিনি। গরিব ঘর থেকে অনেক অভাব-অনটনের মধ্যে দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যান তিনি। যথাসাধ্য সহযোগিতা করেন তাঁর বাবাও। রেণু দেবীর স্বপ্ন ছিল নার্স হওয়ার।
সেই মতোই বেসরকারি জায়গা থেকে নার্সিং কোর্স করেন। তারপর দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নার্সের কাজও করতেন। ওইখানেই কাজের সুবাদে শের মহম্মদের সঙ্গে আলাপ হয় রেণুর। সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমে খাবার দেওয়ার কাজ করত শের। তাঁদের সম্পর্ক গড়ায় প্রণয়ে। পরে দুই বাড়ির সম্মতিতে ২০১৭ সালে বিয়ে হয় দু’জনের।
বিয়ের পর আরজিকর থেকে নার্সিং কোর্স করেন রেণু। চাকরির প্যানেলেও নাম আসে তাঁর। গতমাসে ২৮ তারিখে তাঁর ভেরিফিকেশনের ডেট ছিল। তবে বিষয়টি ভালভাবে মেনে নিতে পারেনি তাঁর স্বামী। যখন থেকে সরকারি চাকরিতে স্ত্রীর নাম আসে তখন থেকে বাড়িতে অশান্তি শুরু করে শের। এমনটাই অভিযোগ। একাধিকবার বাধাও দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, শের-এর বন্ধুরা তাকে বোঝাতে থাকে স্ত্রী যদি সাবলম্বী হন তাহলে তাকে ছেড়ে চলে যেতে পারেন। এই রকমই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকে সে। কিন্তু রেণু নিজের চাকরির ব্যাপারে ছিলেন অনড়।এরপর চলতি মাসের ৪ তারিখ রাত্রিবেলা শের মহম্মদ ও তার বন্ধুরা মিলে পিকনিক করে। পিকনিক শেষে অভিযোগ, দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমন্ত রেণুর মুখে বালিশ চাপা দেয় সে। তারপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে হাতে কোপ মারে। এরপর হাতটি কেটে মাটিতে পড়ে যায়। এখানেই শেষ নয়, সেই কাটা হাত ব্যাগে ঢুকিয়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত স্বামী ও তার দলবল। পালিয়ে গিয়েছে শের-এর বাবা-মাও।
অন্যদিকে, মহিলার চিৎকারে জড়ো হয় এলাকাবাসী। খবর দেওয়া হয় রেণুর বাপের বাড়িতে। পরিবারের সদস্যরা এসে নার্সিংহোমে তাঁকে ভর্তি করেন। বর্তমানে ওই মহিলার পরিবারের তরফে কেতুগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই বিষয়ে রেণুদেবীর ভাই বলেন,’আমার দিদি আরজিকর থেকে নার্সিং-এ চান্স পায়। কিন্তু ওর স্বামী চাকরি করতে দেবে না বলে ওর হাত কেটে নিয়েছে। থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। কড়া শাস্তি চাই ওদের।’