কাটোয়া: বাড়ির দরজায় হাজির সরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা। অভিভাবকদের ডেকে বোঝাচ্ছেন, সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করান। ভরসা জুগিয়ে বলছেন, ‘এখন পড়াশোনা ঠিকমতো হচ্ছে। আপনারা স্কুলে পাঠান।’ স্কুলে ক্লাস না নিয়ে এভাবে বাড়ি একজন শিক্ষককে বাড়ি বাড়ি ঘুরতে হচ্ছে! কার্যত নজিরবিহীন দৃশ্য বর্ধমানের কাটোয়ায়।
নতুন শিক্ষাবর্ষে স্কুলে নতুন পড়ুয়াদের দেখা নেই। নতুন করে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা খুবই কম। প্রাক প্রাথমিক বা প্রথম শ্রেণিতে নতুন পড়ুয়াদের ভর্তির সংখ্যা তলানিতে ঠেকেছে। তাই বাধ্য হয়েই স্কুল থেকে বেরিয়ে গ্রামবাসীদের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। জোর কদমে চলছে অভিভাবকদের বোঝানোর কাজ। সেই সঙ্গে বোঝানো হচ্ছে সরকারি স্কুলে ভর্তি হলে কী কী সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে। ইউনিফর্ম থেকে বই, সবটাই বিনামূল্যে দেওয়া হবে, সেটাও বোঝাচ্ছেন শিক্ষকরা।
কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের হরিপুর মাঝিপাড়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এভাবেই দেখা গেল গ্রামের রাস্তায়। বতর্মানে স্কুলটিতে চর্তুথ শ্রেণি পর্যন্ত সব মিলিয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ৩১। নতুন শিক্ষাবর্ষে ছাত্র ভর্তির আবেদন প্রায় নেই। তা নিয়েই চিন্তিত স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা।
যাদের বাড়িতে পাঁচ বছর বয়সী সন্তান আছে, সেই সব বাড়ি খুঁজে খুঁজে পৌঁছে যাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক কৌশিক দে ও শিক্ষিকা মামনি খরোট মণ্ডল। এলাকার বাড়ি বাড়ি আবেদন নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন তাঁরা। কোনও কোনও অভিভাবক ভর্তি করাতে রাজি হলেও, আপত্তি জানাচ্ছেন অনেকেই। প্রধান শিক্ষক কৌশিক দে জানান, মাস কয়েক আগে কাজে যোগ দিয়েছেন তিনি। তিনি চান, স্কুলের অস্তিত্ব টিকিটে রাখতে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। তাই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন তাঁরা।