Abu Taher Nandigram: ‘দলীয় অন্তর্ঘাতই নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয়ের কারণ’, নাম উল্লেখ করে বিস্ফোরক আবু তাহের

Abu Taher: শুরু থেকেই পরাজয়ের পিছনে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে এসেছিল তৃণমূল। ফলাফল অমীমাংসিত জানিয়ে হাইকোর্টে মামলাও করে তারা। এখনও বিচারাধীন সেই মামলা।

Abu Taher Nandigram: 'দলীয় অন্তর্ঘাতই নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয়ের কারণ', নাম উল্লেখ করে বিস্ফোরক আবু তাহের
বিস্ফোরক আবু তাহের (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 14, 2022 | 12:03 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: দলে অন্তর্ঘাতের জন্যই নন্দীগ্রামে বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়েছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।  এবার এমনটাই দাবি করলেন নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও নন্দীগ্রাম দুই পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আবু তাহের। তাঁর দাবি, পরাজয়ের পিছনে অন্যান্য কারণের পাশাপাশি দলীয় অন্তর্ঘাতও কাজ করেছে।

প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় নেতৃত্ব এই কেন্দ্রে জয় নিশ্চিত ধরে রেখেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন ঘটে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। প্রথমে কমিশনের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ী। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এলাকায়। তারপর ফের কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয় জয়ী শুভেন্দু অধিকারী। কমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়েও দেখা যায়, বেলা ১২টার পর থেকে ওই কেন্দ্রে তালিকা আপডেটই হয়নি।

শুরু থেকেই পরাজয়ের পিছনে বিজেপি-র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে এসেছিল তৃণমূল। ফলাফল অমীমাংসিত জানিয়ে হাইকোর্টে মামলাও করে তারা। এখনও বিচারাধীন সেই মামলা। তবে সূত্রের খবর, দলীয় অন্তর্ঘাতও যে পরাজয়ের অন্যতম কারণ, তা কানাঘুষো করছিলেন স্থানীয় নেতৃত্বরা। কারা জড়িত সেই অন্তর্ঘাতে, সেই প্রশ্ন উঠেছে বারংবার। এত দিন দলীয় স্তরে চলছিল তার পর্যালোচনা। একদা শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ আবু তাহের অন্তর্ঘাতে জড়িত বলে উচ্চ নেতৃত্বের কাছে নালিশ করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

তাতেই বেজায় চটেন তাহের। বৃহস্পতিবারের দাউদপুর অঞ্চল তৃণমূলের সম্মেলন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি সভায় গিয়ে রীতিমতো ভোটের হিসেবে পেশ করে পাল্টা স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতে যুক্ত থাকার অভিযোগ তোলেন তিনি। নন্দীগ্রাম ১ব্লক সভাপতি স্বদেশ দাস থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান, প্রত্যেকেই অন্তর্ঘাতে শামিল বলে দাবি করেন তিনি।

আবু তাহের বলেছেন, “আমার বুথ নেত্রীকে ৬২২ ভোট লিড দিয়েছে। কিন্তু স্বদেশবাবুকে তাঁর বুথে লিড কত জিজ্ঞাসা করলে তাঁর মুখ নীচু হয়ে যাবে। আমি সভাপতি হলে পদত্যাগ করতাম। ব্যর্থতা স্বীকার করে নিতাম। এত বড় নির্লজ্জ আমি দেখিনি। আর বিধানসভার কো-অর্ডিনেটর ছিলেন সুফিয়ান সাহেব। কেন আমরা হারলাম? রাজ্য এবং স্থানীয় কমিটিকে নিয়ে বসা উচিত ছিল তাঁর। আমরা কলকাতায় গিয়ে নেত্রীর পরাজয়ের কারণ অনুসন্ধানের দাবি জানিয়ে ছিলাম রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। কিন্তু ওঁরা তো সেই দাবি জানাননি। তারপরও নিজেদের ব্যর্থতার দায় অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে!” তাহেরের অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে নোংরা খেলা খেলেছে দলের একাংশ। তাঁর সম্পর্কে মিথ্যা অপপ্রচার ও কুৎসা করা হয়েছে উচ্চ নেতৃত্বের কাছে।

“তাহেরের দাবির প্রসঙ্গে অবশ্য মন্তব্য এড়িয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র কুকড়াটিতে গঙ্গাসাগর মেলার পরিষেবাকেন্দ্রের পরিদর্শনে এসে এ প্রসঙ্গে বলেন, “আবু তাহের কীভাবে এর বিশ্লেষণ করেছেন সেটা তাঁর ব্যাপার। তিনি কী প্রমান পেয়েছেন, তার ওপর ভিত্তি করে বলছেন, সেটা ব্যাপার। এ বিষয়ে আমি বিশেষ মন্তব্য করব না, কারণ, আমি তখন ওই স্থানে ছিলাম না। আর আমি এও জানিনা সেখানকার পরিস্থিতি কী ছিল।” তাঁর বক্তব্যের সত্যতা তিনিই দিতে প্রমাণ করতে পারবেন।

আরও পড়ুন: Bikaner-Guwahati Express Train Accident: ‘মানুষের প্রাণ নিয়ে ছেলেখেলা…সিবিআই তদন্ত হোক’